মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া:
কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলায় বিকাশ ডিস্ট্রিবিউটার অফিসে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোরের দল ওই অফিসে প্রবেশ করে একটি কক্ষের ভল্ট ভেঙে নগদ ৪৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। গতকাল বুধবার (৭ জুলাই) রাত
সাড়ে ৯টার দিকে পেকুয়া উপজেলার বৃহত্তম বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পেকুয়া বাজারের পূর্ব পার্শ্বে অবস্থিত ইসলামী ব্যাংক ভবনের ৩য় তলায় বিকাশ ডিস্ট্রিবিউটারের অফিসে দূর্ধর্ষ এই চুরি ঘটনা সংগঠিত হয়। চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পেকুয়া উপজেলার বিকাশের
ডিস্ট্রিবিউটার। আর সেটি পরিচালনা করছেন আল আমিনের ছোট ভাই জাহেদুল ইসলাম। এদিকে চুরি সংগঠিত হওয়ার পর খবর পেয়ে পেকুয়া থানা পুলিশ কয়েক দফা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ৮ জুলাই বিকাল পর্যন্ত চুরি হওয়া টাকা ও এ ঘটনায় জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি পেকুয়া থানা পুলিশ। তবে পেকুয়া থানা পুলিশ বলছে, তারা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছেন। টাকা উদ্ধার ও ঘটনায় জড়িতদের আটক করতে পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

পেকুয়া বিকাশ ডিস্ট্রিবিউটার অফিসে কর্মরত সুপারভাইজার ও পেকুয়া সদর ইউনিয়নের সাবেক গুলদি গ্রামের হাজী উলা মিয়ার পুত্র রেজাউল করিম জানান, বুধবার ব্যবসায়িক কাজকর্ম শেষে বিকাশের ৪৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা অফিসের ভোল্টে রাখা হয়। অফিসে রাতে ৪ কর্মচারী ছিল। রাত ৯টার দিকে তারা বাইরের হোটেলে রাতের খাবার খেতে বের হয়। এই সুযোগে চোরের দল ইসলামী ব্যাংক পেকুয়া শাখা ভবনের ৩য় তলায় অবস্থিত বিকাশের অফিসের তালা কেটে ভেতরে প্রবেশ করে। পরে ভল্ট ভেঙে চোরের দল নগদ ৪৬ লাখ ৫০ হাজার লাখ টাকা নিয়ে যায়। অফিসের ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরায় দেখা যায়, জিন্স, টি-শার্ট এবং মাথায় হেলমেট পরিহিত সুঠাম দেহের এক যুবক অফিসের দরজার সামনে বিদ্যুতের মেইন সুইচ বন্ধ করে দেয়। এরপর সংঘবদ্ধ চোরের দল ভিতরে ঢুকে টাকা লুট করে। তারা এ নিয়ে পেকুয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

পেকুয়া থানার ওসি মো: সাইফুল ইসলাম মজুমদার বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শন করেছি। ভিডিও ফুটেজ উদ্ধার করে পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। এছাড়া থানার দুই জন অফিসার চুরির রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে।

পেকুয়া বিকাশের ডিস্ট্রিবিউটার আল আমিন বলেন, বিকাশের প্রতিষ্ঠানে চুরির ঘটনা নিঃসন্দেহে দুঃসাহসিক। আশা করি, ভিডিও ফুটেজ দেখে পুলিশ দ্রুত চোরদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যে সময় পেকুয়া বিকাশের ডিস্ট্রিবিউটার অফিসে চুরি সংগঠিত হয় সেসময় অফিসের চার কর্মচারীর এক সাথে রাতের খাবার খাওয়ার জন্য বাইরে যাওয়ার ঘটনাটি অস্বাভাবিকভাবে দেখছেন স্থানীয় সচেতন মহল। রাত ৯টার দিকে পেকুয়া বিকাশ ডিস্ট্রিবিউটার অফিসের ডিএসও কফিল উদ্দিন, জুনাইদুল ইসলাম, মো: আবদুল্লাহ ও শহিদুল ইসলাম রাতের খাবার খেতে বাইরে যায়। অন্যান্য দিন তারা দুইজন অফিসে অবস্থান করে অপর দুইজন খাবার খাওয়ার জন্য বাইরে যেতেন। দুইজন খাবার খেয়ে অফিস ফিরে আসলে অপর দুইজন খাবার খাওয়ার জন্য বাইরে যেতেন। কিন্তু ঘটনার দিন এক সঙ্গে চার কর্মচারী বিকাশ ডিস্ট্রিবিউটার অফিস তালাবদ্ধ করে বাইরে যাওয়ার বিষয়টি অস্বাভাবিক বলে ধারণা করছেন সচেতন মহল।