বাংলা ট্রিবিউন:

প্রতিবেশী দরিদ্রদের জন্য ত্রাণ সহায়তা চাইতে টেলিভিশনে দেখানো ৩৩৩ নম্বরে কল করেছিলেন লালপুর উপজেলার অর্জুনপুর -বরমহাটি ( এবি) ইউনিয়নের আঙ্গারিপাড়া গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম। বিষয়টি জানতে পেরে চৌকিদার দিয়ে ডেকে নিজ হাতে লাঠি দিয়ে শহিদুলকে বেদম মারধর করেন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার। এরপর শাসিয়ে দেন কাউকে বললে অবস্থা আরও খারাপ হবে। এ অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী।

দরিদ্র ওই কৃষক এখন চিকিৎসা নিচ্ছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী ওই চেয়ারম্যানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে। কৃষকের পায়ে চেয়ারম্যানের মারের দাগ। ( ব্লার করা)

ভুক্তভোগী শহিদুল(৬০) জানান, আঙ্গারীপাড়া এলাকার প্রায় আড়াইশ’ দরিদ্র মানুষ ২০-২৫ দিন থেকে কর্মহীন। নিজেরও কর্ম নেই। এ অবস্থায় নিজের পরিবারের কথা চিন্তা না করে প্রতিবেশীদের জন্য সাহায্য পেতে শনিবার বিকেলে তিনি ৩৩৩ নম্বরে ফোন দেন। রবিবার দুপুরে নামাজ শেষে বাড়ি এলে চৌকিদার তাকে বলে ইউনিয়ন পরিষদে ইউএনও এসেছে আপনার সঙ্গে কথা বলবেন। কিন্তু সেখানে পৌঁছে ইউএনওকে পাওয়া যায়নি বরং কোনও কথা বলার সুযোগ না দিয়ে চৌকিদারের হাত থেকে লাঠি নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান সাত্তার তাকে বেদম মারধর করে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। মারধরে তার দেহের পেছন অংশ ও পায়ে মারাত্মক জখম হয় ও মারের দাগ বসে যায়। তিনি বাড়ি ফেরার সময় চেয়ারম্যান শাসিয়ে বলে, ৩৩৩ নম্বরে কেন ফোন দিয়েছিস তার জন্যই এই শাস্তি। একথা কাউকে বললে তোর অবস্থা আরও খারাপ করে দেবো।

বাড়ি আসার পর এলাকাবাসী তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করায়। এরপর ইউএনওকে জানালে সরেজমিনে বিষয়টির খোঁজ নিয়ে তিনদিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন ইউএনও উম্মুল বাণীন দ্যুতি।

এ ঘটনায় শহিদুলসহ তার গ্রামবাসী মারধরকারী চেয়ারম্যানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার জানান, সোমবার বিকেলে ইউএনও তাকে এব্যাপারে ডেকেছিলেন। ওখানেই বিষয়টি মীমাংসা হয়েছে।

জানতে চাইলে ইউএনও উম্মুল বাণীন দ্যুতি মীমাংসার বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, ৩৩৩ নম্বর থেকে তাকে জানানোর পর প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নিতে তিনি চেয়ারম্যানকে বলেছিলেন। কিন্তু শহিদুলকে মারধর করাটা ঠিক হয়নি। এ ঘটনার জন্য চেয়াম্যানকে শোকজ করা হয়েছে। পত্র প্রাপ্তির ৩ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। জবাব পাওয়ার পর এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিবিএন/১৫ এপ্রিল/ইমাম