ফেসবুক থেকে –

( বিষয়টি যেহেতু অত্যন্ত মানবিক , জীবন মৃত্যুর প্রশ্ন । যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকষর্ণের জন্য বিষয়টি এখানে প্রকাশ করা হল। -কক্সবাজার নিউজ)

অধ্যাপক হুমায়ুন ও একটি পাসপোর্ট এর পোষ্টমর্টেম…

বিকাল তিনটা ০১৮৪০২৯৬৭৬৮ মোবাইল নং থেকে আমার ব্যাক্তিগত নম্বরে কল, যথারীতি রিসিভ করলাম। কণ্ঠ পরিচিত তবে তৎক্ষনাত চিনতে পা পারলেও আমার পেশাগত পরামর্শ চাইলে- যতটুকু সম্ভব পরামর্শ দিলাম। মনে মনে হুমায়ন ভাই এর কথা স্বরণ হওয়ায় আর কথা না বাড়িয়ে এখন কোথায় আছেন জানতে চাইলে, উনি বলেন- সদর হাসপাতালে ৫০৫ নং কেবিনে ভর্তি আছেন। আই, সি, ইউ থেকে আজকে কেবিনে হস্তান্তর হয়েছেন।
উল্লেখ্য যে গত ২০/২৫ দিন কে আগে কেউ একজন এফবি তে ওনার মৃত্যুর খবর স্টেটাস দিয়েছিলেন। অসুস্থতার বিষয়ে আগে জানা ছিল বিধায়- আমিও সঠিক মনে করেছিলাম। বিষয়টি ওনার ফ্যামেলীও অবগত আছে।
বৃহত্তর ঈদগাঁও জালালাবাদ ইউনিয়নের দক্ষিণ লরাবাগ এর কৃতি সন্তান অধ্যাপক হুমায়ন কবির হেলালী। ডুলাহাজারা কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের একজন অধ্যাপক। প্রায় ছয় মাসে আগে হঠাৎ শারীরিক অসুস্থতায় ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে জানতে পারেন অগ্নাশয়ে একটি টিউমার ধরা পড়ে। সুঠাম দেহের মানুষটি দিন দিন স্বাস্থ্য খারাপ হতে থাকে। কোন উপায় না দেখে উন্নত চিকিৎসার আশায় ভারতের ভেলোরে ডাক্তারের চিকিৎসা করতে যান এবং ডাক্তার অপারেশন করতে হবে বলে পরামর্শ দেন। শরীরের প্রেসার এবং ডায়বেটিস এর অবস্থা খারাপ থাকায় ডাক্তার অপারেশন এর ঝুকি না নিয়ে তিন মাসের ট্রিটমেন্ট দেন এবং তিন মাস পরে ফিমেল এটেনডেন্ট সহ হাসপাতালে পুনরায় এ্যাপয়মেন্ট দেন।
ভেলোরে ডাক্তারের পরামর্শ অনুসারে- স্ত্রীর পাসপোর্ট না থাকায় গত ৩ অক্টোবর ব্যাংকে ৬৯০০ টাকা জমা প্রদান করে জরুরী ভিত্তিতে পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করেন। পাসপোর্ট ডেলিভারী স্লিপে সম্ভাব্য ১৪ অক্টোবর ডেলিভারী পাওয়ার কথা ছিল । কিন্তু আজ অবদি পাসপোর্ট আর পাওয়া গেল না। অফিসে বার বার যোগাযোগ করলে- জানান হেড অফিস প্রিন্টিং সেকশনে আছে। কখন পাব জানতে চাইলে- কোন সদুত্তর দিতে দেয়নি। আজ ১০০ দিন হল, পাসপোর্ট আর পাওয়া যায়না। এদিকে আবেদনকারীর প্রাণপ্রিয় স্বামী হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। যথা সময়ে পাসপোর্ট না পাওয়ার আর ভারতে উন্নত চিকিৎসা করেতে যেতে পারেন নি।
কাউকে দোষারূপ করার যোগ্যতা আমার নাই। চোখের সামনে ঘটে যাওয়া কিছু ব্যাতিক্রম দেখলে নিজের খুবই খারাপ লাগে তাই সবার সাথে শেয়ার করা।
বিঃদ্রঃ পাসপোর্ট যথা সময়ে না পাওয়ার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার প্রয়োজন মনে করিনি। কারণ পেশা আমার সাংবাদিকতা নয়।

ধন্যবাদ সবাইকে

জানে আলম
তাজ কর্পোরেশন
লালদিঘীর পাড়, কক্সবাজার।