দুই মাস ধরে বন্ধ পর্যটন কেন্দ্র: খাবার সংকটে ঘোড়া, মৃত্যুর কারণ নিয়ে ভিন্নমত!

প্রকাশ: ৩১ মে, ২০২১ ০১:০৫ , আপডেট: ৩১ মে, ২০২১ ১০:৩৯

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


কক্সবাজার পর্যটন এলাকায় মৃত ঘোড়া। ছবি সংগৃহীত

বলরাম দাশ অনুপম :
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে পর্যটকদের বাড়তি আনন্দ দেয় ‘নানা রঙের ঘোড়া’। তবে করোনাকালে এই ঘোড়ার মালিকরাই পড়েছেন ভীষণ বিপদে। হারাধনের গল্পের মতো একের পর এক ঘোড়া মারা যাচ্ছে। তবে ঘোড়ার মৃত্যুর কারণ নিয়ে আছে ভিন্নমত।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ২২ জনের একটি সমিতি রয়েছে ঘোড়া মালিকদের। পর্যটকদের বিনোদনের জন্য সমিতির অন্তর্ভুক্ত ৫৫টি ঘোড়া রয়েছে। সমিতির বাইরে আছে আরো ১০টি। পর্যটকদের পাশাপাশি এসব ঘোড়া বিভিন্ন উৎসব ও বিয়েবাড়িতে ব্যবহার করে নিজেদের সংসার এবং ঘোড়ার রক্ষণাবেক্ষণ খরচ চালান ঘোড়া মালিকরা। চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে লকডাউন ঘোষণা করা হলে সংকটে পড়ে ঘোড়ার মালিকরা। পর্যটকশূন্য কক্সবাজারে আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে যায় তাদের। ফলে সংসার ও ঘোড়ার খরচ চালাতে গিয়ে কষ্টে পড়েন। এরইমধ্যে খাবারের অভাবে মারা যায় তিনটি ঘোড়া।
কুকুরের কামড়ে অসুস্থ হয়ে দুটি এবং সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় আরো একটি ঘোড়া। কক্সবাজার ঘোড়া মালিক সমিতির সভাপতি আহসান উদ্দিন নিশান বলেন,
লকডাউনে খাদ্যের অভাব ও নানা কারণে এ বছর ছয়টি ঘোড়া মারা গেছে। এর মধ্যে কক্সবাজার শহরের সমিতিপাড়া এলাকার আমির হোসেনের একটি, মো. আলমের একটি ও আকতার হোসেনের একটি ঘোড়া খাবারের অভাবে মারা গেছে।শহরের পেশকারপাড়া এলাকার মো. কাদেরের দুটি ঘোড়া অসুস্থ হয়ে এবং রুবেলের একটি ঘোড়া জেলগেট এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে।

অসুস্থ হয়ে দুটি ঘোড়ার মৃত্যুর কথা উল্লেখ করে পেশকারপাড়ার বাসিন্দা কাদের বলেন, আমার আটটি ঘোড়া। এর মধ্যে দুটি মারা গেছে, দুটি অসুস্থ। প্রতিদিন একটি ঘোড়ার ২০০-৩০০ টাকার খাবার লাগে। কিন্তু এ সময়ে আয়-রোজগার না থাকায় আমাদের দুর্দিন চলছে। লকডাউনে আমরা সরকারের সহযোগিতা চাই।

সমিতিপাড়া এলাকার ঘোড়ার মালিক মো. আলম বলেন, আমার একটি ঘোড়া মারা গেছে। লকডাউনে খাদ্য সংকটে পড়ে অসুস্থ হয়ে ঘোড়াটি মারা যায়। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের (পর্যটন ও প্রটোকল) সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মুরাদ ইসলাম বলেন, সৈকতে পর্যটকদের বিনোদনের জন্য ২২ জন ঘোড়া মালিককে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে করোনার কারণে সৈকত ও বিনোদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে মালিকদের আয় বন্ধ হওয়ায় ঘোড়াগুলোও খাদ্য সংকটে পড়ে। এজন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভুষি ও ছোলা বিতরণ করা হয়েছে। খাদ্য সংকট থাকার কথা নয়।

কক্সবাজার জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. অসিম বরণ সেন বলেন, খাদ্যের অভাবে ঘোড়া মারা যাওয়ার বিষয়টি সত্য নয়। এটি
মিথ্যা কথা। বার্ধক্যজনিত ও নানা অসুখে এক বছরে তিনটি ঘোড়া মারা গেছে। খাদ্যের অভাবে এত ঘোড়া মারা যাওয়ার খবর সঠিক নয়। কারণ আমরা ঘোড়া মালিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের ঘোড়া গুলোকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছি। আগামীতেও এ সহায়তা অব্যাহত থাকবে।