মাহবুবা সুলতানা শিউলি

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি কন্যা, বিশ্বনেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে নিয়ে লেখার কোনো যোগ্যতা আমার নেই তা আমি জানি তারপরও অধমের এ প্রয়াসকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন সেই প্রত্যাশায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে আজ তাঁর ৭২ তম জন্মদিবস লগ্নে তাঁকে নিয়ে দুকলম লেখার দুঃসাহস দেখাচ্ছি।

প্রথমেই আজ তাঁর ৭২ তম জন্মদিবসে মহান আল্লাহপাকের দরবারে তাঁরজন্য সুস্থ, নিরাপদ ও দীর্ঘায়ু জীবন প্রার্থনা করছি।

শেখ হাসিনা ওয়াজেদ (জন্ম: ২৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৭) বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদের সরকারদলীয় প্রধান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী। তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা পূর্ব পাকিস্তানের টুঙ্গিপাড়ায় ১৯৪৭ সালের ২৮শে সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি, বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। তিনি টুঙ্গিপাড়াতে বাল্যশিক্ষা নেন। ১৯৫৪ সাল থেকে তিনি ঢাকায় পরিবারের সাথে মোগলটুলির রজনী বোস লেনের বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। পরে মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে স্থানান্তরিত হন। ১৯৫৬ সালে তিনি টিকাটুলির নারীশিক্ষা মন্দির বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৬১ সালের ১ অক্টোবর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে থাকা শুরু করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি আজিমপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন।

শেখ হাসিনা ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায় ১৯৬৭ সালে পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সাথে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের সংসারে সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের জন্ম হয়। তাঁর স্বামী এম এ ওয়াজেদ মিয়া ৯ মে, ২০০৯ তারিখে মৃত্যুবরণ করেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এক সামরিক অভ্যুত্থানে তিনি ও তাঁর বোন শেখ রেহানা বাদে পরিবারের সকল সদস্যকে হত্যা করা হয়। বোনদ্বয় সেইসময় পড়াশোনার জন্য পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করছিলেন।

শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কর্মজীবন প্রায় চার দশকেরও বেশি। তিনি ১৯৮৬ থেকে ১৯৯০ ও ১৯৯১-১৯৯৫ পর্যন্ত বিরোধী দলের নেতা এবং ১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৮১ সালে থেকে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ২০০৮ সালে জনগণের বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আবারো ফিরে আসেন। ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসের নির্বাচনে তিনি তৃতীয়বারের মত প্রধানমন্ত্রী হন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসের নির্বাচনে চতুর্থ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হন।

হাসিনা বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ ক্ষমতাশালী ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত, ফোর্বস সাময়িকীর দৃষ্টিতে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ১০০ নারীর তালিকায় ২০১৮ সালে তার অবস্থান ছিল ২৬তম এবং ২০১৭ সালে ৩০তম। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক ফরেইন পলিসি নামক সাময়িকীর করা বিশ্বব্যাপী শীর্ষ ১০০ বৈশ্বিক চিন্তাবিদদের তালিকায় শেখ হাসিনা জায়গা করে নিয়েছেন। তিনি বিশ্ব নারী নেত্রী পরিষদ-এর একজন সদস্য, যা বর্তমান ও প্রাক্তন নারী রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীদের একটি আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক।
তিনি তাঁর শাসনামলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্যও প্রশংসিত।

জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা বিশ্বনিখিলজুড়ে অন্যতম প্রধান অনুকরণীয় নেতৃত্ব। খাদ্য নিরাপত্তা, শান্তি চুক্তি, সমুদ্র বিজয়, নারীর ক্ষমতায়ন, অর্থনৈতিক উন্নতি এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষায় সমুজ্জ্বল।

১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট একাত্তরের দেশবিরোধী ঘাতকচক্র কতিপয় সেনাকর্মকর্তার হাতে নিহত হন তাঁর বাবা-মা, রক্তে রঞ্জিত হয়ে শহীদ হন তাঁর পরিবারের সকল সদস্যগণ। শেখ হাসিনা আসলে শত্রুর আগুনের ছাই থেকে উঠে আসা এক ছাই চাপা আগুন যিনি শোককে শক্তি করে এক অনন্য মানুষ হয়ে নিরন্তর দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন।

