মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোহা. শাজাহান আলি বলেছেন, ভিক্ষাবৃত্তি মারাত্মক অসম্মানজনক পেশা। ভিক্ষুকেরা পরিবার-সমাজ ও দেশের সম্মান নষ্ট করছে। এর অবসান হওয়া উচিত। তাই সরকার ভিক্ষুকমুক্ত দেশ গড়ার প্রয়াসে তাদের পূর্বাসানের মহৎ কাজ শুরু করেছে। এলক্ষ্যে কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলাকে ভিক্ষুকমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

উখিয়া উপজেলাকে ভিক্ষুকমুক্ত করণের লক্ষ্যে প্রকৃত ভিক্ষুক যাচাই-বাছাই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোহা. শাজাহান আলি একথা বলেন। উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) প্রকৌশলী মোঃ নিকারুজ্জামান চৌধুরী রবিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ যাচাই-বাছাই কার্যক্রমে আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রাসেল চৌধুরী, উপজেলা শিক্ষা অফিসার সুব্রত কুমার ধর, একাডেমিক সুপারভাইজার বদরুল আলম ও উখিয়ার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশগণ। এরপর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোহা. শাজাহান আলি প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে ভিক্ষুকদের মাঝে শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করেন।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ভিক্ষুকমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এতে উপজেলার সব ইউনিয়নের ভিক্ষুককের একটি তালিকা করা হয়েছে। বুধবার ২৫ ডিসেম্বর সকাল থেকে উখিয়া উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে প্রকাশ্যে সেই তালিকা যাচাই-বাচাই শেষ করেছে উখিয়া উপজেলা প্রশাসন।

উখিয়া উপজেলার ইউএনও প্রকৌশলী মোঃ নিকারুজ্জামান চৌধুরী রবিনে বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশনা পাওয়ার পর জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় ভিক্ষুকদের সনাক্ত করে প্রাথমিক একটি তালিকা তৈরী করা হয়েছিলো। সেটি যাচাই-বাচাই শেষে তাদের দর্জির কাজসহ বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যাতে তারা স্বনির্ভর হতে নিজেরাই কাজ করে উপার্জন করতে পারেন। চাহিদা অনুযায়ী কাউকে সেলাই মেশিন, কাউকে হাস-মুরগি কিনে দেওয়াসহ মুদি দোকান করে দেওয়া হবে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, অসহায় মানুষ যেমন পেটের দায়ে ভিক্ষা করে, তেমনি একটি স্বার্থান্বেষী মহল বিভিন্ন কায়দা-কানুন করে ভিক্ষাবৃত্তিকে নিজেদের জন্য লাভজনক বৃত্তিতে পরিণত করেছে।ভিক্ষুকেরা মারাত্মকভাবে অপব্যবহৃত হচ্ছে। সব ধরনের শারীরিক সুস্থতা থাকা সত্ত্বেও শুধু পরিশ্রম করার মানসিকতার অভাবে ভিক্ষাবৃত্তির আশ্রয় নেয়, এমন ভিক্ষুকও আছে। তাছাড়া, আমাদের দেশে যাঁরা মুক্ত হস্তে দান-দক্ষিণা করেন ও ভিক্ষা দেন, তাঁরা সচেতন হলেই ভিক্ষাবৃত্তির প্রকোপ অনেকটা হ্রাস করা সম্ভব।

এবিষয়ে উখিয়া উপজেলা প্রশাসন সিবিএন-কে জানান, ভিক্ষুক মুক্ত দেশ গড়তে সরকার তাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছে। তারই সুত্রে ধরেই গত কয়েকদিন আগে একটি বৈঠকের মাধ্যামে জনপ্রতিনিধিদের স্বস্ব এলাকার ভিক্ষুককের তালিকা দিতে বলা হয়। তালিকা হাতে পাওয়ায় সেটি বাস্তাবায়নের লক্ষ্যে দ্রুত গতিতে উখিয়া উপজেলায় কাজ চলছে। ইতিমধ্যে এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়নের তৈরী করা ভিক্ষুককের তালিকা যাচাই-বাচাই করা হয়েছে। যাতে প্রকৃত ভিক্ষুকদের পুনর্বাসন করতে সহজ হয়। যার যার সামর্থ অনুসারে সরকার তাদের দোকান ঘর, ছাগল, হাঁস, মুরগি, দর্জি কাজ ও ব্যবসায়িক উপকরণ বিতরণ করবেন।