ডেস্ক নিউজ:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকারের দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানের লক্ষ্য সামাজিক বৈষম্য দূর করা। নিউ ইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে একথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। এতে রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

নিউ ইয়র্ক সফরের সময় ভয়েস অব আমেরিকাকে সাক্ষাৎকার দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সফরের সময়ে ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের প্রধান রোকেয়া হায়দারকে সাক্ষাৎকার দেন প্রধানমন্ত্রী। বুধবার ওই সাক্ষাৎকারটি ভয়েস অব আমেরিকার বাং লা বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

ওই সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশে চলমান দুর্নীতি ও অনিয়ম বিরোধী অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, রাজনৈতিক সংযোগ, পারিবারিক যোগাযোগ বা সামাজিক মর্যাদা নিয়ে আমি মাথা ঘামাই না। দেশের সম্পদ থেকে যারা নিজেদের লাভ খুঁজবে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়ম বিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে।

সন্ত্রাসবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ ঘোষণার পর সরকার সফল হয়েছে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সন্ত্রাস বিরোধী লড়াইকে সবাইকে এগিয়ে এসে সম্পৃক্ত হওয়ার জানাই। একইভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যও নেওয়া হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, একই সময়ে আমি উপলব্ধি করি যদি দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চালানো না হয় তাহলে সমাজে বড় ধরণের বৈষম্য তৈরি হবে। প্রধানমন্ত্রী ব্যাখ্যা করে বলেন একজন মানুষ সৎভাবে জীবন যাপন করছে আর একই কাজ করে অন্য একজন অবৈধ উপায়ে নিজেদের ভাগ্য গড়ে তুলে নিচ্ছে। এইসব দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিরা নিজেদের অবৈধ উপায়ে অর্জিত সম্পদ বিপদজনকভাবে প্রদর্শন করতে থাকে যার প্রভাব সন্তানদের ওপর পড়ে। তিনি বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পে সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থ এইসব বিবেকবর্জিত মানুষ অপব্যবহার করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দেশের যে উন্নয়নই করি না কেন, যে বরাদ্দই দেই না কেন তা যথাযথভাবে ব্যবহারের জন্য এই সামাজিক বৈষম্য দূর করতে হবে। তিনি বলেন, সমাজে বিদ্যমান সম্পদের এই বিপদজনক প্রদর্শনির অসুস্থ প্রতিযোগিতা থেকে রক্ষা করতে হবে।

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গা সংকট তিন বছর পূর্ণ হয়েছে। আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছি আর একটি সমঝোতা স্মারকও স্বাক্ষর করেছি। কিন্তু তারপরও প্রত্যাবাসনের সময় উপস্থিত হলে প্রতিবারই সমস্যা দেখা দেয় আর রোহিঙ্গারা ফিরতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী জানান, নিউ ইয়র্কে তিনি যেসব বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাতে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা করেছেন তারা সবাই এই বিষয়ে সহানুভূতি দেখিয়েছে আর আশা প্রকাশ করেছে যে মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমস্যা মিয়ানমার তৈরি করেছে আর তাদেরই এই সংকট সমাধান করতে হবে।