হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী :
রাজনীতির হাতেখড়িটা পরিবারে। এরপর ধাপে ধাপে সক্রিয় হন বিএনপির রাজনীতিতে। পাথেয় ছিল জিয়াউর রহমানের আদর্শ, বাবা গর্জনিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রয়াত হাকিম মিয়া চৌধুরীর জীবনদর্শন।

স্বাধীনতা পরবর্তী রামুর গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের দ্বিতীয়বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন ছুরুত আলম চৌধুরী। শত প্রতিকূলতা থাকলেও মাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন রাজনীতির মাঠে। তিনি নিজেই জমি দান করে প্রতিষ্ঠা করেন গর্জনিয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ। যুক্ত ছিলেন নাপিতের চর আমির মো. চৌধুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দাতা সদস্যসহ নানা সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে।

তাঁর বক্তৃতা ও শৌখিনতা মুগ্ধ করতো ভিন্ন দলের নেতাকর্মীদেরও। রামুর বিএনপির রাজনীতির মাঠে সর্বদা সক্রিয় ছুরুত আলম চৌধুরী চলে গেলেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

২৬ জুন (শুক্রবার) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় গর্জনিয়ার বোমাংখিলস্থ নিজ বাড়িতে জীবনাবাসান ঘটে নিবেদিতপ্রাণ এই রাজনীতিকের। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। ছুরুত আলম চৌধুরীর মৃত্যুতে রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সাবেক মন্ত্রী ও সাবেক সাংসদ সালাহউদ্দিন, কক্সবাজার ৩ আসনের সরকার দলীয় সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল, বিএনপির সাবেক সাংসদ শাহজাহান চৌধুরী, লুৎফুর রহমান কাজল, গর্জনিয়ার সাবেক চেয়ারম্যান তৈয়ব উল্লাহ চৌধুরী, কক্সবাজার মা ও শিশু হাসপাতালের পরিচালক- আমেরিকা প্রবাসি মো. সাইফুল্লাহ চৌধুরী লেবুসহ তাঁর নিজ দল বিএনপি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা ছুরুত আলম চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন।

ছুরুত আলম চৌধুরী গত চার মাস আগে থেকে অসুস্থ ছিলেন। চট্টগ্রামে চিকিৎসা করতে গিয়ে যক্কা রোগ শনাক্ত হয়। এর পর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত
চিকিৎসকের কথা অনুযায়ী চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও দুই মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন।

জানাজা ও দাফন :
শনিবার (২৭ জুন) দুপুর ২টায় গর্জনিয়া উচ্চবিদ্যালয় মাঠে মরহুম ছুরুত আলম চৌধুরীর জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর আমির আলী চৌধুরী জামে মসজিদ পারিবারিক কবরস্থানে ভাই আমির মো. চৌধুরী বাচ্চুর কবরের পাশে তাঁকে সমাহিত করা হয়। করোনা পরিস্থিতিতেও ছুরুত আলম চৌধুরীর জানাজা নামাজে দূর দূরান্ত থেকে মানুষের ঢল নামে।

গর্জনিয়ার পোয়াংগেরখিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সাংবাদিক হাফিজুল ইসলাম চৌধুরীর পরিচালনায় জানাজা নামাজের পূর্বে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন- কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজল, রামু উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফজলুল্লাহ মোহাম্মদ হাসান ও মরহুমের ছোট ছেলে ওয়াসিমুল আলম চৌধুরী।

জানাজা নামাজে ইমামতি করেন কক্সবাজার জেলা তাবলীগ জামাতের আমির মাওলানা মুফতী মোর্শেদুল আলম। দুপুর একটা থেকে ছুরুত আলম চৌধুরীর মরদেহ তাঁর প্রতিষ্ঠিত গর্জনিয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে সর্বসাধারণের জন্য রাখা হয়।