প্রথম মৃত্যূ বার্ষিকীর আলোচনা সভা ও বিশেষ প্রার্থনায় রানা দাশগুপ্ত

‘বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় গড়ার ক্ষেত্রে সিআর দত্তের ভূমিকা চির স্মরণীয়’

প্রকাশ: ২৫ আগস্ট, ২০২১ ১২:০০ , আপডেট: ২৫ আগস্ট, ২০২১ ১২:২৩

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :

মুক্তিযুদ্ধকালীন ৪ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার ও বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) চিত্ত রঞ্জন দত্ত বীর উত্তম এর প্রথম মৃত্যূ বার্ষিকী স্মরণে কক্সবাজারে আলোচনা সভা ও বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

২৪শে আগস্ট মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় কক্সবাজার শহরের সার্বজনিন স্বরসতী বাড়ি প্রাঙ্গণে জেলা শাখার সভাপতি এ্যাডভোকেট দীপংকর বড়ুয়া পিন্টুর এ সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক প্রিয়তোষ শর্মা চন্দনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত ।বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি এ্যাডভোকেট রনজিত দাশ। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে সামাজিক দূরত্ব মেনেই এই আলোচনা সভা ও বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে রানা দাশগুপ্ত বলেন, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বীর উত্তম সি আর দত্তের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। সি আর দত্ত একজন মুক্তিযোদ্ধাই ছিলেন না, মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক ছিলেন। দেশের যেকোনো ক্রান্তিকালে জাতিকে সঠিক পথ নির্দেশক হিসেবে সবসময় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, দায়িত্ব পালন করেছেন।তার সাহসী ভূমিকাএবং তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্ব মহান মুক্তিযুদ্ধে তার অনন্য অবদান দেশ ও জাতি চিরদিন কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে। এ স্বাধীন বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক চেতনার গড়ার ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর যে স্বপ্ন, সে ক্ষেত্রে তার (সি আর দত্ত) অনন্য ভূমিকার কথা জাতি চিরদিন স্মরণ রাখবে।

তিনি আরও বলেন,সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে সি আর দত্তের মতো বাংলার সূর্য সন্তানরা জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিলেন। কিন্তু পঁচাত্তর পরবর্তী অসাংবিধানিক সরকারগুলো রাষ্ট্রকে মুক্তিযুদ্ধের সেই অঙ্গীকার পূরণের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিল। এদেশে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী যখন থেকে খুব বেশি অসহায় ও বিপন্ন বোধ করতে শুরু করল তখন এই বীর সকল সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে গিয়ে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন এবং তাঁদের অধিকার ও নিরাপত্তার জন্য লড়াই করেছিলেন।

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারতের বিভক্তির পর একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী সামরিক অফিসার হিসেবে তিনি ভারতের নাগরিকত্ব নিতে পারতেন অনায়াসে। কিন্তু সি আর দত্ত তার জন্মভূমি পূর্ববঙ্গ এবং সিলেটকে ভালোবেসেছিলেন অন্তর থেকে। অতএব দেশান্তরিত হওয়ার কথা ভাবেননি কখনও। বরং ১৯৬৫ সালের পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধে পাকিস্তানের হয়ে লড়াই করেছেন পশ্চিম রণাঙ্গনে এবং ১৯৭১ সালে লড়াই করেছেন তার জন্মভূমির স্বাধীনতার যুদ্ধে পাকিস্তানি সৈন্যদের নির্বিচার গণহত্যা ও বাঙালি নিপীড়নের বিরুদ্ধে। যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে যখন আবারও অসাংবিধানিক শাসন আসে, আবারও যখন উগ্র সাম্প্রদায়িকতার খগড় নেমে আসে, আবারও রুখে দাঁড়ান মুক্তিযুদ্ধের এই সেনাপতি।

