রামু প্রতিনিধি :
রামুর জোয়ারিয়ানালায় যৌতুকের দাবিতে এক গৃহবধুকে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতনের ঘটনায় স্থানীয়ভাবে একাধিকবার আপোষ-মিমাংসা হলেও যৌতুকলোভী স্বামী এখন নিজেকে আড়াল করে অপহরণের মিথ্যা অপবাদ দিয়ে উল্টো নিজের স্ত্রী-শ^াশুড়িকে হয়রানির চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে, রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রাম এলাকায়।
জানা গেছে, ২০২০ সালের ৯ মে কক্সবাজার সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের খামারপাড়া এলাকার নুর হোছনের মেয়ে তামান্না আকতারের সাথে রামুর জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের রইঙ্গাপাড়া এলাকার মৃত ছালেহ আহমদের ছেলে মামুনুর রশিদের বিয়ে হয়।
বিয়ের পর থেকে মামুনুর রশিদ নিজের পৈত্রিক বসত ভিটা নেই বলে স্ত্রীর কাছে যৌতুক দাবি করেন। এরই প্রেক্ষিতে বিয়ের কয়েকমাস পর শ^াশুডির দেয়া টাকায় জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রাম এলাকার জমি কিনে বসত ঘর নির্মাণ করে সেখানে বসবাস করে আসছিলেন ওই দম্পতি। কিন্তু এতে ক্ষান্ত না হয়ে আবারো টাকা দাবি করে স্ত্রী তামান্না আকতারকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন মামুনুর রশিদ।
জালালাবাদ ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার ফরিদুল আলম ফিরোজ ও সমাজসেবক আবু ছালেহ নুর জানিয়েছেন- নির্যাতন সইতে না পেরে মাসখানেক পূর্বে বাপের বাড়ি চলে যান তামান্না। চলে আসার কয়েকদিন পর তারা স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যস্থতায় নন-জুড়িসিয়াল স্ট্যাম্পের মাধ্যমে যৌতুক দাবি ও নির্যাতন করবে না মর্মে অঙ্গীকার দিয়ে স্ত্রী তামান্নাকে নিয়ে যান। কিন্তু এর সপ্তাহ দুয়েক না যেতে আবারো স্বামী কর্তৃক তামান্নাকে নির্যাতন করা হচ্ছে মর্মে অভিযোগ পান তারা।
তামান্না আকতারের মা পারভীন আকতার জানিয়েছেন-আপোষ করে মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার কয়েকদিন পর থেকে আবারো ৫০ হাজার টাকা যৌতুক চেয়ে মারধর করা হয়। এমনকি তার মেয়ের কাছে থাকা দেড় ভরি স্বর্ণালংকার ও টাকা নিয়ে ২দিন আগে সটকে পড়ে মামুনুর রশিদ। এ ঘটনার রেশ না কাটতেই মামুনুর রশিদকে তারা অপহরণ করেছেন এমন অপবাদ দিতে শুরু করে স্বামী মামুনুর রশিদের পরিবারের সদস্যরা। এমনকি এ নিয়ে মামুনুর রশিদের বোন বাদি হয়ে রামু থানায় অপহরণের মিথ্যা অভিযোগও করেছেন। এর মূল্য উদ্দেশ্যে নির্যাতনের ঘটনা আড়াল করে উল্টো তামান্না আকতার ও তার পরিবারের সদস্যদের হয়রানি করা।
রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কেএম আজমিরুজ্জামান জানিয়েছেন-মামুনুর রশিদকে অপহরণের একটি অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টি থানার একজন অফিসার সরেজমিন তদন্তও করেছেন। মেয়েদের অপহরণ করা সহজ। কিন্তু স্বামীকে অপহরণ করার বিষয়টি অস্বাভাবিক। তাই এ ব্যাপারে যথাযথ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। নিরাপরাধ কাউকে কোনভাবেই হয়রানি করা হবে না।