(ফলোআপ)
মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

২২ নম্বর রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে অর্ধ্বশত কোটি টাকারও বেশী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এই রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পটি টেকনাফ উপজেলার হোয়াক্ষ্যং ইউনিয়নের উনচিপ্রাং চাকমারকুল টি-২ ব্লকে অবস্থিত।

বুধবার ১ এপ্রিল দুপুর ১ টার দিকে ২২ নম্বর ক্যাম্পের একটি সোলার প্যানেলের ব্যাটারী থেকে আগুনের সুত্রপাত হয় বলে ক্যাম্প ইনচার্জ (উপসচিব) সাব্বির ইকবাল প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন। আগুন শুরুতে একটি লার্নিং সেন্টারে লাগে। ভরদুপুরে অত্যাধিক তাপমাত্রায় আগুনের সুত্রপাত হওয়ায় আগুনের লেলিহান শিখা মুহুর্তের মধ্যে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। পাশ্ববর্তী চাকমাপল্লীতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয় চাকমাদের ৫ টি ঘরও ভস্মীভূত হয়। প্রথমে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থাকা অগ্নি নির্বাপন সামগ্রী দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার প্রাণান্ত চেষ্টা করা হয়। প্রায় ২ ঘন্টা পর একইসাথে টেকনাফ ও উখিয়া থেকে ফয়ার সার্ভিসের ২ টি ইউনিট এসে যৌথভাবে চেষ্টা করে বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনে বলে ২২ নম্বর ক্যাম্পের সিআইসি (উপসচিব) সাব্বির ইকবাল সিবিএন-কে জানিয়েছেন।

এ অগ্নিকান্ডে মোট ৩৪ টি স্থাপনা ভস্মীভূত হয়েছে। অগ্নিকান্ডে অর্ধ্বশত কোটি টাকারও বেশী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এখনো ক্ষয়ক্ষতি চূড়ান্তভাবে নিরূপণ করা হয়নি।

ভস্মীভূত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪ টি রোহিঙ্গা সেড পুরোপুরি, ১১ টি রোহিঙ্গা সেড আংশিক পুড়ে যায়। আইপিআর ফ্যাসিলিটিজ পুড়ে যায় ২ টি, কোডেক, মুক্তি ও ব্র্যাকের ২ টি করে মোট ৬ টি লার্নিং সেন্টার, হোস্টের ৩ টি বাড়ি ও ২ টি দোকান, রোহিঙ্গাদের ৩ টি দোকান, ২ টি গরুর গোয়ালঘর সহ আরো ১ টি স্থাপনা সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। এছাড়া আগুন লাগার পর হুড়োহুড়িতে শিশু ও মহিলা সহ ৬ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। অগ্নিকান্ডে সেডবিহীন হয়ে পড়া রোহিঙ্গা শরনার্থীদের মধ্য কিছু শরনার্থীকে অন্যত্র থাকার ব্যবস্থা এবং আর কিছু শরনার্থীকে ত্রিপল দিয়ে সাময়িক ভাবে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক পরিবারকে ১ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। উখিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিহাদ আদনান তাইয়ান ও টেকনাফের ইউএনও মোঃ সাইফুল ইসলাম অগ্নিকান্ডস্থল পরিদর্শন করেছেন।

শরনার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (জ্যেষ্ঠ যুগ্মসচিব) মোঃ মাহবুব আলম তালুকদার অগ্নিকান্ডের ক্ষয়ক্ষতি দেখতে বৃহস্পতিবার ২২ নম্বর রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প পরিদর্শনে যাবেন বলে আরআরআরসি অফিস সুত্রে জানা গেছে। অগ্নিকান্ডের প্রাথমিক বিবরণ ইতিমধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে বলে আরআরআরসি অফিসের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত আরআরআরসি (উপসচিব) মোহাম্মদ সামছু দ্দৌজা সিবিএন-কে জানিয়েছেন।

ছবি সংগৃহিত