সভাপতির বক্তব্যে এ্যাডভোকেট দীপংকর বড়ুয়া পিন্টু বলেন,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে বাঙালি জাতির যে মহাজাগরণ, সে জাগরণ ছিল তার কাছে ভালোবাসার। সে কারণে হবিগঞ্জের বাড়িতে ছুটিতে থাকাকালে সেদিনকার পশ্চিম পাকিস্তানের কর্মস্থলে আর ফিরে যাননি তিনি। কালবিলম্ব না করে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। অসাংবিধানিক ও সাম্প্রদায়িক শাসনের বেড়াজালে দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা যখন প্রবলভাবে আক্রান্ত, শঙ্কিত হন জেনারেল সি আর দত্ত, তবে বসে থাকেননি তখনও। তারই নেতৃত্বে গড়ে ওঠে আজকের হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ।

বিশেষ অতিথি র বক্তব্যে জেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি এ্যাডভোকেট রনজিত দাশ বলেন,অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক চেতনার মানুষ ছিলেন সি আর দত্ত । বাংলাদেশের প্রশ্নে কোন আপোষ করেন নাই সি আর দত্ত। আমি বঙ্গবন্ধু এবং সি আর দত্তের আদর্শ নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই। কক্সবাজারে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যে কোন সমস্যা ও বিপদে কেন্দ্রীয় নেতাদের দিকে না চেয়ে এলাকায় নিজেদের মাধ্যমে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

আলোচনা সভা ও বিশেষ প্রার্থনায় অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন,হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ চকরিয়া উপজেলার সভাপতি রতন বরণ দাশ,মহেশখালী উপজেলার সাধারণ সম্পাদক ডা. রতন কান্তি দে,উখিয়া উপজেলার সাধারণ সম্পাদক সুমন শর্মা, চকরিয়া পৌরসভার সভাপতি নারায়ণ কান্তি দাশ,জেলা ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন শর্মা রনি(উখিয়া),প্রকাশ সিকদার(রামু),পরিমল বড়ুয়া(চকরিয়া),চন্ডী আচার্য্য,বিন্দু আচার্য্য অজয়(সদর),খুরুস্কুল ইউনিয়নের আহব্বায়ক পিক্লুময় পাল,বাবুল কান্তি দে(ঈদগাঁও),রুপনা পাল(সদর),মহেশখালী পৌরসভার সভাপতি ঝুলন দাশ।

এসময় উপস্থিত ছিলেন-জেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ট্রাস্টি বাবুল শর্মা, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি মন্ডলির সদস্য উদয় শংকর পাল মিঠু,রাধা গোবিন্দ দাশ,দিলীপ পাল,নাতু দাশ,বিপুল সেন,মাস্টার জেমসেন বড়ুয়া,ডা.চন্দন কান্তি দাশ,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা.পরিমল বড়ুয়া,চঞ্চল দাশগুপ্ত,স্বপন গুহ,এড. বাপ্পী শর্মা.মুকুল কান্তি দাশ(চকরিয়া),দপ্তর সম্পাদকআজিত কুমার দাশ হিমু,,প্রচার সম্পাদক তপন ধর,সুমন চৌধূরী আগুন,দেবাশীষ দাশ দেবু,সাংবাদিক দীপন বিশ্বাস,মংথেলা রাখাইন,শুভদত্ত বড়ুয়া,ডা.ডিবি শর্মা,ডা.উল্লাস ধর,সেবক পাল,সজল কান্তি দে,জ্যোতি মল্লিক বাবু,বিকাশ কান্তি সুশিল,প্রদীপ শর্মা,মাস্টার সুমন শর্মা,মনি বড়ুয়া,মৃদুল মল্লিক,লালন পাল,সাগর পাল সাজু,অরুণ বড়ুয়া,উতসবময় চৌধূরী,অশোক কুমার বড়ুয়া,রতন কান্তি দে,ডা.পরিমল কান্তি সুশিল,রুপন বড়ুয়া,মধু সরকার,দেবাশীষ দে,সুনিপ দাশ সৌরভ,বিকাশ কান্তি দে,সবুজ শর্মা,সজল দাশ,প্রসেনজিত ধর রুবেল প্রমুখ।