হেলাল উদ্দিন, টেকনাফ:
টেকনাফের হ্নীলায় কয়েক দিনের প্লাবনে গুদাম ও মাঠে মওজুদ করা অর্ধকোটি টাকা মূল্যমানের প্রায় সাড়ে ১৬ টন লবণ পানিতে গলে মিশে গেছে। এতে লবণ মওজুদদার ও চাষীরা আর্থিকভাবে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এই জনগুরুত্বপূর্ণ লবণ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে আগামী মৌসুমে সরকারী সহায়তা বা প্রণোদনা একান্ত জরুরী হয়ে পড়েছে।
সরেজমিন পরিদর্শন ও লবণ ব্যবসায়ী সুত্র জানায়, গত কয়েকদিনের প্লাবন ও বন্যায় হ্নীলা ইউনিয়নের লবণ চাষী ও ব্যবসায়ীদের গুদাম ও মাঠে কৃত্রিম উপায়ে মওজুদ করা লবণের মধ্যে হ্নীলা ফুলেল ডেইলের মাহাবুব মোরশেদের ৫ হাজার মণ, চৌধুরী পাড়ার ক্যজলা চৌধুরীর ৩ হাজার মণ, গাজী পাড়ার নুর আলম মিস্ত্রীর ১ হাজার মণ, নাটমোরা পাড়ার আব্দুর রহিমের ৫শ মণ, দক্ষিণ ফুলের ডেইলের ফকিরের ৫ শ মণ, নাটমোরা পাড়ার ঈমাম হোছনের সাড়ে ৫শ মণ, আলীখালীর ছৈয়দ আহমদের ৮শ মণ, গুরা মিয়ার ৬শ মণ, সোনা আলী ওরফে ভূলুর ৫শ মণ, রঙ্গিখালী মোহাম্মদ হোছনের ৪শ মণ, আবুল হোছনের সাড়ে ৩শ মণ, মীর কাশেম সওদাগরের ৫শ মণ, ফুলের ডেইলের সফিক আহমদের ৫শ মণ, আলীখালীর কামাল হোছনের ১শ মণ, ফিরোজের ১শ মণ, নুর মোহাম্মদ ৫শ মণ, সিকদার পাড়ার আলমের ৫শ মণ, পানখালীর খলিলের ৫শ মণ এবং আলীখালীর গুরা মিয়া-২ এর ৫শ মণসহ মোট ১৬হাজার ৪শ মণ অর্থাৎ সাড়ে ১৬টন লবণ গলে পানি হয়ে গেছে। এতে এই লবণ ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে নিরুপায় হয়ে পড়েছে।

এই ব্যাপারে স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, আমরা ধার-কর্জ্জ করে লবণের মাঠ করেছিলাম। লবনের দাম কম থাকায় তা মওজুদ করে ন্যায্যমূল্যে বিক্রির উদ্দেশ্যে মওজুদ করেছিলাম। এখন বন্যায় সব নিয়ে গেল। এই অনিশ্চয়তায় মহাজনেরা টাকা খুঁজতে শুরু করেছে। এখন অনেকের সংসার চালানো খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। এভাবে থাকলে আগামী বছর লবনের মাঠ করা যাবেনা। তাই আমরা সহায়তার জন্য বিসিকসহ সরকারের উর্ধ্বতন মহলের আন্তরিক সহায়তা কামনা করেন।
হ্নীলা লবণ ব্যবসায়ীরা জানান, বন্যার কারনে হ্নীলার লবণ চাষী ও ব্যবসায়ীরা এইবারের মতো আর ক্ষতির সম্মুখীন হয়নি। তাই জনগুরুত্বপূর্ণ এই শিল্পকে বাচাঁতে সরকারের সহায়তা মনোভাব কামনা করছি।
হ্নীলা ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান,হ্নীলাবাসী প্রাকৃতিক দূর্যোগের চরম দুঃসময় পূর্বে আর দেখেনি। ঘর-বাড়ি,রাস্তা-ঘাট ও গাছ পালার পাশাপাশি অত্র ইউনিয়নের লবণ ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। লবণ চাষ ও উৎপাদনের ধারা অব্যাহত রাখতে এই ইউনিয়নের লবণ চাষী এবং ব্যবসায়ীদের অনুদান বা প্রণোদনা দেওয়ার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি দাবী জানাচ্ছি।