দেশবিরোধী একদল সেনা কর্মকর্তার হাতে তাঁর বাব-মা-ভাইসহ পুরো পরিবার নিহত হবার পরে তিনি ৬ বছর নির্বাসনে ছিলেন।

১৯৮১ সালের ১৭ মে, প্রায় চারদশক আগে দীর্ঘ ৬ বছরের নির্বাসন শেষে তিনি বাংলার মাটিতে ফিরে আসেন। তাঁর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ওই দিনটি ছিলো রোববার। ঐ দিনের বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে তাঁকে একনজর দেখার জন্য ঢাকার কুর্মিটোলা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শেরেবাংলা নগর পর্যন্ত এলাকাজুড়ে লাখ-লাখ জনতার ঢল নামে। সেদিনের গগণবিদারী মেঘের গর্জন, ঝাঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ প্রকৃতি যেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার বদলা নেওয়ার লক্ষ্যে গর্জে উঠেছিলো, আর অবিরাম মুষলধারে ভারি-বর্ষণে যেন ধূয়ে-মুছে যাচ্ছিলো বাংলার মাটিতে পিতৃহত্যার জমাট বাঁধা পাপ আর কলঙ্কের চিহ্ন।

১৯৮১ সালের ১৭ মে তাঁর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সময়ে গণসংবর্ধনায় তিনি গগণবিদারী আর্তনাদের সঙ্গে বলেছিলেন—“সবকিছু হারিয়ে আপনাদের মাঝে এসেছি। বাংলার দুঃখী মানুষের সেবায় আমি আমার এ জীবন দান করতে চাই। আমার আর হারাবার কিছুই নাই। বাবা-মা, ছোটভাই রাসেলসহ সকলকে হারিয়ে আমি আপনাদের কাছে এসেছি, আমি আপনাদের মাঝেই তাঁদেরকে ফিরে পেতে চাই।”

গণতন্ত্রের মানসকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা বাংলার মাটিতে ফিরে আসেন। বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে এটা একটি মাইলফলক। তাঁর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমেই সুগম হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতার মূল্যবোধ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ।

তাঁর ফিরে আসা ছিলো গণতন্ত্রের ফিরে আসা, দেশের উন্নয়ন ও প্রগতির ফিরে আসা সেই সাথে অনির্বাচিতভাবে ক্ষমতাসীন সরকারের বিদায়। নিজের নীতি ও আদর্শকে সমুন্নত রাখার এই যাত্রায় ১৯ বার আততায়ীর হামলার শিকার হয়েছেন যার মধ্যে সর্বশেষ ছিলো ২০০৪-এর একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলা।

শেখ হাসিনার দিনবদলের যাত্রা শুরু হয়েছিলো ২০০৮ সালে। ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০টির মধ্যে ২৬৪ টি আসনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট জয়লাভ করলে শুরু হয় রুপকল্প ২০২১ এর পথে শুভযাত্রা। তাঁর নেতৃত্বে জাতীয় প্রবৃদ্ধি বেড়ে হয় ৭.১১ শতাংশ, মাথাপিছু আয় বেড়ে হয় ১৪৬৬ মার্কিন ডলার, দারিদ্র্যের মাত্রা কমে হয় অর্ধেক যা জনসংখ্যার ২২ শতাংশ, এককোটি বেকারের কর্মসংস্থান হয়েছে। তাঁর সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচারের রায়ের পরিপূর্ণ বাস্তবায়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
২০০৮ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচিত হয়ে দেশরত্ন শেখ হাসিনা জাতিকে সেই লজ্জা থেকে নিষ্কৃতি দিয়েছেন। তিনি বহু আকাংক্ষিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছেন। তাঁর সরকারের অধীনেই আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনাল গঠন করা হয়। ছয়জন কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীকে ইতোমধ্যেই ফাঁসীতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়েছে। আরো অনেক যুদ্ধাপরাধীই বিচারের অপেক্ষায় আছে। এই বিচার ৩০ লক্ষ শহীদ ও ৩ লক্ষ নির্যাতিত মা-বোনের সম্মান রক্ষার জন্য দেশরত্ন শেখ হাসিনার লড়াই।

তাঁর প্রথম শাসনামলে (১৯৯৬-২০০১) শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পার্বত্য শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন, যার মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসী ও বাঙালিদের মধ্যে দীর্ঘদিনের সশস্ত্র সংগ্রামের সমাপ্তি হয়। ১৯৯৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি, শান্তি বাহিনীর প্রধান জ্যোতিরিন্দ্র লারমা খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অস্ত্র সমর্পণ করেন।

