অনলাইন ডেস্ক: ভারত নিজেই এখন নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে জর্জরিত। টিকার জন্য বাংলাদেশ আগাম টাকা দিলেও ভারত চালান পাঠাতে পারছে না।

এমন পরিস্থিতিতে ভারতকে দ্রুত টিকা পাঠানোর অনুরোধ জানানোর পাশাপাশি বিকল্প উৎসর খোঁজেও অগ্রসর হয়েছে বাংলাদেশ। শুধু তা-ই নয়, কোভিড দীর্ঘ মেয়াদে থাকতে পারে, এমনটি আঁচ করে বাংলাদেশ চীনের উদ্যোগে ছয় দেশের টিকার মজুদ সৃষ্টির পথেও হাঁটছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, চীন ও পাকিস্তান এই ছয় দেশের পররাষ্ট্রসচিবরা গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) ভার্চ্যুয়াল বৈঠক করেছেন। আগামী মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) এই দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বৈঠক করবেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, চীনের উদ্যোগে বৈঠক হচ্ছে। সেখানে এই ছয় দেশের টিকার মজুদ গড়ার কাঠামো নিয়ে আলোচনা হবে।

তিনি বলেন, মনে হচ্ছে যে কভিড খুব সহজে যাচ্ছে না। তাই দীর্ঘ মেয়াদে টিকা প্রয়োজন হবে। তা ছাড়া আগামী দিনে কভিডের মতো মহামারির ক্ষেত্রে জরুরি প্রয়োজন মেটাতে মজুদ কাঠামো সৃষ্টির বিষয়ে আলোচনা চলছে।

ড. মোমেন বলেন, টিকা নিয়ে এত দুশ্চিন্তার কারণ নেই। পরিকল্পনা অনুযায়ী যথাসময়ে পর্যাপ্ত টিকা থাকবে। তিনি বলেন, ‘ভারতের দুটি চালান আসতে দেরি হয়ে গেছে। ভারত আমাদের বলেছে যে তারা পাঠাবে। কিন্তু তাদের নিজেদেরই চাহিদা এত বেশি যে ঝামেলায় পড়েছে। ’

মন্ত্রী বলেন, ‘ভারত যথাসাধ্য চেষ্টা করছে, যাতে আমাদের চালান পাঠাতে পারে। যদি কোনো কারণে ভারতের চালান না আসে সে জন্য আমরা চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবস্থা করে রেখেছি। যারা এ দেশ থেকে চীনে পড়ালেখা, ব্যবসা করতে যান তাঁরা বলছেন, চীনা টিকা না নিলে তারা সেখানে ঢুকতে পারবে না। ’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীনের যথেষ্ট উৎপাদন ক্ষমতা আছে। বাংলাদেশ যত ডোজ চাইবে চীন তা দিতে পারবে। তারা ছয় লাখ ডোজ উপহার হিসেবে দেবে। বাকিটা কিনতে হবে। এ বিষয়ে সমঝোতা স্মারক চূড়ান্ত হয়েছে। যেকোনো সময় তারা টিকা সরবরাহ করতে পারবে।

রাশিয়ার টিকা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া বাংলাদেশের চাহিদা অনুযায়ী টিকা দিতে পারবে না। তাদের কাছ থেকে কিছু কিনতে হবে। তারা এ দেশের ওষুধ কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে উৎপাদনে যেতেও রাজি আছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, রাশিয়া এ দেশকে প্রযুক্তি দেবে। এটি অন্য কাউকে দেওয়া যাবে না। তবে এ ক্ষেত্রে দু-তিন মাস সময় লাগবে। আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। রাশিয়াই ঠিক করবে তারা এ দেশের একটি বা একাধিক ওষুধ কোম্পানিকে কোভিড টিকা উৎপাদনের সুযোগ দেবে কি না।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওই টিকা একটু দামি। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যথেষ্ট টাকা রেখেছেন টিকা কেনার জন্য।

তিনি আরও বলেন, দেশের চাহিদা মিটিয়ে তৃতীয় দেশেও টিকা রপ্তানির সুযোগ থাকবে।

সূত্র: কালের কণ্ঠ