সাজন বড়ুয়া সাজু :

কক্সবাজারের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী তরুণ তরুনীদের নিয়ে গঠিত হল মানবিক ও বৌদ্ধধর্মীয় সংগঠন “আমরা কক্সবাজারের বৌদ্ধ তরুণ-তরুণী।
৮ জানুয়ারি রোজ শুক্রবার ঐতিহাসিক রামু রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহারের মাঠ প্রাঙ্গণে বিশাল এক বৌদ্ধ সম্মেলন ও পরমপূজ্য সাধনানন্দ মহাথের (বনভান্তে)’র ১০২ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই কমিটি গঠন করা হয়।

আজ বিকাল ২টায় উখিয়া সংঘরাজ ভিক্ষু সমিতির সভাপতি এস ধর্মপাল মহাথেরএর সভাপতিত্বে ভদন্ত জ্যোতি শরণসেন ভিক্ষু ও বিপুলা সেন ভিক্ষুর মঙ্গলাচরণ,নিরুপমা বড়ুয়া বেবির সঞ্চালনায় অভিপ্শা বড়ুয়া মেঘলা ও প্রবাহিকা বড়ুয়া মেঘা’র উদ্বোধনী সঙ্গীতের মাধ্যমে উক্ত অনুষ্ঠান আরম্ভ হয়।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার সদর-রামু ৩ আসনের  সংসদ সদস্য সায়মুম সরওয়ার কমল। তিনি বলেন, এ ধরনের সংগঠন মানুষের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে সহায়তা করে। নৈতিকতার সৃষ্টি করে । নিজেকে অন্যের কাছে তুলে ধরার প্লাটফরম তৈরী করে দেয়। আরও বলেন এই বয়সে যারা নেতৃত্বগুণ ছড়িয়ে দিতে পারে তারাই জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। তিনি সর্বদা এই সংগঠনের সাথে পাশে থাকবেন বলে জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে  কক্সবাজার সদর হাসপাতালের সহকারী রেজিস্টার  ডাক্তার উত্তম কুমার বড়ুয়া  বলেন, আজকের এই সংগঠন শুধু বৌদ্ধবাসীর জন্য না , এটা সব ধর্মের মানুষের জন্য কাজ করবে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ কে.শ্রী জ্যোতিসেন থের । তিনি সেচ্ছাসেবী সংগঠন ওয়ার্ল্ড ভিশনের উদ্ভব,বিদ্যানন্দের প্রতিষ্ঠাতা কিশোর কুমার দাশের উদাহরণের মাধ্যমে সবাইকে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য প্রদান করেন এবং আরও বলেন আজকে যারা এই সংগঠন গঠন করেছে তারা যদি এটা ধরে রাখতে পারে তাহলে একটা ইতিহাস হয়ে থাকবে। এভাবে আনুষ্ঠানিকভাবে সংগঠনের আবির্ভাব বিরল।

অনুষ্ঠানে রামু মিঠাছড়ি প্রজ্ঞামিত্র বন বিহারের অধ্যক্ষ সারমিত্র মহাথের-আশির্বাদক হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন সংগঠন করতে হলে আগে আমাদের একতা হতে হবে। একতা যেখানে আছে সেখানে হিংসা প্রতিষ্ঠা হতে পারে না । সবাইকে লোভ,হিংসা,বিদ্বেষ ও মান-অভিমান ত্যাগ করে  সংগঠন করতে হবে।

এছাড়া আশির্বাদক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন শৈলেরডেবা জ্ঞানসেন বৌদ্ধ ভিক্ষু শ্রামণ ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক শ্রীমৎ কুশলায়ন মহাথের ।
বিশেষ ধর্মীয় আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন রুঁমখা পুরাতন বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ জ্যোতিপ্রিয় থের ।  প্রধান আলোচক’র বক্তব্য প্রদান করেন বাঙালী মূল নিবাসী এর আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার পুলক কান্তি বড়ুয়া । তিনি বলেন প্রথমে আগে আমাকে সব বিদ্বেষ ভুলে একতার স্বপ্ন দেখতে হবে। তারপর সংগঠনের প্রগতিশীল হতে হবে। তাই তিনি সবাইকে সংগঠনের কার্যকলাপ সুদৃষ্টি দিয়ে ধরে রাখার আহবান জানান।

উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান ধর্মালোচক ছিলেন বাংলাদেশ মাইনোরিটি বুড্ডিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি শ্রীমৎ দীপানন্দ স্থবির।
অনুষ্ঠান শেষে ১০১ জন বিশিষ্ট কমিটি  প্রকাশ করা হয় এবং উদযাপনী কমিটির পক্ষ থেকে যারা এই অনুষ্ঠান সফল করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও নতুন কমিটিকে অভিনন্দন জ্ঞাপন করা হয়।