দূরদর্শী বিদেশ নীতির মাধ্যমে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সাথে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ও বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর সাথে সর্বকালের সবচেয়ে নৈকট্যপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনে সক্ষম হয়েছেন। পার্বত্য শান্তি চুক্তির জন্য তিনি ইউনেস্কো শান্তি পুরস্কার পান। ১৯৯৮ সালে তিনি নিখিল ভারত পরিষদের কাছ থেকে মাদার তেরেসা পদকও পান। ১৯৯৯ সালের ১৫ মে, তিনি হেগ শান্তি পরিষদের সমাপনী অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন। ১৯৯৯ সালে, শেখ হাসিনা সেরেস শান্তি পদক পান যা বিশ্ব খাদ্য পরিষদের পক্ষ থেকে সরকার প্রধানদের দেওয়া সর্বোচ্চ পুরস্কার।

১৯৮১ থেকে ১৯৯৫ সময়কালে দেশকে গণতান্ত্রিক পথে ফিরিয়ে আনতে অগ্রণী ভুমিকা রাখেন শেখ হাসিনা। ১৯৮১ সাল থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত দীর্ঘ ৯ বছর রাজপথে নেতৃত্ব দিয়েছেন সামরিক স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে। ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে সংসদে তাঁর দল হয় প্রধান বিরোধী দল।

শেখ হাসিনার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিপুলভোটে জয়লাভ করে ক্ষমতায় আসে। সেই সময় তাঁর সরকার যমুনা নদীতে বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণ করে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করে, যা ছিলো সেই সময় বিশ্বের দীর্ঘতম সেতুর তালিকায় একাদশতম। ১৯৯৮ সালের বন্যার সময়, তাঁর সরকার দুইকোটি বন্যাদুর্গত মানুষকে বিনামুল্যে খাদ্য প্রদান করে। তাঁর নেতৃত্বাধীন সেই সরকারের আমলে উল্লেখযোগ্য সাফল্যসমুহ হচ্ছে, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, পার্বত্য শান্তি চুক্তি, একুশে ফেব্রুয়ারিকে জাতিসংঘ কর্তৃক আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা এবং বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আসরে বাংলাদেশের অন্তর্ভূক্তি।

রাজনীতির বাইরেও লেখক হিসেবে শেখ হাসিনার অবদান রয়েছে। এ পর্যন্ত তিনি রচনা করেছেন প্রায় ৩০টি গ্রন্থ।
এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো;

শেখ মুজিব আমার পিতা,
সামরিক বনাম গণতন্ত্র,
ওরা টোকাই কেন,
বিপন্ন গণতন্ত্র,
সাদা কালো,
বাংলাদেশে স্বৈরাতন্ত্রের জন্ম,
অসমাপ্ত আত্মজীবনী (গ্রন্থে রূপান্তর),
PEPOLE AND DEMOCRACY,
THE QUEST FOR VISION 2021,
আমাদের ছোট রাসেল সোনা।

তাঁর থলিতে যেসব সম্মাননা যুক্ত হয়েছে সেগুলো হলো;
যুক্তরাষ্ট্রের বস্টন ইউনিভার্সিটি, ব্রিজপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয়, জাপানের ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয়, স্কটল্যান্ডের অ্যাবারটে বিশ্ববিদ্যালয়, ভারতের বিশ্বভারতী এবং ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়, অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ব্রাসেলসের বিশ্ববিখ্যাত ক্যাথলিক বিশ্ববিদ্যালয়, রাশিয়ার পিপলস ফ্রেন্ডশিপ বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্টেট ইউনিভার্সিটি অব পিটার্সবার্গ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে। এছাড়া ফ্রান্সের ডাওফি বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ডিপ্লোমা প্রদান করে।

