শাহিদ মোস্তফা শাহিদ :

চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের তরুণ সম্ভাবনাময়ী প্রতিভাবান শিল্পী জনি দে রাজের খুনের ঘটনার দুই দিন পেরিয়ে গেলেও কোন আসামীকে আটক করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ নিয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে তার ভক্ত, শুভাকাঙ্ক্ষী, সহপাঠী ও এলাকার লোকজন। যদিও বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বলছে তারা ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে অভিযান চালাচ্ছে।

জনি দে রাজকে হারিয়ে পুরো জেলায় চলছে শোকের মাতম। জেলা ব্যাপী অব্যাহত রয়েছে মানববন্ধন, প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ সমাবেশ।মানববন্ধন থেকে বক্তারা ৭২ ঘন্টার হুঁশিয়ারী দিয়ে বলছে কন্ঠ শিল্পী জনি দে রাজের খুনের ঘটনায় যারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করে দ্রুত বিচার কার্য শেষ করা।অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য থাকবে।

আজ ১০ অক্টোবর সকাল ১১ টায় ঈদগাহ বাসস্ট্যান্ডে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন ঈদগাহ কলেজের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। কাজী আবদুল্লাহর সঞ্চালনায় এ মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন কলেজ শিক্ষক আবদুল হামিদ, জাহাঙ্গীর আলম, সংবাদকর্মী শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবু হেনা বিশাদ, সংস্কৃতিকর্মী কুতুবউদ্দিন চৌধুরী প্রমূখ। এ সময় জনির অসংখ্য সহপাঠী উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তার বাবা বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এজাহারের সূত্র ধরে পুলিশ সে পথে হাটবে। নিহত কন্ঠ শিল্পী জনি দে রাজ ঈদগড় ইউনিয়নের তপন দের ছেলে।

উল্লেখ্য জনি ও তার বাবা মিলে পটিয়া থেকে বিয়ে অনুষ্ঠানে গান করে ৮ অক্টোবর ভোরে শ্যামলী পরিবহন করে ঈদগাঁও বাসস্টেশনে নামে। পরে পিতা পুত্র নাস্তা করে বাড়িতে যাওয়ার জন্য জনি একটি সিএনজিতে উঠে৷ তখন বাবা তপন দে পরের গাড়ীতে উঠার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ দিন সকাল ৮.১৬ মিনিটের দিকে ঈদগড় সড়কের হিমছড়ি ঢালা নামক স্থানে পৌছলে ডাকাতদল গাড়ীটিতে সংকেত দিয়ে থামায়। পরে অন্য যাত্রী ও সিনএনজি চালককে পিটিয়ে আহত করে এবং সর্বস্ব কেড়ে নেয়। এ সময় বাঁধা দেওয়ায় চেষ্টা করলে যাত্রী কন্ঠশিল্পী জনি দে রাজকে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে ঈদগাঁওস্থ একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়না তদন্ত শেষে তাকে ধর্মীয় ভাবে দাহ করা হয় বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে পাহাড়ি জনপদ রামু উপজেলার রশিদ নগর ইউনিয়নের লোকজন জানিয়েছে জনি দে রাজ হত্যার আগের দিন ৭ অক্টোবর রাত সাড়ে দশটার দিকে রশিদ নগর তলিয়া ঘোনা এলাকার চিহ্নিত পাহাড়ি ডাকাত আবদু রহমান প্রকাশ ডাকাত কানাইয়া, হেলাল প্রকাশ চিকইন্না ডাকাতের নেতৃত্বে ১০/১২ মুখোশ পরিহিত ডাকাত পাহাড়তলী এলাকা হয়ে কানছিরা ঘোনা পার হয়ে ঈদগড়ের দিকে যেতে দেখেছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রত্যক্ষদর্শী এ প্রতিনিধিকে জানিয়েছে। আবদু রহমান প্রকাশ ডাকাত কানাইয়া ও হেলালকে তারা সরাসরি চিনতে পেরেছে।

এর আগেও আবদু রহমান প্রকাশ ডাকাত কানাইয়া পাহাড়ে অবস্থানরত অপহরণকারী ও ডাকাতদের জন্য তরিতরকারিসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বস্তা ভর্তি করে পাহাড়ে নিয়ে যাচ্ছিল বলে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছে। এই দুইজনকে আটক করতে পারলে জনি দে রাজ হত্যার মোটিভ উন্মোচন হবে বলে মনে করেন সচেতন মহল।