সিবিএন ডেস্ক:
গর্ভবতী নারী ও অনাগত সন্তানের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পেটের শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ বন্ধে নীতিমালা করতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ও বেআইনি হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

সোমবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। তাকে সহযোগিতা করেন একদল নারী আইনজীবী। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল এম এম জি সরোয়ার পায়েল।

স্বাস্থ্য সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের ছয় সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে গত ২৬ জানুয়ারি পেটের শিশুদের লিঙ্গ পরিচয় জানার উদ্দেশ্যে পরীক্ষা ও লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে রিট করেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান।

গত ১ ডিসেম্বর গর্ভবতী নারী ও অনাগত সন্তানের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পেটের শিশুদের লিঙ্গ পরিচয় জানার উদ্দেশ্যে পরীক্ষা ও লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়।

অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান স্বাস্থ্য সচিব, নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সমাজ কল্যাণ সচিবকে এ নোটিশ পাঠান।

নোটিশে তাদেরকে তিন দিনের মধ্যে সকল সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক, ক্লিনিকের কর্তৃপক্ষকে পেটের শিশুদের লিঙ্গ পরিচয় জানার উদ্দেশ্যে পরীক্ষা ও লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ বন্ধ করতে নির্দেশনা জারি করতে বলা হয়।

আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, আমাদের দেশে এখনো বেশির ভাগ মানুষের ছেলে সন্তানই কাম্য। কারণ তারা মনে করেন, ছেলেরা বংশের ধারক, তারা বেশি শক্তিশালী ও আয় বেশি করে। এমন কি অনেক মহিলাও মনে করে ছেলে সন্তান তাদেরকে ভবিষ্যতে সুরক্ষা দেবে।

এ অবস্থায় যদি পরীক্ষার মাধ্যমে পেটে থাকা সন্তানের লিঙ্গ পরিচয় জানা যায় এবং তা মা-বাবার কাঙ্ক্ষিত না হলে গর্ভবতী মায়ের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার উপর প্রভাব ফেলে। মা যদি হতাশায় ভুগে তবে বাচ্চার ব্রেইনের গঠন/বিকাশ ঠিকভাবে হয় না।

চীন-ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পেটে থাকা সন্তানের লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই বাংলাদেশে নারী ও শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পেটের শিশুদের লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ বন্ধ হওয়া জরুরি।

তিনি বলেন, গর্ভবতী মা ও শিশুর সুস্থতা জানতে তারা যেকোনো পরীক্ষা করতেই পারেন। কিন্তু শুধু পেটে থাকা সন্তান ছেলে না মেয়ে তা জানার উদ্দেশ্যে ডাক্তারি পরীক্ষা বা ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্টে লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ কোন ভাবেই কাম্য নয়।

নোটিশের জবাব না পাওয়ায় এ রিট দায়ের করা হয়।