ইউএন উইমেন থেকে “প্ল্যানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন”
গ্লোবাল পার্টনারশীপ ফোরাম থেকে এজেন্ট অব চেঞ্জ পুরষ্কার ৷
ফোর্বস’-এ প্রথম ১০০ সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর নারীর মধ্যে ৫৯ তম স্থান অর্জন৷
৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৭ সালে বস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অব ল ডিগ্রি প্রদান৷
৪ জুলাই ১৯৯৭ সালে জাপানের ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অব ল সম্মাননা।
অ্যবার্টয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২৫ অক্টোবর ১৯৯৭ সালে ডক্টর অব ফিলোসফী সম্মাননা।
ইউনেস্কো থেকে ১৯৯৮ সালে ‘‘হুপে-বোয়ানি’’ শান্তি পুরস্কার৷
সর্বভারতীয় শান্তিসংঘ থেকে ১৯৯৮ সালে মাদার তেরেসা পুরষ্কার।
মহাত্মা গান্ধী ফাউন্ডেশন কর্তৃক ১৯৯৮ সালে এম কে গান্ধী পুরস্কার গ্রহণ ৷
আন্তর্জাতিক লায়ন্স ক্লাব কর্তৃক ১৯৯৬-১৯৯৭ সালে ‘‘Medal of Distinction” পদক ও ১৯৯৬-১৯৯৭ সালে “Head of State” পদক লাভ।
২৪ জানুয়ারি ১৯৯৯ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ডেসিকোটাম’ (ডক্টর অব লিটারেচার, হনোরিস কাউজা) লাভ।
১৯৯৯ সালে খাদ্য ও কৃষি সংস্থা থেকে চেরেস পদক লাভ।
২০ অক্টোবর ১৯৯৯ সালে অস্ট্রেলীয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সম্মানসূচক ডক্টর অফ ল ডিগ্রি লাভ।
১৮ ডিসেম্বর ১৯৯৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টর অফ ল ডিগ্রি লাভ।
৫ সেপ্টেম্বর ২০০০ সালে ব্রিজপয়েন্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টর অফ হিউম্যান লেটার লাভ।
৯ এপ্রিল ২০০০ সালে রানডলপ ম্যাকন উইমেন্স কলেজ কর্তৃক পার্ল এস. বাক পুরস্কার।
রোটারি ফাউন্ডেশন কর্তৃক পল হ্যারিস ফেলো।
২০০৯ সালে ইন্দিরা গান্ধী পুরস্কার।
৩০ ডিসেম্বর, ২০১১ সালে বাংলা ভাষার ধারক ও বাহক হিসেবে বাংলা একাডেমি তাদের বার্ষিক সাধারণ সভায় সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করে।
১২ জানুয়ারি, ২০১২ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি এবং উন্নয়নে অনন্য অবদানের জন্য ভারতের ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে ডক্টর অব লিটারেচার বা ডি-লিট ডিগ্রী প্রদান করে।
নারী ও কন্যাশিশুদের শিক্ষা প্রসারের স্বীকৃতি হিসাবে ২০১৪ সালে ইউনেস্কো ‘শান্তিবৃক্ষ’ পুরস্কার।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় নেতৃত্বের জন্য ইউএন পরিবেশ পুরস্কার (চ্যাম্পিয়নস অব দ্যা আর্থ) লাভ।
২০১৪ সালে সমুদ্রসীমা জয়ের জন্য তিনি সাউথ পুরস্কার লাভ করেন ৷
১৬ নভেম্বর ২০১৫ সালে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ডক্টর অব দ্য ইউনিভার্সিটি’ ডিগ্রি।
২৬ মে ২০১৮ সালে পশ্চিমবঙ্গের কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব লিটারেচার (ডি-লিট)’ ডিগ্রি।
২৭ এপ্রিল ২০১৮ সালে বাংলাদেশে নারী শিক্ষা ও উদ্যোক্তা তৈরিতে অসামান্য নেতৃত্বদানের জন্য গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ এওয়ার্ড লাভ করেন।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানে দায়িত্বশীল নীতি ও তার মানবিকতার জন্য আইপিএস ইন্টারন্যাশনাল এচিভমেন্ট এওয়ার্ড এবং ২০১৮ স্পেশাল ডিসটিংশন এওয়ার্ড ফর লিডারশিপ গ্রহণ করেন।
বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় নিউজ এজেন্সি ‘দি ইন্টার প্রেস সার্ভিস (আইপিএস) এবং নিউইয়র্ক, জুরিখ ও হংকং ভিত্তিক তিনটি অলাভজনক ফাউন্ডেশনের নেটওয়ার্ক গ্লোবাল হোপ কোয়ালিশন ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সালে দুটি এওয়ার্ডে ভূষিত করে।
মার্চ ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীকে ‘লাইফটাইম কন্ট্রিবিউশন ফর উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট এ্যাওয়ার্ড’-এ ভূষিত করে ইনস্টিটিউট অব সাউফ এশিয়ান উইমেন।
‘ভ্যাকসিন হিরো’ –টিকাদান কর্মসূচিতে বাংলাদেশের সফলতা জন্য পুরস্কার দিয়েছে গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনেশন এবং ইমিউনাইজেশন (জিএভিআই)।

