বলরাম দাশ অনুপম, কক্সবাজার:

কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পে ফের শংকা দেখা দিয়েছে। স্থবির হয়ে পড়েছে এখানকার পর্যটন শিল্প। করোনার হানায় গত বছরের ধাক্কা সামলানোর আগে দুই দফার লকডাউনে বর্তমানে পর্যটন শিল্প নির্ভর ব্যবসা-বাণিজ্য হুমকির মুখে পড়েছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ফের লকডাউনের  কবলে দেশ। এনিয়ে অজানা শংকায় পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা।

জানা যায়, কদিন আগেও কক্সবাজার সৈকত ও হোটেল মোটেল জোন ছিল লাখো পর্যটকের পদচারনায় মুখর। কিন্তু গত ১ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত কক্সবাজারের পর্যটন স্পট গুলো বন্ধ ঘোষনা করে জেলা প্রশাসন। এরপর গত ৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয় দেশব্যাপী ৭ দিনের লকডাউন। যা শেষ হওয়ার আগেই আরেক দফা বাড়িয়ে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত।
ফলে পর্যটক শূন্য হয়ে পড়ে বিশে^র দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত ও হোটেল-মোটেল জোন। বর্তমানে সৈকতে এখন শুনসান নীরবতা হোটেল মোটেল গুলোতে পর্যটকদের নেই কোন পদচারনা। সরকারী নির্দেশনায় হোটেল মোটেল বন্ধ ঘোষনা না করলেও পর্যটন স্পট বন্ধ ঘোষনা করায় আপনা আপনি পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছে হোটেল মোটেল গুলো।

হোটেল মোটেল ব্যবসায়ীরা বলছেন বিগত দিনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ফের লকডাউনের কবলে পড়ে তারা দিশেহারা। জানা গেছে, বন্ধ হয়ে গেছে অধিকাংশ হোটেল। বিদায় করে দেয়া হয়েছে হোটেল কর্মচারীদের।
ফলে সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল মোটেল মালিক আবারো বড় ধরনের ক্ষতির আশংকায় উদ্বিগ্ন। বেকার হয়ে পড়েছেন প্রায় ৩০ হাজার কর্মচারী। ব্যবসায়ীদের মতে গার্মেন্টস শিল্প কারখানা বাঁচিয়ে রাখতে সরকার সেসব প্রতিষ্ঠান চালু রাখার সিদ্ধান্ত যেমন নিয়েছেন তেমনি পর্যটন শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে কঠোর স্বাস্থবিধি মেনে পর্যটন স্পট খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। নাহলে এ শিল্পকে বাচিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।

হোটেল ক্যাসেল বে টাচ-এর জিএম আওলাদ হোসেন জানান, হোটেল মালিক ও কর্মচারীরা বর্তমানে চরম মানবেতন জীবন যাপন করছে। সেদিকে সরকারের নজর দেয়া প্রয়োজন।
হোটেল মোটেল অফিসার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ জানান, পর্যটন স্পট বন্ধ করার পর ৩০ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী খুবই কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। ফলে আমাদের ভবিষ্যত অনিশ্চিত।
হোটেল-মোটেল গেষ্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ¦ আবুল কাশেম সিকদার বলেন, আমরা যারা বিনিয়োগকারী ছিলাম আমরা আবার ব্যাংকের দ্বারস্থ হয়েছি। এই পর্যটন শিল্পের সাথে যারা জড়িত তারা সরকারী কোন প্রনোদনা পেয়েছে কিনা আমার জানা নেই। তাই এই শিল্পের সাথে জড়িতরা অজানা শংকায় রয়েছে। এ শংকা কাটাতে তারা স্বাস্থবিধি মেনে পর্যটন স্পট খুলে দেয়ার দাবী জানিয়েছেন সরকারের কাছে।