মোহাম্মদ ফারুক:

শীতের শুরুতে জেলার বিভিন্ন স্থানে ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ইতিমধ্যে জেলাসহ উপজেলার বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীর ভিড় বেড়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধই বেশি।

শীতকালীন সময়ে সব বয়সী মানুষের মাঝে বিভিন্ন ধরনের রোগব্যাধি দেখা দেয়। এর মধ্যে সর্দি-কাশি,নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, হাঁপানি, টনসিলাটাইসিস, সাইনোসাইটিস অন্যতম। তবে শিশু ও বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে এ রোগের প্রবণতা দেখা দেয় বেশি, আর ঝুঁকিও রয়েছে তাদের।

কোনো শিশু আবার আক্রান্ত হচ্ছে ডায়রিয়ায়। মৌসুমি এসব রোগ শিশু আর বৃদ্ধদের বেশি হয়। শীতের শুরুতেই ঠান্ডাসহ বিভিন্ন ধরনের ভাইরাসের কারণেই বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে এবং অভিভাবক ও চিকিৎসকের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে জ¦র, হাঁপানি, ডাুয়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১৫ দিন বয়সের শিশু থেকে শুরু করে প্রায় বৃদ্ধসহ শত শত রোগি চিকিৎসারত আছেন।

কর্তব্যরত নার্সরা জানান, শীতের শুরু থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ২০-২৫ জন করে শুধু শিশু ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। এছাড়াও হাসপাতাল ছাড়াও শহরের বেসরকারী ক্লিনিকগুলোতে ভর্তি করানো হচ্ছে।

সদর হাসপাতালের ৩য় তলায় শিশু ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে নির্দিষ্ট সীটের তুলনায় অধিক রোগী বৃদ্ধি রয়েছে। রোগীদের সীট দিতে না পারায় একটি সীটে ২জন করে রোগী রেখেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষরা। এতে শিশু ওয়ার্ডে ৪১ জন শিশুই ছিল ঠান্ডা ও নিউমোনিয়া জনিত রোগে আক্রান্ত। ডায়েরিয়া ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায় ৪৫ জন শিশু ওই ওয়ার্ডে ভর্তি আছে। বৃদ্ধ রোগী আছে ৭ জন,

সদর হাসপাতালে শিশুকন্যাকে নিয়ে ভর্তি আছেন ঝিলংজা থেকে আসা হাসিনা। তিনি জানান, তিন মাস বয়সী তারঁ শিশুকন্যার ৪ দিন আগে প্রচন্ড শ^াসকষ্ট বেড়ে যাওয়ার কারণে সদর হাসপাতালে তিনি শিশুটিকে নিয়ে আসেন। এখন মোটামুটি সুস্থ।

কক্সবাজারের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আশীষ কুমার দে জানান, শীতকালীন সময়ে ঠান্ডাজনিত সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া, ডায়েরিয়া, এলার্জির প্রকোপ বাড়ে। শীতের কারণে বিভিন্ন রোগ দেখা দিতে পারে। তার মধ্যে শ্বাসকষ্টও চামড়ার রোগও বেড়ে যায়। বিশেষ করে বাচ্চাদের মধ্যে ডায়রিয়া দেখা দেয়। ডায়রিয়া হয় ভাইরাসের কারণে।

তিনি আরো বলেন, এই সময়ে খুব বেশি পরিস্কার পরিচন্ন থাকা দরকার। বিশেষ করে শিশু এবং মায়েদের হাত পরিস্কার রাখতে হবে।

এই ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও প্রশাসন) ডা. নোবেল কুমার বড়–য়া জানান, শীতের শুরুতে আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে শিশু ও নবজাতকরা ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়। এ সময়ে শিশুর সর্দি-জ্বরের সঙ্গে কাশি , ডায়রিয়া,ধুলা বালির কারণে এজমা, নিউমোনিয়ার কারণে শ্বাসকষ্ট হয়। শিশুদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বড়দের তুলনায় কম। তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন শিশুসহ অনেক রোগি ভর্তি হয়ে নিচ্ছেন আমরা সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি রোগিদের দ্রুত চিকিৎসা দিতে।