শাহেদুল ইসলাম মনির,কুতুবদিয়া:

কুতুবদিয়ার শিক্ষার্থীরা হারিয়ে যাচ্ছে বইয়ের জগত থেকে। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে সারাদেশে ন্যায় কুতুবদিয়া উপজেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।

ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেনীভিত্তিক পাঠদান না থাকায় বইয়ের জগত থেকে হারিয়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। উপজেলা শিক্ষা অফিসের নির্দেশনায় কুতুবদিয়া অনলাইন পাঠদানের ব্যবস্থা করলেও ছাত্র ছাত্রীদের আগ্রহ নেই । তবে, অনলাইন পাঠদানের দোহাই দিয়ে অভিভাবকের কাছ থেকে স্মার্টফোন নিয়ে ভিডিও গেমে আসক্ত হচ্ছেন সন্তানেরা। শ্রেনীকক্ষে সরাসরি পাঠদান না থাকায় দূরত্ব বাড়ছে বলে জানান শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, প্রথম প্রথম একটু আগ্রহ ছিল, এখন অনলাইনে পড়াশোনায় মন বসেনা। অ্যাসাইনমেন্ট থাকলে দেখে  লিখে খাতাগুলো স্কুলে জমা দিচ্ছি। তাতে আমাদের মেধা বিকশিত হচ্ছে না। অতীতে যা শিখেছি  তাও সম্পূর্ন ভুলে যাচ্ছি। তা ছাড়া  অনলাইন পাঠদানের সুবিধা দ্বীপের শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত নয় ।

অভিভাবক নাছির উদ্দীন জানান, সীমিত পরিসরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া যেতো। একেক শ্রেনীর পাঠদান একেক দিন নেয়া যেত। যেহেতু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও কোন শিক্ষার্থী ঘরে বসে নেই। এরা রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে, বাজারে যাচ্ছে, মাঠে ক্রিকেট-ফুটবল খেলছে। কতক্ষণ ঘরে বেধে রাখা যায় । সব কিছু চললেও শুধু বইয়ের জগত থেকে হারিয়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

অনলাইন পাঠদানে কুতুবদিয়ার শিক্ষার্থীরা খুববেশী উপকৃত হচ্ছে তা মনে করিনা , এমন মন্তব্য করেছেন কুতুবদিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক জহিরুল ইসলাম। তিনি জানান, দ্বীপের সব শিক্ষার্থীও এই সুবিধা পাচ্ছে না। অনেক পরিবারেই সন্তানদের স্মার্ট ফোন কিনে দেয়ার সক্ষমতা নেই। আবার অভিভাবকদের অসচেতনতার কারণে অনেক ছেলে মেয়ে স্মার্টফোন সেটে ভিডিও গেমেই আসক্ত হচ্ছে। প্রাতিষ্ঠানিক পাঠদান থেকে বিরত থাকায় অনেক শিক্ষার্থী নানা রকম অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রজব আলী জানান, শিক্ষার্থীরা অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিচ্ছে। কোন কোন স্কুলে কিছু শিক্ষার্থী এসা্ইনমেন্ট জমা দিচ্ছে না। যারা দিচ্ছে না তাদের খোঁজ নিয়ে দেখতে পেলাম তারা পারিবারিক সমস্যার কারণে বিভিন্ন পেশার সাথে জড়িত হয়ে গেছে।

সুতরাং বইয়ের জগত থেকে শিক্ষার্থীরা যাতে হারিয়ে না যায় তার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে হলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া দরকার। এক্ষেত্রে অভিভাবক ও শিক্ষকদের সচেতনভাবে দায়িত্ব নিতে হবে বলে এলাকার সচেতন ব্যক্তিরা মনে করেন।