ঈদগাঁও প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের ঈদগাঁওতে অপ্রাপ্ত দুই মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে আবুল কাসেম (৪২)নামের কেজি ও নুরানী মাদ্রাসার এক প্রধান শিক্ষককে জনতার সহায়তায় আটক করেছে ঈদগাঁও পুলিশ। ১০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে কথিত প্রধান শিক্ষক কাসেমকে কর্মস্থল থেকে ধৃত করা হয় । ঘটনাটি ঘটেছে ইউনিয়নের পূর্ব ভুতিয়া পাড়া মাছুয়াখালী মোহাম্মদীয়া কে.কি.নূরানী মাদ্রাসার দক্ষিণ পাশে পরিত্যক্ত ক্লাস রুমে।

আটককৃত আবুল কাসেম ঈদগাঁও ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মাছুয়া খালী মুরা পাড়া মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে এবং মোহাম্মদীয়া কে.জি. নুরানি মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক।

এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। লম্পট চরিত্রহীন ভন্ড প্রধান শিক্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিচ্ছিত করতে জোর দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী। সংগঠিত ঘটনায় এক ভিকটিমের পিতা বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৮ ডিসেম্বর রবিবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে পরীক্ষা চলাকালীন ২য় শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ( সঙ্গত কারনে ভিকটিমদের পরিচয় গোপন রাখা হল) ফুসলাইয়া মাদ্রাসার পরিত্যক্ত কক্ষে নিয়ে গিয়ে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে ২য় শ্রেণীর এক ছাত্রীকে জোরপূর্বক যৌন নিপীড়ন চালায়। এ সময় যৌন কামনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে স্পর্শ করে। অনুরূপ ভাবে পরদিন ৯ ডিসেম্বর সোমবার ৩য় শ্রেণীর আরো একজন ছাত্রীকে একই কায়দায় যৌন নিপীড়ন করে। প্রথম যৌন হয়রানির শিকার ছাত্রী পরদিন ঘটনার বিস্তারিত মা’কে জানালে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তি ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটিকে অবগত করেন। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হলে বেরিয়ে আসে আরো একজন ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের বিষয়টি। পরে উভয়ের পরিবার মাদ্রাসার সভাপতি মিজানুর রহমানকে পুনরায় অবগত করেন। সভাপতি নিজেই স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের ডেকে ভিকটিম দ্বয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। সে সময় তারা ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেলে ঘটনার সত্যতা পান তারা , তাছাড়া একজনকে একাধিকবার যৌন নিপীড়ন চালায় বলেও স্বীকার করেন একজন ভিকটিম। তাদের স্বীকারোক্তি পেয়ে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে মাদ্রাসায় যান সভাপতি। সেখানে আলাদা কক্ষে বসে নরপশু লম্পট চরিত্রহীন ভন্ড প্রধান শিক্ষক আবুল কাসেমের স্বীকারোক্তি নেন। তিনি ঘটনার বিস্তারিত স্বীকার করলে উপস্থিত স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধ হয়ে তাকে গনপিটুনী দেওয়ার চেষ্টা করে। তাৎক্ষণিক সংবাদ পেয়ে ঈদগাঁও তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মোঃ আসাদুজ্জামানের নির্দেশে এসআই সনজিত চন্দ্র নাথসহ একদল সঙ্গীয় পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছে জনতার রোষানল থেকে উদ্ধার করে তদন্ত কেন্দ্রে নিয়ে আসে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ভিকটিমদের পক্ষে একজনের বাবা বাদী হয়ে মামলার এজাহার প্রস্তুত করেছে।

ইনচার্জ মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, নারী লোভী, লম্পট চরিত্রহীন কথিত প্রধান শিক্ষক আবুল কাসেমকে আটক করা হয়েছে। মামলা করার জন্য সদর মডেল থানায় পাঠানো হয়েছে ভিকটিমদের পক্ষে অপর এক জনের বাবাকে।সে সাথে একমাত্র আসামী আবুল কাসেমকেও আদালতে সোপর্দ করার প্রক্রিয়া চলছে।