মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

কক্সবাজার পৌরসভা সহ জেলার যে সকল ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন ‘রেড জোন’ হিসাবে ম্যাপিং করে চিহ্নিত করা হয়েছে, সেসব ‘রেড জোন’ এলাকা প্রাথমিকভাবে ২সপ্তাহের জন্য কঠোর লকডাউন (Lockdown) থাকবে। প্রয়োজন হলে ২ সপ্তাহের পর সময় আরো বাড়ানো হবে। ‘রেড জোন’ হিসাবে চিহ্নিত করা এলাকা থেকে কোন লোক বাহির ও প্রবেশ করতে পারবেন না। এলাকা গুলো সম্পুর্ন অবরুদ্ধ থাকবে। প্রয়োজনে লকডাউন থাকাকালে সেসব এলাকার গরীব, অসহায়, দুঃস্থ নিন্ম আয়ের মানুষকে সরকারিভাবে খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হবে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক ও জেলা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মোঃ কামাল হোসেন বৃহস্পতিবার ৪জুন এ কথা বলেছেন।

তিনি আরো বলেন, শুধুমাত্র ইমার্জেন্সী কার্যক্রমে জড়িতরা রেড জোনে সীমিত আকারে আসা যাওয়া করতে পারবে। ‘রেড জোন’ এলাকায় করোনা সংক্রামনের ঝুঁকির মাত্রা কমাতে এ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন বলেন, কক্সবাজার পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডের মধ্যে শুধুমাত্র ১ নম্বর ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডকে ‘ইয়োলো জোন’ এবং বাকী ২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ১১ নম্বর পর্যন্ত মোট ১০টি ওয়ার্ডকে অতিমাত্রায় করোনা সংক্রমণের ‘রেড জোন’ হিসাবে ম্যাপিং করে চিহ্নিত করা হয়েছে। বলতে গেলে পুরো কক্সবাজার পৌরসভায় এখন ‘রেড জোন’ ও ঝুঁকিপূর্ণ। এখানে প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে কমিটি থাকবে। কক্সবাজার পৌরসভার কাউন্সিলরগণ কমিটির প্রধান হবেন। প্রত্যেক ওয়ার্ড থেকে যুবক, ছাত্র, সমাজকর্মী নিয়ে একটি করে স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করা হবে।কমিটিকে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট, সেনাবাহীনির সদস্যবৃন্দ, পুলিশ প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ সার্বিক সহযোগিতা করবেন।

যে ওয়ার্ড ২টিকে ‘ইয়েলো জোন’ চিহ্নিত করা হয়েছে সে ২টি ওয়ার্ডের সবকিছু সীমিত আকারে চলবে, সবার গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা হবে। সরকারি স্বাস্থ্য বিধি মেনে, সামাজিক ও শারীরিক দুরত্ব বজায় রেখে অন্যান্য নির্দেশনা মানতে বাধ্য করা হবে এ ২টি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের। কক্সবাজার পৌরসভায় কোন ওয়ার্ডকে ‘গ্রীণ জোন’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়নি বলে জানান জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন।

একইভাবে করোনা ভাইরাস সংক্রামণের সংখ্যার উপর ভিত্তি করেই কক্সবাজার পুরো জেলাকে ৩টি জোনে ম্যাপিং করে বিভক্ত করা হয়েছে। উপজেলাতে ইউএনও বৃন্দ এ ম্যাপিং করার দায়িত্ব পালন করছেন। কক্সবাজার জেলার ৮টি উপজেলাকে ইউনিয়নভিত্তিক এবং ৪টি পৌরসভায় ওয়ার্ড ভিত্তিক করোনা সংক্রমণের সংখ্যার উপর ভিত্তি করে এই ৩টি রং এ বিভাজন করা হয়। বিভাজনে যে ইউনিয়ন বা ওয়ার্ড করোনায় খুব বেশী সংক্রামিত হয়েছে, সংক্রামণের আধিক্য রয়েছে বলে তথ্য রয়েছে, সেগুলোকে “রেড জোন” বা লাল চিহ্নিত এলাকা, যে ইউনিয়ন বা ওয়ার্ড মাঝারী পর্যায়ে সংক্রামিত হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে সেগুলোকে ” ইয়েলো জোন” বা হলুদ চিহ্নিত এলাকা এবং যে ইউনিয়ন বা ওয়ার্ডে করোনা একেবারে সংক্রামিত হয়নি সেগুলোকে নিরাপদ রাখতে “গ্রীণ জোন” বা সবুজ চিহ্নিত এলাকা হিসাবে বিভক্ত করা হয়েছে। আর যে ইউনিয়ন বা ওয়ার্ড ‘গ্রীণ জোন’ হিসাবে চিহ্নিত করা হবে সেখানে সরকারি স্বাস্থ্য বিধি মেনে, সামাজিক ও শারীরিক দুরত্ব বজায় রেখে অন্যান্য নির্দেশনা মতো প্রায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা থাকবে বলে জানান জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন।