সিবিএন ডেস্ক:
আগামীকাল শুরু হচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ২১তম ত্রি-বার্ষিক জাতীয় সম্মেলন। ঢাকার শাহবাগে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। বহুল প্রতিক্ষিত এ সম্মেলন ঘিরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সাজানো হয়েছে অপরূপ সাজে। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিয়মমাফিক সম্মেলন শেষে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ দলের নেতৃত্ব নির্বাচিত হবেন।

বরাবরের মতো এবারও শেখ হাসিনাকে দলের সভাপতি পদে অপরিহার্য ধরে তার নেতৃত্বে পরবর্তী তিন বছরের জন্য নতুন একটি কমিটি গঠনের লক্ষ্যে সম্মেলনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ক্ষমতাসীন দলটি। সম্মেলনকে ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের লাখ লাখ নেতাকর্মী। এবারের সম্মেলনের স্লোগান- ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে গড়তে সোনার দেশ, এগিয়ে চলেছি দুর্বার, আমরাই তো বাংলাদেশ।’

জাতীয় সম্মেলনের আগে গতকাল গণভবনে বর্তমান কেন্দ্রীয় শেষ কার্যনির্বাহী সংসদের সভা অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর জাতীয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

এদিকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ থেকে পালিত হবে মুজিববর্ষ। এর আগে ১০ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে মুজিববর্ষের কাউন্টডাউন। মুজিববর্ষকে সামনে রেখে ২১তম সম্মেলন শেষে নেতৃত্বে কারা আসছেন তা নিয়ে সবার মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা, আলোচনা চলছে।

গতকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘুরে দেখা গেছে, উত্তর-দক্ষিণমুখী করে সাজানো হয়েছে মূল মঞ্চটি। এটি নির্মিত হয়েছে দলীয় নির্বাচনী প্রতীক নৌকার আদলে। পদ্মার বুকে ৪০টি স্প্যানের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা স্বপ্নের পদ্মা সেতু। তার নিচে জলরাশিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে ছোট ছোট নৌকা। একটি ছোট জাহাজও রয়েছে। আর একপাশে চর ও কাশবন দেখা যাচ্ছে। পদ্মা সেতুর ওপর বিশালাকৃতির দলীয় প্রতীক নৌকা। জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রতিকৃতি ধারণ করেছে নৌকাটি। তারই মাঝে বড় করে লেখা- ২১তম জাতীয় সম্মেলন ২০১৯।

মূল মঞ্চটি ১০২ ফুট দীর্ঘ, ৪০ ফুট প্রশস্ত। নৌকার পালগুলোতে থাকছে দলীয় প্রতীক ও দলীয় নেতাদের মুখচ্ছবি। মূল মঞ্চের পেছনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনার ছবি ছাড়াও ঠাঁই পেয়েছে জাতীয় চার নেতা- তাজউদ্দীন আহমেদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন এম এ মনসুর আলী এবং এএইচ এম কামারুজ্জামানের ছবি। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে অন্যতম চার নেতা- মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, শামসুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশের ছবি রাখা হয়েছে সেখানে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন গেট দিয়ে প্রবেশ করতেই একদিকে চোখে পড়বে বঙ্গবন্ধুর বিশাল আকারের ছবি। আরেক দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি।

উদ্যানের লেকের পাড়ে দেশের প্রাচীনতম দলটির ইতিহাস ও ঐতিহ্য চিত্র প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হয়েছে। এখানে শেখানো হয়েছে ১৯৪৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নানা সাফল্য ও চড়াই-উতরাইয়ের খবর চিত্র। এ ছাড়া উদ্যানের ভেতর বেশ কিছু স্থানে বিশাল আকারের নৌকা সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এছাড়াও থাকবে বিএনপি-জামায়াত জোটের আগুন সন্ত্রাস ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ বিভিন্ন নেতিবাচক রাজনীতির চিত্রায়ন।

আয়োজনে জড়িতদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ দুপুরের আগেই সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন ব্যাপক জাঁকজমকভাবে অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনে সারা দেশ থেকে সাড়ে সাত হাজার কাউন্সিলর, পনেরো হাজার ডেলিগেটসহ ৫০ হাজার নেতাকর্মীর সমাগম হবে। তাদের প্রত্যেকের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপ-কমিটির দায়িত্বে থাকা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘এবারের প্যান্ডেলটি অনেক বড়। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে এত বড় প্যান্ডেলে আর কোনো সম্মেলন আয়োজন হয়নি।’