পেকুয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের পেকুয়ায় স্বামী হারা বৃদ্ধা স্ত্রী লায়লা বেগম। ৫ ছেলে ৩ মেয়ের বৃদ্ধা এ জননী স্বামী আবু তাহের মারা যাওয়ার পর সন্তানদের মানুষ করতে বহু কষ্ট করেছেন। স্বামী থাকা অবস্থায় তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। তিন ছেলেকে বিয়ে করিয়েছেন। অপর এক ছেলে নিজ ইচ্ছায় বিয়ে করলেও ছোট ছেলে এখনো অবিবাহিত অবস্থায় আছে।

স্বামী হারা এ জননী নিজের সুঃখের কথা না ভেবে স্বামীর স্মৃতির জন্য সুঃখ দুঃখের ভাগিদার হয়ে স্বামীর ভিটায় থেকে যান। বহু কষ্টে জমানো টাকা জমা রাখেন ছেলে মাঈন উদ্দিনের কাছে। কারণ এ ছেলেটি পেকুয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্মচারী হিসাবে মাকে দেখাশুনার কথা দিয়েছিলেন।কিন্তু তিনিই জমানো সব টাকা মায়ের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে ঘর থেকে বের করে দিলেন। বড় ছেলে আবদুল লতিফ মিয়া নেশাগ্রস্ত হয়ে মাকে বকাঝকা করেছেন আর মারধর করেছেন। তারপরও সহ্য করে গেছেন। তারপরও কখনো কোন অভিযোগ ছিলনা। জয়নাল আবদীন নামে এক ছেলে মাকে সব সময় বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার জন্য চাপসৃষ্টি করলেও স্বামী ভিটা ছাড়া কোথাও যাবেননা তিনি।

তার মধ্যে আলাউদ্দিন আলো নামে এক ছেলে নিজ ব্যবসার কারণে চকরিয়ার বদরখালীতে অবস্থান করলেও মায়ের ভরণপোষণ ঠিকমত দেয়া ও খবরাখবর সব সময় রাখায় তার প্রতি কোন অভিযোগ নাই মায়ের। ছোট ছেলে আজম উদ্দিন বর্তমানে শিক্ষার্থী হলেও মায়ের দেখাশুনা করে থাকেন।

এই শত দুঃখ আর কষ্ট সহ্য করে স্বামীর ভিটায় থাকার চেষ্টা করলেও ২৭ আগষ্ট (শুক্রবার) দুপুর ১২ টার দিকে তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন তিন সন্তান লতিফ, মাঈন ও জয়নাল।

এ ঘটনায় বিকেলে তিন সন্তানের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন হতভাগী মা লায়লা বেগম।
উপজেলার সদর ইউপির উত্তর পূর্ব গোঁয়াখালী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত লায়না বেগম (৬৫) একই এলাকার মৃত আবু তাহেরের স্ত্রী।

অসহায় লায়লা বেগম বলেন, ছেলে মঈন উদ্দিনের কাছে আমি ১ লক্ষ ৫১ হাজার টাকা জমা রাখি। পরবর্তীতে টাকা গুলো ফেরত চাইলে বসতভিটা থেকে আমাকে উচ্ছেদ করতে নানা সময় গালিগালাজ করে। এক পর্যায়ে আজ দুপুরে ছেলে লতিফ ও মাঈন উদ্দিন আমাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন।

সে আমার ছোট ছেলে আজম কে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে নির্দেশ দেয়। না হয় প্রকাশ্যে প্রাণে হত্যার হুমকি দেয়।

এমনকি তারা আমার কাছে থাকা ভোটার আইডি কার্ড বয়স্ক ভাতার কার্ড সহ যাবতীয় কাগজ পত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

পরে অপর ছেলে আলাউদ্দিন স্থানীয়দের সহায়তায় আমাকে উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। আমি এই সন্তানের বিচার চাই।

এ বিষয়ে পেকুয়া থানার ওসি মোঃ সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, মায়ের উপর নির্যাতনকারী ছেলের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।