ইমাম খাইর, সিবিএন
একদিন আগেও কক্সবাজার সাগর পাড়সহ পর্যটন কেন্দ্রগুলো লোকে-লোকারণ্য ছিল। দেশবিদেশের পর্যটকে ভরপুর আবাসিক হোটেলগুলো এখন শূণ্য।
হঠাৎ একটি ঘোষণায় বদলে গেল পুরো চিত্র। পর্যটন নগরীতে নেমে আসলো শুনশান নীরবতা। কোথাও নেই কোলাহল।
২৬ মার্চ উপলক্ষে অনেক হোটেলে দেয়া অগ্রিম বুকিং বাতিল করেছে পর্যটকেরা।
রেস্তোরাঁ, ক্যাফে বা অভিজাত খাবার প্রতিষ্ঠানগুলোতেও লোকজন নেই। প্রভাব পড়েছে প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনেও।
বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) বিকালে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, ইনানী সৈকত, হিমছড়ি ঝর্ণা এলাকাসহ বেশ কিছু জায়গায় ঘুরে দেখা গেল, এখানে কোন পর্যটক নেই। বিরাজ করছে নিরবতা। পর্যটক না থাকায় স্থানীয় দোকানগুলো প্রায় বন্ধ। অলস সময় কাটাচ্ছে ব্যবসায়ীরা।
মেরিন ড্রাইভ সড়কের বেশ কয়েকটি স্পটে বসানো হয়েছে যানবাহন তল্লাশি চৌকি। নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা খুব সতর্কতার সাথে কাজ করছে।
বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে হিমছড়ি পর্যটন স্পটের সামনে জেলা পুলিশের একটি টিম দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।

হিমছড়ি পর্যটন স্পটের দৃশ্য। ছবিটি বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে তিনটার।

এ সময় কথা হয় উপ-পরিদর্শক (এসআই) মহিউদ্দিনের সাথে।
তিনি বলেন, পর্যটন স্পটগুলোতে যাতে করে ঢুকতে না পারে সেজন্য যানবাহনে তল্লাশি চালাচ্ছি। এ পর্যন্ত বিদেশি বা দেশের অন্য কোন জায়গার পর্যটক আসে নি। হিমছড়িসহ পর্যটনকেন্দ্রসমূহ বলতে গেলে অনেকটা মানবশূণ্য হয়ে গেছে। কমে গেছে যানবাহনের যাত্রীর পরিমাণ।
কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, করোনা ভাইরাস থেকে জাতিকে মুক্ত রাখতে জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে নিজেরা দায়িত্ব পালন করতেছি।
এদিকে, করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি এড়াতে কক্সবাজারের সকল পর্যটন কেন্দ্র পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) বেলা দুইটার দিকে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন।
তবে, পর্যটন স্পটকেন্দ্রিক আবাসিক হোটেল, রেস্টুরেন্ট, ক্যাফেসহ যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেগুলোর বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয় নি। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা আসতে পারে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
মূলতঃ বুধবার বিকালে করোনা ভাইরাস থেকে আত্মরক্ষায় জনসমাগমে বিধিনিষেধ আরোপের ঘোষণার পর থেকেই জনশূন্য হয়ে যায় কক্সবাজার সমুদ্র পাড়সহ আশপাশের এলাকাগুলো।
দূরপাল্লার বাস যাত্রীশূন্য বললেই চলে। বিমানের সিটও খালি যাচ্ছে।
প্রশাসনের ঘোষণার পর থেকে কক্সবাজারে পর্যটক আগমন ঠেকাতে মোড়ে মোড়ে অবস্থান নেয় পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর। যাত্রীবাহীবাস তল্লাসি করতে চকরিয়ায় বসানো হয়েছে পোস্ট।
বিভিন্ন বাস কাউন্টার ও জনসমাগমের জায়গায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রচারপত্র বিলিসহ সতর্কতামূলক প্রচারণা চালানো হয়।
যে সকল পর্যটক বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে অবস্থান করছিল তারা নিরাপদে গন্তব্যে চলে গেছে।