সাইদুল ইসলাম ফরহাদ :

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্থানীয় কৃষকের থাকা চাষের জমির এখনো কোন রকম ক্ষতি পূরণ পায়নি কৃষকেরা। কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের প্রায় ১০০ একর জমির চাষাবাদ বন্ধ রয়েছে। তিন বছর ধরে অনাবাদি হয়ে পড়ে আছে এসব জমি। এতে আর্থিক সংকটে আছেন শত শত কৃষক।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও চাষিরা জানান, প্রতি বছর এই সময়ে ধান চাষ হতো জমি গুলোতে । অথচ টেকনাফ উনছিপ্রাং ২২নং ক্যাম্পের সঙ্গে লাগোয়া পুঁটি বনিয়া ও চাকমা পাড়া ধানি জমি এখন এনজিও সংস্থার বড় হসপিটাল ও এনজিওর গুডাউন। উনছিপ্রাং রোহিঙ্গা শিবিরের কারনে কয়েক শত কৃষি জমি ক্যাম্পের দখলে। টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ধান চাষী মোহাম্মদ আলী জানান, ২০১৭সালে আগস্টে ঐ এলাকায় মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের তিনি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। তার জমিতে থাকার ব্যবস্থা ও খাবার দিয়েছেন। কিন্তু তার মুল পেশা ধান চাষ এখন একদম বন্ধ হয়ে রয়েছে।

তিনি বলছেন, “আমাদের ধান ও বেগুন ক্ষেত ও চাষের জমি বলতে গেলে ওদের দখলে। আমার জমিতে রোহিঙ্গাদের দুইশ মতো পরিবারের বাস করছে।  ২০১৭ সালে  আগস্টের শেষের দিক থেকে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী কক্সবাজারে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। এদের কারণে আমাদের চাষাবাদ বন্ধ। কোন রকম ক্ষতি পূরণ পাইনি। উল্টো এনজিও সংস্থাদের কর্মীদের হাতে অপমান হয়েছি। ধান চাষের সময় হল বর্ষা মৌসুম। ধান চাষ বন্ধ রয়েছে। এই পরিস্থিতি ঐ অঞ্চলের বহু মানুষের।

২২নং ক্যাম্পে কৃষক সুলতান আহমদ ফসলি জমি রয়েছে । কিন্তু রোহিঙ্গা আসার পর থেকে চাষ করা বন্ধ রয়েছে। তার জমিতে গড়ে উঠেছে এনজিও বড় -বড় হসপিটাল। হসপিটাল তৈরির সময় জমির ভাড়া দেওয়ার কথা থাকলেও কিন্তু এক টাকাও দেয়নি এনজিও সংস্থা।

কৃষক সুলতান আহমদ  জানান , এনজিও সংস্থা IOM তার জমিতে হসপিটাল তৈরি করে । হসপিটাল তৈরির সময় তিনি বাধা দিয়েছিলেন। কিন্তু ভাড়া দেওয়ার কথা বলে এনজিও সংস্থা IOM। মাস পূর্ণ হলে ভাড়ার জন্য এনজিও সংস্থা IOm কাছে গেলে উল্টো তাঁকে অপমান করে। এনজিও সংস্থা IOM বলে আমরা জমি সরকার থেকে নিয়েছি টাকা নিতে হলে সরকার থেকে নিও।

এই বিষয়ে গ্রীন এনভায়রনমেন্ট মুভমেন্ট টেকনাফ উপজেলা শাখার সভাপতি তারেক মাহমুদ রনি বলেন, রোহিঙ্গাদের কারণে যাদের ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের ক্ষতি পূরণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। রোহিঙ্গাদের কারণে আমার প্রাণের টেকনাফের অনেক ফসলি জমি নষ্ট হয়েছে যা এখনো ক্ষতি পূরণ হিসেবে আমাদের কৃষক ভাইয়েরা পাইনি। এটি খুইবি দুংখ জনক ঘটনা। আশা করি মাননীয় জেলা প্রশাসক ভাল সিন্ধান্ত নিবেন। টেকনাফে বর্তমানে ৪০% কৃষি জমি নষ্ট হয়েছে। তার জন্য আমরা অনেক আন্দোলন করেছি। এই আন্দোলন গুলো সফল হয়েছে।
এই বিষয়ে টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জানান, বিষয়টি জেলা প্রশাসককে মহোদয়কে জানানো হবে।