নিজস্ব প্রতিবেদক:
কক্সবাজার সদরের ঝিলংজায় অবস্থিত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ২০তম বার্ষিক সদস্য সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সদর দফতরে সকাল ৯টায় সমিতির পরিচালক ও সভাপতি রাফাআত মোহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান শুরু হয়। সভায় ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে প্রথমেই সদস্যগণের রেজিস্ট্রেশন ও পারস্পারিক যোগাযোগ, সমিতির সহ-সভাপতি হায়দার আলীর কোরাম নির্ধারণকল্পে সদস্যগণের উপস্থিতি জনিত হিসাব প্রদান, সমিতির সচিব সুরত আলম কর্তৃক বার্ষিক সদস্য বিজ্ঞপ্তি পাঠ, সভাপতির বার্ষিক প্রতিবেদন পাঠ ও নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয় সমিতির এ সভা।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বাপবি) এর চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিন (অব.)-এর বাণী পাঠ করেন নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জসিম উদ্দিন মুন্সী।
শেখ হাসিনার উদ্যোগ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ এ স্লোগান বাস্তবায়নের জেরে কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ২৬৮ জন গ্রাহকের রেজিস্ট্রেশন এবং সর্বোচ্চ সদস্যদের সম্মুখে বার্ষিক প্রতিবেদন পাঠ করেন সমিতির সভাপতি রাফাআত মোহাম্মদ।
প্রতিবেদনে সভাপতি বলেন, ‘পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক নগদ মূল্যে বিদ্যুৎ ক্রয় করে গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে। সমিতির গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিলের অর্থেই বিদ্যুতের ক্রয়মূল্য পরিশোধ ও সমিতির যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ করা হয়ে থাকে। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে কিছু সংখ্যক গ্রাহক নিয়মিতভাবে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেন না। সমিতিরি অগ্রযাত্রা ও গ্রাহক সেবার মান সর্বোচ্চ রাখতে গ্রাহক সদস্যগণকে নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করার জন্য আহ্বান জানান তিনি।’ তিনি আরো বলেন, ‘কিছু সংখ্যক অসাধু ব্যক্তি অবৈধভাবে বিদ্যুৎ চুরি করে ফলে একদিকে গ্রাহক হয়রানীর শিকার হচ্ছে অন্যদিকে সমিতি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এজন্য গ্রাহক সদস্যগণকে ট্রান্সফরমার চুরি রোধকল্পে সজাগ দৃষ্টি রাখার অনুরোধ করছি।’
জেনারেল ম্যানেজার মোঃ আক্তারুজ্জামান লস্কর তাঁর বক্তব্যে গ্রাহকদের অবগতির জন্য বলেন, ‘সমিতি বোর্ড, বাপবি বোর্ড, সমিতির সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহযোগিতা ও নিরলস প্রচেষ্টায় ২০১৮ সালে কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি আইএসও ৯০০১:২০১৫ সনদ অর্জন করেছে। সমিতির জন্মলগ্ন থেকে আমরা যা কিছু অর্জন করেছি তা গ্রাহক সদস্যবৃন্দ, পরিচালকবৃন্দ স্থানীয় প্রশাসন এবং সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যৌথ প্রচেষ্টায় ও পারস্পরিক সহযোগিতা। তিনি আরো বলেন, ‘যারা বৈদ্যুতিক লাইন হতে তার চুরি করে গ্রাহক হয়রানী ও সমিতির আর্থিক ক্ষতি করছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হচ্ছে।’
ভবিষ্যতে গ্রাহক সেবার মান উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অবস্থানকে সুদৃঢ় করতে গ্রাহক সদস্যগণের সহযোগিতা কামনা করে তাদের যে কোন সমস্যা তাৎক্ষনিক সমাধানের আশ্বাস দিয়ে স্বল্পতম সময়ে সমিতির সংশ্লিষ্ট এলাকায় গ্রাহকের চাহিদা মতো বিদ্যুৎ সরবরাহের আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন জেলার উখিয়া, রামু, চকরিয়া শতভাগ বিদ্যুতায়নের অপেক্ষায় আছে। আগামী জুন মাসে মহেশখালী উপজেলাসহ সকল উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের পরিকল্পনা চলছে।
সমিতির কোষাধ্যক্ষ ঞোমা ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরের আর্থিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। সমিতির ৩ ও ৬ নং জোনে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ৬ নং জোনে বৈধ প্রার্থী না পাওয়ায় পদ শূন্য রেখে ৩ নং জোনে আমজাদ হোসেন ছোটনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।
এদিকে পুরস্কার বিতরণ পর্বে জেলার সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী হিসেবে ঘোষণা ও পুরস্কার প্রদান করা হয় নুরুল আজিজ এবং টেকনাফ টিএসপি ফিশারীজ লিমিটেড’কে। নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করার রেকর্ড করে পুরস্কার পান আবুল কাশেম, সাবেকুন্নাহার, আলী আহমদ, জাহাঙ্গীর আলম, মর্জিনা আক্তার, আলী হোসেন এবং লটারীতে প্রথম বিজয়ী হয়ে রঙিন টেলিভিশন জিতেন দক্ষিণ মিঠাছড়ির গ্রাহক মনির আহমদ ও দ্বিতীয় বিজয়ী হয়ে অ্যানড্রয়েড ফোন জিতেন একই এলাকার আব্দুল করিম। এছাড়াও অন্যান্য গ্রাহকরা মূল্যবান পুরস্কার জিতেন।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন -মহিলা পরিচালক ছিদ্দিকা খান মরুয়া, হাসিনা মোর্শেদ, সহকারী প্রকৌশলী জাহেদ উদ্দিন, মিল্টন ঘোষ, ডিজিএম মোসাদ্দেকুর রহমান, কাজী এমদাদুল হক, প্রকৌশলী গোলাম সরওয়ার মোর্শেদ, আব্দুল মুমিত চৌং, মোঃ মোশাররফ হোসেন, এজিএম শ্যামল কুমার মল্লিক, মোঃ মোশারফ হোসেন খন্দকার, শহিদুল আলম, ইলেকট্রন মিত্র, জাবেদ হোসেন, আমিনুর রসুল, দীপন চৌং, উদয়ন দাশ গুপ্ত প্রমুখ, আল আমিন প্রমুখ।
কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ২০তম বার্ষিক সদস্য সভা
পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে
![](https://www.coxsbazarnews.com/wp-content/uploads/2020/01/IMG-20200130-WA0022.jpg)