সিবিএন ডেস্ক:
কুড়িগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনের বেতন বৃদ্ধি (ইনক্রিমেন্ট) আগামী দুই বছরের জন্য স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

মধ্যরাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামকে সাজা দেওয়ার ঘটনায় সুলতানাকে এ শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় জড়িত রাহাতুল ইসলামের ইনক্রিমেন্ট স্থগিত করা হয়েছে আগামী তিন বছরের জন্য। আরডিসি নাজিম উদ্দিনকে পদাবনতি দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমাকে সরকারি চাকরি থেকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) এ সিদ্ধান্তে সম্মতিও দিয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের অপেক্ষায় এ সংক্রান্ত নথি প্রধানমন্ত্রীর দফতরে রয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, তদন্ত বোর্ডের আহ্বায়ক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) আলী কদর চলতি বছরের ২ মে দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদনে সুলতানা পারভীনের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী বিধিমালা অনুযায়ী আনা অসদাচরণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, তদন্ত বোর্ডের তদন্ত প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রাদি পর্যালোচনা শেষে অভিযুক্ত কর্মকর্তা সুলতানা পারভীনকে দণ্ড প্রদানের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সরকারি কর্মচারী বিধিমালা মোতাবেক কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়। সুলতানা পারভীন লিখিতভাবে দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর জবাব দাখিল করলে সেই জবাব ও তদন্ত প্রতিবেদনসহ অভিযোগের গুরুত্ব ও প্রাসঙ্গিক প্রশাসনিক বিষয়াদি বিবেচনা করে সরকারি কর্মচারী বিধিমালা অনুসারে দুই বছরের জন্য তার বেতন বৃদ্ধি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তিনি ভবিষ্যতে এই মেয়াদের কোনও বকেয়া পাবেন না এবং তার বেতন বৃদ্ধি গণনা করা যাবে না বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ রয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সুলতানা পারভীন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক হিসেবে কর্মরত থাকার সময় বাংলা ট্রিবিউন অনলাইনভিত্তিক ওয়েব পোর্টালের সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে মধ্যরাতে ধরে নিয়ে গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা প্রদানের পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর বিধি ৩(খ) অনুযায়ী, অসদাচরণের অভিযোগে দায়ের হওয়া বিভাগীয় মামলায় তাকে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়। অভিযুক্ত কর্মকর্তা সুলতানা পারভীন লিখিত জবাব দাখিল করে ব্যক্তিগত শুনানির প্রার্থনা করলে ২০২০ সালের ৯ আগস্ট ব্যক্তিগত শুনানিতে দেওয়া তার মৌখিক বক্তব্য ও লিখিত জবাব সন্তোষজনক বিবেচিত না হওয়ায়, ন্যায়বিচারের স্বার্থে বিভাগীয় মামলাটি তদন্ত করার জন্য তদন্ত বোর্ড গঠন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।