কামাল হোসেন, রামু
রামু উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নোবেল কুমার বড়ুয়া বলেছেন, লক্ষ্য করা যাচ্ছে রামুতে অনেক এলাকায় এখনো করোনা সতর্কতা মানা হচ্ছেনা। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। রামুতে এখনো করোনা রোগী সনাক্ত হয়নি মানে এই নই যে আমরা এর সংক্রমণ থেকে নিরাপদ। যেহেতু এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা সেহেতু ভাইরাসটি যেকোন মূহুর্তে আমাদের এখানে হানা দিতে পারে এইজন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশে ৫৬ জন করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৬ জন।এক মাত্র সতর্কতাই পারে এর সংক্রামণ থেকে আমাদের রক্ষা করতে। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে এক মাত্র সচেতনতাই মূল চিকিৎসা। তাই একজন স্বাস্থ্যসেবী হিসেবে রামু বাসীর প্রতি আমার বিনীত অনুরোধ আপনারা করোনার সতর্কবিধি মেনে চলুন। অন্তত পরিবারের কথা ভেবে হলেও ঘরে থাকুন।

আজ ২ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে ডা. নোবেল কুমার বড়ুয়া সচেতনতা মুলক এই সতর্ক বার্তাটি প্রদান করেন।

তিনি আরো বলেন, করোনা ভাইরাস নিয়ে আতংকিত না হয়ে সচেতন হউন।নিজের বাসায় থেকে এই যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করুন। নিজেকে এবং নিজের পরিবারের সকল সদস্যদের করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত রাখতে বাসায় থাকুন।সাবান দিয়ে হাত ধুয়ার অভ্যাস করুন। মনে রাখতে হবে আপনার সুরক্ষা আপনারই হাতে। বিদেশ থেকে আগতরা যেন দেশে আগমনের পর ১৪ দিন বাসায় আলাদা কক্ষে অবস্থান করে। কেউ অসুস্থ বোধ করলে নিকটস্থ হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করুন। চলুন সবাই সচেতন হই,সতর্ক থাকি, এবং কিছু দিন ঘরে থাকি।

করোনা মোকাবিলায় নিজেদের প্রস্তুতি জানতে চাইলে ডা.নোবেল প্রতিবেদককে জানান, ইতিমধ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ, নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে রামুতে ৫০ শয্যার আইসোলেশন ও কোয়েরেন্টাইন ইউনিট স্থাপনা করা হয়েছে। এদিকে রামুসহ পুরো কক্সবাজার জেলার করোনায় আক্রান্ত রোগীদের পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা দিতে পুরোপুরিভাবে প্রস্তুত।

করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের সনাক্ত করার পর রামু হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেয়ার জন্যে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। হাসপাতালে পর্যাপ্ত উপকরণ চলে এসেছে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ, নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে রামুতে ৫০ শয্যার আইসোলেশন ও কোয়েরেন্টাইন ইউনিট স্থাপনা করা হয়েছে। রামুসহ কক্সবাজারে বসবাসরত কেউ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সনাক্ত হলেই, রামু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিশেষ ব্যবস্থায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন উপজেলার ডাক্তার, নার্স নিয়ে গঠন করা হয়েছে মেডিকেল টিম। বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের প্রশিক্ষিত করা হয়েছে। আমাদের পর্যাপ্ত ডাক্তার ও নার্স রয়েছেন এই হাসপাতালে। করোনায় আক্রান্ত রোগীদের জরুরী চিকিৎসায় স্থানান্তরের জন্য পৃথক দুইটি এ্যাম্বুলেন্সও রাখা হয়েছে।

রামু উপজেলায় মোট ২৮ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। উক্ত ২৮ জনের মধ্যে ২০ জনের ইতিমধ্যে ১৪ দিন পূর্ণ হয়েছে। এখন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা প্রকৃত সংখ্যা হলো ৮ জন। আমরা তাদেরকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রেখেছি।

এদিকে রামু উপজেলা স্বাস্থ্য ভবনে প্রস্তুতকৃত ৫০ শয্যার আইসোলেশন ও কোয়েরেন্টাইন ইউনিটে এখনো পর্যন্ত কোনো রোগী ভর্তি হয়নি বলেও তিনি প্রতিবেদকে নিশ্চিত করেছেন।