বিশেষ প্রতিবেদক

কক্সবাজার সদর উপজেলার বৃহত্তর ঈদগাঁও’র সাড়ে পাঁচ হাজার একর ফসলী জমিতে পানি সরবরাহ বন্ধ রেখেছে স্কীম ম্যানেজারগন ও রাবার ড্যাম কমিটি। ইট ভাটা মালিকদেরকে ফসলি জমি থেকে টপ সয়েল কাটার সুযোগ দিতে রাবার ড্যাম প্রকল্প থেকে পানি সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। এতে আসন্ন বুরো মৌসূমে বীজতলা তৈরী করতে পারছেনা চাষীরা। ফলে উপরোক্ত সব জমিতে জমিতে কৃষি উৎপাদন পিছিয়ে যাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।

প্রাপ্ত তথ্যে প্রকাশ, ঈদগাঁও নদীতে স্হাপিত দুইটি রাবারড্যাম থেকে শুস্ক মৌসূমে বৃহত্তর ঈদগাঁওর সাত ইউনিয়নের ফসলী জমিতে পানি সরবরাহ করা হয়। এতদএলাকার প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার একর ধানক্ষেত ও কয়েকশ একর সবজিক্ষেতে এ পানি দিয়ে চাষ করা হয়।

কৃষকরা জানান, দেড় মাসেরও বেশী সময় আগে বিগত অগ্রাহায়ন মাসে আমন ধান কেটে নেয়ার পর থেকে এখানকার শষ্যভান্ডার খ্যাত বিশাল বিলগুলো খালি পড়ে আছে। জালালাবাদের ধৎকা বিল, পোকখালীর তেইক্কা বিল, চৌফলদন্ডী বিল, ইসলামাবাদ বিল ও আরো অন্যান্য বিলের উর্বর ফসলী জমিতে আসন্ন বুরো মৌসূমের জন্য এখনো পানি সরবরাহ করা হয়নি। এর ফলে চরম বিপাকে পড়েছে বৃহত্তর ঈদগাঁও’র ৭ ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে ৫ হাজার একর ফসলি জমি, কৃষক ও কৃষিখাত। আসন্ন বুরোধান মৌসুমের জন্য বীজতলা তৈরীর সময় অতিবাহিত হয়ে গেলেও পানির অভাবে বীজতলা তৈরি করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।

একই সাথে রামুর ঈদগড় থেকে সদরের পোকখালী পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটারব্যাপী ঈদগাঁও নদীর চরে চাষকৃত শত শত একর সবজিক্ষেতও এখন সেচের পানি সংকটে পড়েছে।

সদরের ঈদগাঁও, জালালাবাদ, পোকখালী, ইসলামাবাদ, ভারুয়াখালী, চৌফলদন্ডী ও ইসলামপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন বিলে বিগত আমনধান মৌসুমের ধান কাটার পর আপাতত খালি হওয়া ধানক্ষেত থেকে টপসয়েল কাটার সুযোগ করে দেয়ার জন্য ইটভাঁটা মালিকদের সাথে রাবার ড্যাম কর্তৃপক্ষ, স্কিম ম্যানেজার ও সংশ্লিষ্টদের গোপন আতাঁতের অভিযোগ তুলেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চাষীরা।

কৃষকরা জানান, ধানক্ষেতে পানি প্রবাহের জন্য একমাস আগে রাবার ড্যাম ফুলানো হলেও এখনো নালাকাটার কাজ সম্পন্ন করেনি স্কীম কর্তৃপক্ষ। রহস্যজনক করনে রাবার ড্যাম থেকেও পানি ছাড়া হচ্ছে না বলে জানা গেছে। এ সুযোগে বৃহত্তর ঈদগাঁও’র বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত ৮টি ব্রিকফিল্ডে এখন ফসলীজমি থেকে রাত দিন টপসয়েল কেটে নিচ্ছে ইট ভাটা মালিকরা।

গতকাল সরেজমিন দেখা যায় জালালাবাদ ধৎকা বিলের বিভিন্ন পয়েন্টে ডজনখানেক শক্তিশালী এক্সেভেটর দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। ফসলী জমিতে পানি উঠলে এই মাটিকাটা সম্ভব হবেনা।
তাই বিভিন্ন কলাকৌশল ও মোটা অঙ্কের টাকায় চারদিক ম্যানেজ করে রাবার ড্যামের পানি বন্ধ করে রাখা হয়েছে। আর এতে চরম বিপদে পড়েছে ৭/৮ ইউনিয়নের সাড়ে পাঁচ হাজার একরের কৃষিখাত। এখনই বুরো চাষ শুরু করা না গেলে পরবর্তীতে চৈত্র-বৈশাখ মাসে সেচ সংকট হতে পারে। এতে আগামীতে বৃহত্তর ঈদগাঁও এলাকায় ব্যাপক খাদ্য ঘাটতি দেখা দেওয়ার আশংকা রয়েছে।
ঈদগাঁও রাবার ড্যাম ব্যবস্থাপনা সমিতির সভাপতি শাহনেওয়াজ মিন্টুর ফোনে সংযোগ না পাওয়ায় উপরোক্ত ব্যাপারে বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।