ক্ষমতাধর নারী হিসেবে
বিশ্ব পর্যায়ে
শেখ হাসিনা ২০১১ সালে বিশ্বের সেরা প্রভাবশালী নারী নেতাদের তালিকায় ৭ম স্থানে ছিলেন। তার পূর্বে এবং পশ্চাতে ছিলেন যথাক্রমে লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট অ্যালেন জনসন সার্লেফ এবং আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জোহানা সিগার্ডারডটির । যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক নিউ ইয়র্ক টাইমস সাময়িকীর জরীপে বিশ্বের সেরা প্রভাবশালী ও ক্ষমতাধর নারী নেতৃত্বের ১২জনের নাম নির্বাচিত করে।

উল্লেখ্য যে, ২০১০ সালে নিউ ইয়র্ক টাইমস সাময়িকীর অনলাইন জরীপে তিনি বিশ্বের সেরা দশ ক্ষমতাধর নারীদের মধ্যে ৬ষ্ঠ স্থানে ছিলেন। ঐ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জার্মানির বর্তমান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের ঠিক পিছনে ছিলেন এবং ব্যাপক প্রভাব-প্রতিপত্তি বিস্তার করেছিলেন। ২০১৫ সালে বিশ্বের ক্ষমতাধর নারীদের তালিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫৯তম স্থানে আছেন। ২০১৪ সালে এই তালিকায় শেখ হাসিনার অবস্থান ছিল ৪৭তম।
এশীয় পর্যায়েও
২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ৮ মার্চ বিশ্ব নারী দিবসের শতবর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্বখ্যাত সংবাদ সংস্থা সিএনএন ক্ষমতাধর ৮ এশীয় নারীর তালিকা প্রকাশ করেছিল। উক্ত তালিকায় ষষ্ঠ অবস্থানে ছিলেন শেখ হাসিনা।

তিনি জনপ্রিয় সংস্কৃতিতেও। ২০১৮ সালে পিপলু খানের পরিচালনায় আওয়ামী লীগের সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের সহায়তায় নির্মিত হাসিনা: এ ডটার’স টেল নামক তথ্যচিত্রে শেখ হাসিনার জীবনীর বিভিন্ন দিক সরাসরি তুলে ধরা হয়।

শেখ হাসিনা সরকার যে বিষয়গুলির উপর জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করেছেন তার প্রায় সবগুলোতেই তিনি সফল হয়েছেন। তিনি জানেন ও বিশ্বাস করেন তাঁর আর হারানোর কিছু নেই। যা হারানোর তা ৭৫ ই হারিয়েছেন। শোককে শক্তি করে তিনি নতুনভাবে বেঁচে আছেন এখনো, তাই মৃত্যুভয়ে কখনো তিনি পিছপা হননি এবং হবেনও না। মহান আল্লাহপাক তাঁকে সুযোগ দিয়েছেন পিতার স্বপ্ন পূরণে পিতার অতৃপ্ত আত্মার শান্তি দিতে যোগ্য পিতার যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে দেশের দীর্ঘকালীন সফল প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশসেবার এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের বিচারের দ্বায়িত্বের। আর এই মুহূর্তে দরকার দূর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। দরকার দূর্নীতির বিরুদ্ধে গণজাগরণ। আর এই গণজাগরণ তৈরি করা সম্ভব একমাত্র শেখ হাসিনার পক্ষে। আমাদের বিশ্বাস তিনি এখন সে পথেই ভয়হীন অতন্দ্রপ্রহরীর ন্যায় হাঁটছেন। শেখ হাসিনা এখন নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান, নিজেই একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ দল। তাঁর জনপ্রিয়তা ও বিশ্বাসযোগ্যতা তাঁর দলের চেয়েও বেশি তা দলমত নির্বিশেষে সবাইকে একবাক্যে স্বীকার করতেই হবে।

______________________________
লেখক : মাহবুবা সুলতানা শিউলি
সদস্য, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ
কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
ইমেইল : mahbubasheuly82@gmail.com