ইমাম খাইর, রাজশাহীর জিয়ানগর থেকে ফিরে ##
সুলতানা (৩৮)। ১ ছেলে ২ মেয়ে। স্বামী পরিত্যক্তা। রাজশাহী রাজপাড়া থানার বুলনপুর ৪ নং ওয়ার্ডের জিয়ানগরের বাসিন্দা।
বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কের জন্য তাদের বসতি থেকে উচ্ছেদ করা হয়।
সুলতানার অভিযোগ, ২০ বছরের বসতি থেকে প্রায় ২ হাজার উচ্ছেদ করা হয়। জিয়ানগরের মানুষগুলো এখন সর্বহারা। মাথা গুজার ঠাই নাই।
৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে কনকনে শীতের রজনিতে উচ্ছেদ করা হয়। ছেলে মোহাম্মদ আলমগীর হাসান আলমের জন্ম ওই জমিতেই। এখন ভাড়া বাসায় থাকেন। করোনায় ৩ দিন না খেয়ে ছিলেন। পুনর্বাসনের আশ্বাসে উচ্ছেদ করা হলেও কথার সাথে বাস্তবতার মিল পাচ্ছে না ক্ষতিগ্রস্তরা। মানবেতর জীবন যাপন করছে তারা।

উচ্ছেদ, ক্ষতিপূরণ, মানুষের দুঃখের কথা বর্ণনা দেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অধ্যক্ষ প্রফেসর শফিকুর রহমান বাদশা।

হাইটেক পার্কের কারণে বসতভিটা হারানো আরেকজন কোহিনুর (৪৮), স্বামী আবদুল খালেক। তার ১ ছেলে ২ মেয়ে।
উন্নয়ন হোক, তিনি চান। কিন্তু মানুষের পেটে-পীঠে লাথি মেরে নয়।
ক্ষতিগ্রস্তদের নাম দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালীচক্র।
বিভিন্ন এনজিও থেকে কিস্তি নিয়ে পড়েছেন বেকায়দায়। ধারদেনায় কঠিন সময় পার করছে এখানকার বাসিন্দারা।
মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অধ্যক্ষ প্রফেসর শফিকুর রহমান বাদশা বলেন, মানুষের ক্ষতি করে উন্নয়ন নয়। গৃহহারাদের গৃহ করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি প্রধানমন্ত্রীর। উন্নয়ন প্রকল্পের নামে মানুষকে উচ্ছেদ করা খুবই দুঃখজনক ও অমানবিক।

জিয়া নগর, যেখানে হচ্ছে হাইটেক পার্ক।

তার অভিযোগ, বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কের নামে কিছু মানুষ পকেট ভারি করেছে। ক্ষতি পূরণের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন দাবি মহানগর আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এই নেতার।
গত ৫ নভেম্বর সকালে ভুক্তভোগী প্রায় ৩০ জন নারী-পুরুষের দুঃখের কথা শুনেছি। যাদের সবার চোখেমুখে ক্ষোভের ছাপ। না পাওয়ার বেদনা তীব্রভাবে লক্ষ্য করেছি।
জিয়ানগরবাসির দাবি, আইন মেনে উন্নয়ন, কারো ক্ষতি করে নয়।