বলরাম দাশ অনুপম, কক্সবাজার :

অতিথি পাখিদের কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকা। বিশেষ করে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনদ্বীপের বিভিন্ন প্রান্তে দলে দলে বাসা বাঁধছে নানা দেশের অতিথি পাখি। শীতের আগমনী বার্তার শুরুতে অর্থ্যাৎ অগ্রহায়ন মাস শুরুর সাথে সাথে সীমান্ত পথ পাড়ি দিয়ে ভারত, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, সাইবেরিয়া, মধ্য এশিয়া, রাশিয়া ও মিয়ানমারের হাজার হাজার পথ পাড়ি দিয়ে অতিথি পাখির দল কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকা ও সেন্টমার্টিন দ্বীপ হাজির হচ্ছে প্রতিদিন। বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখি এখন বাসা বেঁধেছে উপকূলীয় প্যারাবন ও গ্রাম অঞ্চলের গাছ গাছালিতে। শীতের অনুভূতিতে সেন্টমার্টিনের সাগরকে ছিন ছিন মধুর শব্দে বিভোর করে তুলেছে এই অতিথি পাখির দল। ঝাঁকে ঝাকে এই পাখি দূরদেশ থেকে এসে সেন্টমার্টিনের দ্বীপের হোটেলের কটেজের ছাদে, গাছের ডালে, পর্যটকবাহী জাহাজের ছাদে ও সাগরের বিভিন্ন খুঁটিতে বসে আপন মনে গান গাইছে। এদের কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠছে পুরো সেন্টমার্টিনদ্বীপ। প্রায় ১২ বছর ধরে এই অতিথি পাখি দূর দেশ থেকে আসতে শুরু করেছে বলে জানান স্থানীয়রা। বাতাসে শীতের বার্তা শুরুর পর পাখির আগমন ঘটে থাকে। সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা ও জেলেদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ৭/৮ বছর ধরে এখানে দেশী-বিদেশী পাখিদের আনাগোনা চোখে পড়ে। শীতের শুরুতেই এই পাখিগুলো খাবারের জন্য ছুটে আসে সেন্টমার্টিনদ্বীপ ও সাগরে। এই সাগরের পানির উপর অংশে পড়ে যাওয়া, পোকা, ছোট মাছ শিকার করে খেতে দেখা যায়। এছাড়া দ্বীপের বিভিন্ন জায়গায় পড়ে থাকা পোকা, মাছ ইত্যাদি খাবারের জন্য ছুটে আসে দূর দেশ থেকে। শীতের তীব্রতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এদের সংখ্যাও যেন বাড়তে থাকে। শীত শেষ, পাখিরাও ফিরে যায় আপন নীড়ে। শুধু সেন্টমার্টিনদ্বীপ নয়-কক্সবাজারের খুরুস্কুল, ভারুয়াখালী, ইনানী, হিমছড়ি, চৌফলদন্ডী, পোকখালী, ছিরাদিয়া, টেকনাফের সৈকত পাড়, নাজিরারটেক, সোনাদিয়াসহ বেশ কিছু এলাকা অতিথি পাখির কিচির-মিচির শব্দে মুখরিত। বক, চখা-চখি, ঘুঘু, চেঘা, গাংচিল, শঙ্খচিল, পেলিক্যান, ডাভ, ভাদিহাস ও বালিহাসসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দেখতে দর্শনার্থীরা প্রতিদিন ভীড় জমাচ্ছেন অতিথি পাখি অধ্যুষিত এলাকায়।