কামাল হোসেন, রামু :
রামু উপজেলার বাইপাস মোড়ে স্থাপিত এশিয়ার বৃহত্তর ফুটবল ভাস্কর্যটি বিলবোর্ড, ব্যানার,ফেস্টুনে ঢেকে গেছে।হারিয়ে যাচ্ছে তার আপন সুন্দর্য। সাহিত্য সাংস্কৃতিক খেলাধুলার ক্ষেত্রে রামুর ঐতিহ্য রয়েছে দেশজুড়ে । ফুটবল খেলাটা দীর্ঘ প্রাচীন কাল থেকে রামুতে এক ঐতিহ্য বহন করে আসছে। সেই সুবাধে স্থানীয় সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল এই ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য রামুর বাইপাস মোড়ে নিজস্ব বরাদ্দ থেকে একটি বিশাল আকৃতির দৃষ্টিনন্দন ফুটবল ভাষ্কর্যটি তৈরীর উদ্যোগ নেন। বর্তমানে এই ভাষ্কর্যটি আবর্জনায় ঢেকে রেখেছে কিছু নোংরা মন মানসিকতার মানুষ। রামু উপজেলার অতি সন্নিকটে এই ভাষ্কর্যের অবস্থান।তাই প্রশাসনেরও কিছু দায়িত্ব থাকে বলে মনে করেন অনেকে।

রামু সরকারি কলেজের ছাত্র কফিল উদ্দিন জানান, রামু বাইপাস মোড়ে স্থাপন করা হয়েছে দক্ষিন এশিয়ার বৃহত্তর ফুটবল ভাষ্কর্য।এটি পর্যটকদের নজর কাটতে সক্ষম হয়েছে।বর্তমানে এই ভাষ্কর্যটি বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুনে ঢেকে গেছে। হারিয়ে পেলেছে তার আপন সুন্দর্য। আমাদের দাবি অতিদ্রুত ফুটবল ভাষ্কর্য থেকে এই সব আবর্জনা সরিয়ে এর সৌন্দর্য ফিরিয়ে অানা হোক।

রামু বাকখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের নির্বাহী পরিচালক কিশোর বড়ুয়া বলেন, ফুটবল ভাষ্কর্যটি রামু তথা বাংলাদেশের জন্য এক ঐতিহাসিক নিদর্শন।এটি রামুবাসির সংস্কৃতিক মননের পরিচয় বহন করে। স্থানীয় সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এটি নির্মিত হয়েছে।দেশ-বিদেশী পর্যটকরা এটি দেখে মুগ্ধ হয়।বর্তমান সময়ে ভাষ্কর্যটি অবহেলা,অবজ্ঞা, অনাদর ও অপসংস্কৃতির কারনে নানান রকম বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুনে ঢেকে গেছে। যার কারনে পর্যটকগন এর সৌন্দর্য দর্শন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে আমরা নিজে সচেতন হই।আপরকে সচেতন করি।

চট্টগ্রাম একাডেমীর পরিচালক অধ্যাপক সুপ্রতিম বড়ুয়া বলেন, রামুর ফুটবল ভাষ্কর্যটি এলাকার ঐতিহ্য বহনের পাশাপাশি এটি একটি নান্দনিক নিদর্শনও বটে। এই সৌন্দর্য ধরে রাখার দায়িত্বটাও স্থানীয় সকলের। কিন্তু ইদানিং এর চারপাশ যেন অযাচিত বেষ্টনীতে ভরে গিয়ে এর নান্দনিকতা যেন বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুনে এই নান্দনিক ফুটবলটা যেন ঘোমটা পরে আছে। স্থানীয় প্রশাসন যদি এ ব্যাপারে তড়িৎ ব্যবস্থা না নিয়ে থাকে তাহলে অচিরেই এই ফুটবল ভাষ্কর্যটি তার নিজস্ব সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলবে। রামুর ফুটবলের যে ঐতিহ্য এই বিশাল আকৃতির ফুটবলের ভাষ্কর্য বহন করছে তা দিন দিন পরিচর্যার অভাবে বিলিন হয়ে যাবে। আমরা চাই এই ফুটবল ভাষ্কর্যটির সঠিক পরিচর্যায় আরো নান্দনিক আকার ধারণ করুক।

রামুর কৃতিসন্তান বাফুপের সদস্য ও বাংলাদেশ স্কুল ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার বিজন বড়ুয়া বলেন,রামুর ফুটবল ভাষ্কর্যটি বিশ্বজুড়ে পরিচিতি লাভ করেছে।এর সুন্দর্য রক্ষা আমাদের সকলের দায়িত্ব।এই ভাষ্কর্যের বর্তমান অবস্থা খুবই লজ্জা জনক। সবার আগে দরকার আমাদের নিজেদের মধ্যে সচেতনতা। এমপি সাহেবের সাথে এ নিয়ে আমার কথা হয়েছে।ভাষ্কর্যের অল্প কিছু কাজ বাকি থাকাতে এর উদ্বোধন বিলম্ব হচ্ছে।উদ্বোধন হয়ে গেলে এর আশপাশে বিলবোর্ড ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রণয় চাকমা বলেন, উপজেলা প্রশাসন, রামু এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।