প্রথমআলো: অবশেষে গৃহস্থালি রান্নায় ব্যবহৃত তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলপিজি) দাম ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। বেসরকারি খাতে ১২ কেজি সিলিন্ডারের এলপিজির দাম মূসকসহ সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৯৭৫ টাকা। আর রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানির সাড়ে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৫৯১ টাকা।
আজ সোমবার অনলাইন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দাম ঘোষণা করে বিইআরসি। এর আগপর্যন্ত বেসরকারি খাতের কোম্পানি নিজেরাই এলপিজির দাম নির্ধারণ করত। গত ১৪ জানুয়ারি এলপিজির দাম নির্ধারণ নিয়ে গণশুনানি করে জ্বালানি খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিইআরসি।
সংবাদ সম্মেলনে বিইআরসির চেয়ারম্যান মো. আবদুল জলিল বলেন, গণশুনানি শেষে সবকিছু বিচার-বিবেচনা ও দাখিল করা তথ্য যাচাই-বাছাই করে একাধিক সভার মাধ্যমে কমিশন দাম চূড়ান্ত করেছে। এই দাম আজ থেকে কার্যকর হবে। পরবর্তী আদেশ না হওয়া পর্যন্ত তা বহাল থাকবে।
বিইআরসির আদেশে বলা হয়, গাড়িতে ব্যবহৃত এলপিজির দাম প্রতি লিটার ৪৭ টাকা ৯২ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে বিইআরসির চেয়ারম্যান মো. আবদুল জলিল বলেন, দাম সারা দেশে অভিন্ন থাকবে। ভোক্তারা বাড়তি দাম দেবেন না। কমিশনের আদেশ বাস্তবায়ন করতে লাইসেন্সধারীরা বাধ্য। তা না হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিইআরসির সদস্য মোহম্মদ আবু ফারুক, মকবুল ই ইলাহি চৌধুরী, মোহাম্মদ বজলুর রহমান, মো. কামরুজ্জামান।
গত বছরের ডিসেম্বরে বিইআরসিতে মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব করে এলপিজি সরবরাহকারী কোম্পানিগুলো। গণশুনানির আগে তাদের প্রস্তাব মূল্যায়ন করে বিইআরসি গঠিত কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি। তারপর গণশুনানিতে এলপিজি সরবরাহকারী কোম্পানির প্রস্তাব, কারিগরি কমিটির মূল্যায়ন নিয়ে বিভিন্ন পক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে।
বিইআরসির তথ্য বলছে, গৃহস্থালি রান্নার কাজে ব্যবহৃত এলপিজির ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ২৫৯ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব দেয় বেসরকারি খাতের কোম্পানিগুলো। আর সাড়ে ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম ৬০০ থেকে বাড়িয়ে ৭০০ টাকা করার কথা বলে রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি এলপি গ্যাস লিমিটেড (এলপিজিএল)। তবে বিইআরসি গঠিত কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি জানায়, বেসরকারি খাতে ৮৬৬ টাকা ও সরকারি খাতে এলপিজিএলের দাম ৯০২ টাকা করা যেতে পারে।
জানা গেছে, বেসরকারি খাতে এলপিজির ব্যবসা শুরু হয় প্রায় ২০ বছর আগে। কয়েক বছর ধরে বাজারে এর চাহিদা ও ব্যবসার বিস্তৃতি ব্যাপকভাবে বাড়ছে। কিন্তু দীর্ঘ সময়েও গ্রাহকের জন্য এলপি গ্যাসের দাম নির্ধারণ করতে পারেনি বিইআরসি। পেট্রোলিয়ামজাত পদার্থের খুচরা মূল্য নির্ধারণে একটি প্রবিধানমালার খসড়া তৈরি হয় ২০১২ সালে, যা আজ পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি। প্রবিধানমালা ছাড়াই উচ্চ আদালতের আদেশে বাধ্য হয়ে দাম নির্ধারণের প্রক্রিয়া শুরু করে বিইআরসি।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) রিট আবেদনের ভিত্তিতে এক মাসের মধ্যে গণশুনানির মাধ্যমে দাম পুনর্নির্ধারণ করে প্রতিবেদন দাখিল করতে গত ২৫ আগস্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন উচ্চ আদালত। নির্ধারিত ওই সময়ের মধ্যে দাম নির্ধারণ করতে না পারায় আদালতের কাছে ক্ষমা চেয়ে সময় বাড়িয়ে নেয় বিইআরসি। জনস্বার্থে ২০১৬ সালে রিট আবেদনটি করেছিল ক্যাব।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।