জসীম উদ্দীন:
কক্সবাজারে অতিহ্যবাহী বাঁকখালী নদী দখল করে নিজেদের খুশি মতো ফ্লট বানিয়ে বরাদ্দ করে দখলে রেখেছে একটি চক্র। এরই মধ্যে নদীর জায়গা বিক্রি করে কোটিপতি বনে গেছে অনকেই।আবার সেখানে অনেকেই অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণের পর এরই মধ্যে ভাড়া দিয়ে দিয়েছে।

সাম্প্রতিক করোনা দুর্যোগে লকডাউন চলাকালীন ফের বাঁকখালী নদী ভরাট করে রাতারাতি অবৈধ স্থাপনার নির্মাণের প্রতিযোগিতা চলছে। বিশেষ করে গেল রমজান মাস ও ঈদের সময়ে নদীর চরে ফোরজি গতিতে উঠেছে একাধিক ফাঁকা ভবন। এখনো রাতদিন চলছে নদী ভরাট ও স্থাপনা নির্মাণের কাজ।

বিষয়টি স্থানীয়রা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে অবগত করলেও রহস্যজনক কারনে নীরব সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। এমনটা দাবি করেছে স্থানীয় কয়েকজন।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়- পৌর শহরের পেশকার পাড়া পশ্চিম স্লুইচগেইট সংলগ্ন ও তার আশেপাশে নদী ভরাটের কাজ চলছে। প্লট হিসেবে ভাগ করে ভরাট করা হচ্ছে নদীর বিশাল একটি অংশ।দিনে ভরাটের কাজ চললেও রাতারাতি উঠেছে অবৈধ স্থাপনা। এমনকি ফাঁকা ভবন নির্মাণ করে ছাদ ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে কয়েকটি ভবনের। আবার কেউ বা ভবন নির্মাণের জন্য নির্মাণ সামগ্রী ও সরঞ্জাম মজুদ করেছে।

স্থানীয় পেশকার পাড়ার চিহ্নিত কয়েকজন দখলদার ও বাইরের কিছু কুচক্রী মহলের লোকজন এসব নদী দখল ও স্থাপনা নির্মাণ করছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ- নদী ভরাটে দখলদারদের সহযোগীতা করছে খোদ বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কক্সবাজার অফিসের কয়েকজন অসাধু কর্মকতা।

তথ্যমতে, বাঁকখালী নদী ড্রেসিং করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।সে কারনে বসানো হয়েছে ড্রেজার মেশিন। নদী খননের মাটি বা বালি নিয়ম অনুযায়ী আশেপাশের বাঁধে ফেলানোর কথা। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডে উত্তোলন করা বালি যাচ্ছে দখলদারদের প্লটে।

স্থানীয়দের দাবি- মোটা অংকের বিনিময় খাল ড্রেসিং নিয়োজিত মিঠু নামে এক ড্রাইভার বালি বিক্রি করে দিচ্ছে নদী দখলদারদের কাছে।হয়তো তার সঙ্গে আরও কেউ সংশ্লিষ্ট থাকতে পারে বলে ধারণা তাঁদের। ফলে একদিকে বেআইনিভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ড কতৃক বালি পাচ্ছেন নদী খেকোরা, অপরদিকে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব বিপুল অংকের রাজস্ব।

এ বিষয়ে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট দুইজন কর্মকর্তাকে একাধিবার রিং দেয়া হলেও কেউ ফোন রিসিভ করেননি।

এদিকে নদী ভরাট করতে গিয়ে সেখানে থাকা পৌরসভার ড্রেইনটি প্রায় ভরাট করে ফেলেছে দখলদাররা। এতে করে সামান্ন বৃষ্টিতে তৈরি হতে পারে জলাবদ্ধতা। বর্ষায় যার প্রভাব পড়বে পৌরশহরের কয়েকটি এলাকায়।

কক্সবাজার পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান করোনায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন থানকায় এ ব্যাপারে তাঁর প্রক্রিয়ায় জানা সম্ভব হয়নি।

অবশ্যই কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আশরাফুল আফসার বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন।

তিনি জানান, নদী দখলদারদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।আর অবৈধ সব স্থাপনা গুড়িয়ে দেয়া হবে।

কক্সবাজার সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ শাহরিয়ার মোক্তার জানান, সাম্প্রতিক বেশ কয়েকবার সেখানে অভিযান চালানো হয়েছে।সেখানে আবারও অভিযান পরিচালানা করা হবে।

উল্লেখ্য- অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন (বিআইডব্লিউটিএ) কতৃক তৈরিকৃত ৫১জন বাঁকখালী নদী দখলদারের বিরুদ্ধে কার্যকর কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।উচ্ছেদ করা যায়নি অবৈধ স্থাপনা। এ কারনে ফের বাঁকখালী নদী দখল ও স্থাপনা নির্মাণের সাহস পাচ্ছে দখলদাররা এমটাই মনে করছে স্থানীয়রা।