মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস জীবাণু সংক্রামণ ঠেকাতে রোহিঙ্গা শরনার্থীদের নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদে যেতে নিরুৎসাহিত করতে ক্যাম্প ইনচার্জদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেহেতু ছোট্ট একটি এরিয়ায় রোহিঙ্গা শরনার্থীদের বসবাস। সেজন্য মসজিদেও বেশী মুসল্লী হয়। অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের নির্দেশনা মতে, গণজমায়েয়েত হওয়ার মতো কোন কাজ চলমান ভয়াবহ পরিস্থিতিতে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এ অবস্থায় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করা কঠিন কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই অভিজ্ঞ ও উচ্চ শিক্ষিত আলেম, ওলামাদের কাছ থেকে শরিয়া সম্মত পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। ওলামা মশায়েখরা রোহিঙ্গা শরনার্থীদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা ও করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে আপাতত মসজিদের চেয়ে নিজ নিজ গৃহে নামাজ দোয়া আদায়ের জন্য ইসলামি শরিয়ার আলোকে মতামত দিয়েছেন। এ অবস্থায় অধিকতর সর্তকতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে রোহিঙ্গা শরনার্থীদের নামাজ আদায়ের জন্য ক্যাম্পের মসজিদে যেতে নিরুৎসাহিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

শরনার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি-জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সচিব) মোঃ মাহবুব আলম তালুকদার ২৬ মার্চ বৃহস্পতিবার সরেজমিনে রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করে এসে সিবিএন-কে এ তথ্য দিয়েছেন।

আরআরআরসি আরো বলেন, আমরা কাউকে মসজিদে না যেতে সরাসরি নিষেধ করছি না। কারণ এটা একটা ধর্মীয় স্পর্শকাতর বিষয়। তাই বর্তমান মহাসংকটকালে করোনা ভাইরাস এর ভয়বহতা বর্ননা করে আপাতত মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায়ের চেয়ে ক্যাম্প নিজ নিজ গৃহে অবস্থান ও সেখানে নামাজ আদায় করাটাকে এ কঠিন পরিস্থিতিতে শ্রেয়তর হিসাবে রোহিঙ্গা শরনার্থীদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করছি।

উখিয়া-টেকনাফের ৩৪ টি রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে প্রায় ১২ লক্ষ রোহিঙ্গা শরনার্থী রয়েছে। তাদের মধ্যে শুধুমাত্র হাজার দু’য়েক শরনার্থী সনাতন ধর্মাবলম্বী রয়েছে। বাকী শরনার্থীরা সকলে ইসলাম ধর্মের অনুসারী। তারা খুব একটা শিক্ষিত না হলেও অত্যন্ত ধর্মভীরু। রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প গুলোতে ২ শতাধিক মসজিদ ও এবাদতখানা রয়েছে।

আরআরআরসি-(জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সচিব) মোঃ মাহবুব আলম তালুকদার আরো বলেন, গত ১৭ মার্চ হতে ক্যাম্পের মক্তব, লার্নিং সেন্টার সহ জমায়েত হতে এরকম কর্মসূচী গুলো সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন স্বাস্থ্যসেবা, খাদ্য সরবরাহ ও জরুরি সেবা ছাড়া রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প গুলোতে অন্য সকল কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গত প্রায় একমাস ধরে সদ্য আসা কোন বিদেশীকে রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে যাওয়ার কোন পাস ইস্যু করা হয়নি বলে আরআরআরসি-(জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সচিব) মোঃ মাহবুব আলম তালুকদার সিবিএন-কে জানান। তাছাড়া করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও অন্যান্য জরুরি নির্দেশনাসমুহ রোহিঙ্গা শরনার্থীদের কঠোরভাবে প্রতিপালনের চলমান ব্যবস্থা আরো জোরদার করা হয়েছে। এজন্য নির্দেশনা সমুহ বার্মিজ ভাষায় অনুবাদ করে রোহিঙ্গা শরনার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। যাতে রোহিঙ্গা শরনার্থীরা নির্দেশনা সমুহ সহজে বুঝে অনায়াসে পালন করতে পারে।