মো: ছফওয়ানুল করিম, পেকুয়া:
এ যেন গাছের সাথেই শত্রুতা! রাতের আঁধারেই শতাধিক গাছ কেটে সাবাড় করে দিয়েছে একদল দুর্বৃত্ত। সবুজ চাঁদরে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা গাছগুলোর গতকালের দৃশ্য আর অমানিশার রাত পেরিয়ে ভোর হতেই দেখা যায় ভিন্ন এক দৃশ্য। শতাধিক সবুজ গাছ মাথা নুয়ে যেন অশ্রু ঝরাচ্ছে অঝর ধারায়।
রবিবার (১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে ঘটনাটি ঘটে পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ব মেহেরনামা বাঘগুজারা এলাকায়। গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় সমাজসেবক কামাল হোছাইন তার মালিকানাধীন একটি জমিতে ৫ বছর আগে প্রায় ৫ শতাধিক গাছ লাগিয়ে সেগুলোকে যতœ-পরিচর্যা করে অনেক বড় করে তোলেন এবং পুরো এলাকায় একটি অভূতপূর্ব সবুজের সমারোহ তৈরী হয়। কিন্তু ঘটনার রাতে অজ্ঞাত দুবৃত্তরা তার যতেœ বড় করা শতাধিক গাছ কেটে সাবাড় করে দেয়।
সমাজসেবক কামাল হোছাইন সাংবাদিকদের বলেন, “রাতের আধাঁরে এভাবে গাছ কেটে দেয়া বড় ধরনের অপরাধ। এসব গাছ আমি নদীর ভাঙন থেকে সড়ককে রক্ষা করতে লাগিয়েছিলাম। অনেক যতেœ গাছগুলো বড় করেছি। এসব গাছেরতো প্রাণ আছে। কিন্তু গাছের সাথে তাদের কিসের শত্রুতা আমি বুঝে উঠতে পারছিনা।” তিনি মনে করেন, সরকার যেখানে উপকুলে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলার কাজ করছেন সেখানে রাতের আধাঁরে সবুজ বেষ্টনী কেটে উজাড় করা বড় ধরনের একটি অপরাধ। তিনি এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
স্থানীয় আহসান, সাব্বির, লোকমান সহ আরো অনেকে জানান, “গাছ মানুষের উপকার ছাড়া কখনো ক্ষতি করেনা। তাছাড়া কামাল হোছাইন নিজের জায়গার মধ্যে সড়ক রক্ষা ও সবুজায়নের জন্য ৫ বছর আগে গাছগুলো রোপন করেছিলেন। তারপরও এ সবুজ গাছগুলোর সাথে কিসের শত্রুতা আমাদের জানানেই।” রাতের আঁধারে একদল দুবৃত্ত গাছগুলো কেটে সাবাড় করে দেন বলে জানান তারা। তবে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দুবৃত্তদের খোঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দিলে এ ন্যক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে বলে আশংকা প্রকাশ করেন তারা।
এ বিষয়ে পেকুয়া উপজেলা পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি এডভোকেট মীর মোশাররফ হোসেন টিটুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “বাংলাদেশের আকাশে ভারী ধাতু বৃদ্ধির কারণে যেখানে পরিবেশবিদরা দেশের ভবিষ্যত নিয়ে শংকায় দিন কাটাচ্ছেন ঠিক সে সময়ে পেকুয়া সদরে রাতের আঁধারে শতাধিক গাছ কেটে দেয়ার ঘটনায় পরিবেশের কী পরিমাণ যে ক্ষতি হয়েছে তার বর্ণণা দেয়া কঠিন।”
এ বিষয়ে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাঈকা শাহাদাতের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।