গৃহহীনের ঘর কই?

প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারী, ২০২১ ০৯:৪১ , আপডেট: ৩১ জানুয়ারী, ২০২১ ০৯:৫১

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


এম আবু হেনা সাগর, ঈদগাঁও:
কক্সবাজার সদরের পোকখালীর পূর্ব গোমাতলীর বাসিন্দা মো. নবী। বয়স প্রায় ৮০ বছর। সংসারে একমাত্র স্ত্রী মনোয়ারা বেগম ছাড়া আর কেউ নাই। ভাঙাচোরা ও দুচালার কুড়েঘরেই তাদের বসবাস। ভিক্ষা করে পাওয়া টাকায় সংসার চলছে কোনমতে। অনেক সময় খেয়ে না খেয়ে জীবন কাটাচ্ছে এই বৃদ্ধ দম্পতি। তাদের দুঃখ তাড়াবার কোন অবতার এখনো পর্যন্ত দেখা মেলে নি।

বুড়ো বয়সেও লাঠিতে ভর করে ঘর থেকে বের হতে হয় নবীকে। জীবনের তাগিদে দু-চার টাকার জন্য এ ঘর থেকে ওঘর, এ দোকান থেকে ওদোকানে যায় চামড়ায় ভাঁজ পড়া মানুষটি। না। তার দুঃখের গল্প শোনারও কেউ যেন নাই!

ভূমিহীন. গৃহহারাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর থেকেও বঞ্চিত। সে খবরও কে রাখে? জোড়াতালি দিয়ে চলছে মো. নবী ও মনোয়ারার সংসার।

পূর্ব গোমাতলী এলাকায় ভূমিহীন পরিবারটির জরাজীর্ণ বসতবাড়ী পরিদর্শনে গেলে করুন চিত্র চোখে পড়ে।

বারডইল্যা নামক এলাকায় তাদের আগের বাড়ি। পূর্ব গোমাতলীতে এসেছে ২০/২৫ বছর মতো হবে। সেখানে এক ব্যক্তির জায়গায় তাদের বসবাস। বয়সের ভারে অনেকটা নুয়ে পড়েছেন মো. নবী ও মনোয়ারা বেগম। তবু বেঁচে থাকতে সংগ্রাম।

তাদের দুইটি সন্তান থাকলেও খোঁজ রাখে না। ভিন্ন জায়গায় আলাদা সংসার নিয়ে চলছে কোনমতে।

প্রতিবেদককে দেখার পর কান্নাজড়িত কন্ঠে মো. নবী ও মনোয়ারা বেগম বলেন, কিভাবে আমাদের ভাতের টাকা জোগাড় হয়, তা আল্লাহই জানে। খুব কষ্টে আছি। কোন নেতা-নেত্রী, চেয়ারম্যান, মেম্বার আমাদের খোঁজখবর রাখেন নি। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছি।

দেখা গেল, কালো রঙের পলিথিন দিয়ে তৈরী একটি ছোট্ট ঘর, যে ঘরের ভেতরে সোজা হয়ে দাঁড়ানোও কষ্টসাধ্য। সেই ঘরেই কোনরকম দিনপার করেছে মো. নবী ও মনোয়ারা।

প্রচন্ড শীতে কুয়াশায় ভিজে রাত কাটছে তাদের।

পোকখালী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক অহিদুর রহমান ইত্তেহাদ বলেন, অসহায় ও ভূমিহীনদের ঘর দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু মো. নবীর মতো লোকজন কোন রকম সরকারি সাহায্য কিংবা প্রধানমন্ত্রীর উপহার ‘গৃহহীনের ঘর’ না পাওয়া খুবই দুঃখজনক।

ভূমিহীন নবী হোসেনকে একটি ঠিকানা করে দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ করেছেন যুবলীগ নেতা ইত্তেহাদ।

স্থানীয় মেম্বার কলিম উল্লাহ বৃদ্ধ, অসহায় পরিবারটিকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

অসহায়, গৃহহীন পরিবারটি কেন ঘর পেলনা জানতে ইউপি চেয়ারম্যান রফিক আহমদকে বেশ কয়েকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।