রামু প্রতিনিধি :
খরুলিয়ায় বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের শিকার যুবক জামাল উদ্দিনের জানাযা সম্পন্ন হয়েছে। এদিকে এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িতদের কেউ এখনো গ্রেফতার হয়নি। তবে পুলিশ এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
কক্সবাজার খরুলিয়া নয়াপাড়া গ্রামের যুবক জামাল উদ্দিনকে স্থানীয় একটি চক্র পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে বলে অভিযোগ করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। জামাল উদ্দিন (২২) কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের খরুলিয়া নয়াপাড়া ৯ ওয়ার্ডের মৃত ফজল করিমের ছেলে।
সন্ত্রাসী হামলার শিকার জামাল উদ্দিন সোমবার (১২ জুলাই) সকাল পৌনে ১১ টায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মারা যান। গতকাল মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) ময়না তদন্তশেষে তার মৃতদেহ বাড়িতে নেয়া হয়। বাদ আছর খরুলিয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ মাঠে তাঁর নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযা পূর্ব সমাবেশে ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান, মরহুমের জেঠাতো ভাই মোহাম্মদ আলম বক্তব্য রাখেন। পরে স্থানীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
নিহত জামালের ভাই মনসুর আলম ও কামাল উদ্দিন জানিয়েছেন- আর্থিক বিষয় নিয়ে স্থানীয় ইউসুফ আলীর ছেলে শওকত আলী পুতিয়ার সাথে জামালের বিরোধ চলছিলো। গত ৭ জুলাই রাতে নানার বাড়ি থেকে খরুলিয়া আসছিলেন জামাল। পথে মুন্সীর বিল রাস্তার মাথা নামক স্থানে পৌঁছলে পূর্ব শত্রæতার জের ধরে জামালের গতিরোধ করে মারধর শুরু করেন-শওকত আলী পুতিয়া সহ তার ৫/৬ জন সহযোগী। এক পর্যায়ে তাকে ইউসুফ আলীর বাড়ির ভিতরে নিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়। ইউসুফ আলীর ছেলে শওকত আলী পুতিয়া ছাড়াও হামলায় আরো অংশ নেন মো. হাছানের ছেলে ইউসুপ আলী, দেলোয়ার হোছনের ছেলে মেহেদী হাসান, ইউসুফ আলীর ছেলে সাদ্দাম হোসেন, দেলোয়ার হোসেন ও ওসমান গনি। হামলার পর মূমুর্ষু অবস্থায় জামালকে ইউসুফ আলীর বাড়ির সামনে ফেলে দেয়া হয়। সেখান থেকে স্থানীয়রা তাকে রাত ১১ টার দিকে উদ্ধার করে প্রথমে রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। পরদিন তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামের একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে আইসিইউতে রাখার জন্য বলা হলে অর্থাভাবে স্বজনরা জামালকে গত রবিবার পূনরায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে সোমবার সকালে তিনি মারা যান।
তারা আরো জানান- নিহত জামাল উদ্দিনের পিঠের উপরি অংশ, মাথার সামনে বাম অংশে, কপালের ডানপাশে, অন্ডকোষ ও মেরুদন্ডের উপরে সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখমের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তারা।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (অপারেশন) মো. সেলিম জানিয়েছেন- মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটনের জন্য মৃতদেহ সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
খরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান জানিয়েছেন-ইউসুফ আলীর ছেলেদের হামলায় জামাল উদ্দিন প্রাণ হারিয়েছেন। তিনি সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
জামাল উদ্দিনের ভাই কামাল ও মনসুর আরো জানান- হামলাকারি ইউসুফ আলীর ও তার পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিন এলাকায় বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িত। তার বড় ছেলে রাজা মিয়া ১ বছর পূর্বে খরুলিয়ায় মসজিদে প্রবেশ করে আবদুল মালেক নামের এক মুসল্লীকে কুপিয়ে আহত করেন। ওই ঘটনার পর র্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত হন রাজা মিয়া।
জানা গেছে- ৫ ভাই, ২ বোনের মধ্যে নিহত জামাল উদ্দিন ৪র্থ। তাকে হত্যার ঘটনায় পুরো এলাকাজুড়ে শোকাবহ পরিবেশ বিরাজ করছে। এলাকাবাসী এ ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি এলাকাবাসীর
খরুলিয়ায় হত্যাকান্ডের শিকার জামাল উদ্দিনের জানাযা সম্পন্ন
পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে
![](https://www.coxsbazarnews.com/wp-content/uploads/2021/07/kharulia-jamal.png)