মোস্তফা কামাল :
গত ২০ বছর ধরে শত চেষ্টার পরও কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কে।
এতে সড়কটি বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে।
অল্প বৃষ্টিতে আমন ফসলের ক্ষেতে রুপান্তরিত হচ্ছে সড়কটি। নাজুক ক্ষতবিক্ষত ওই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রায় লক্ষাধিক মানুষকে। সড়কটিতে হাঁটতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে পড়ছেন কোমলমতি শিক্ষার্থী সহ অনেকেই। যুগ যুগ ধরে তাদের এই করুণ ভোগান্তি দেখার যেন কেউ নেই।
স্থানীয়দের অভিযোগ পেয়ে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ডুলাহাজারা বাজার থেকে রংমহল হয়ে ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়া লাট পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার নাছির রোড বা বগাইছড়ি নামক সড়কটি সংস্কারের অভাবে রাস্তার নাজুক অবস্থা সৃষ্ট হয়েছে। তথ্য মতে এই সড়কটিতে গত ২০/২২ বছর পূর্বে সরকারি খরচে ইট বিছানো হয়েছিল। এরপর আর কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এই সড়কে। বর্তমানে সড়কটি ক্ষতবিক্ষত হয়ে করুণ দৃশ্য দেখা দিয়েছে। বিছানো ইট গুলো ভেঙ্গে সরে গিয়েছে অনেক আগে। এখন মাটিও সরে যাচ্ছে। একারনে বন্ধ রয়েছে যানবাহন চলাচলও। খুব জরুরী না হলে কোন গাড়ি চলাচল করে না। ফলে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে  লক্ষাধিক মানুষকে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি বর্ষা মৌসুমে অল্প বৃষ্টিতে রাস্তায় হাটু পর্যন্ত কাঁদা হয়ে যায়। তখন আর পায়ে হেঁটেও চলাচল করা যায় না। তারা জানান, এ অবস্থায় সড়কটি সংস্কার করা জরুরী হলেও কাজটি করার জন্য কোন অভিভাবক পাওয়া যাচ্ছে না। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে অন্তত ৩৫ টি গ্রামবাসীকে। অভিযোগ উঠেছে সড়ক দিয়ে অতিরিক্ত বালি বোঝাই ট্রাক চলাচল করার ফলে সড়কের এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল আমিন বলেন, ডুলাহাজারা ইউনিয়নে ক্ষতিগ্রস্ত সকল সড়ক সংস্কারের জন্য বিষয়টি কক্সবাজার এক আসন (চকরিয়া পেকুয়া)  সাংসদ আলহাজ্ব জাফর আলমকে জানানো হয়েছে। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদনও করা হয়। বরাদ্দ পেলে সড়কের কাজ শুরু করা হবে।
অপর দিকে ডুলাহাজারার পার্শ্ববর্তী লামা ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য মোহাম্মদ হোছাইন মামুন জানান, দুর্গম পাহাড়ি এলাকা ফাঁসিয়াখালীর মধ্যখানে বড় কোন বাজার না থাকায় এই ইউনিয়নের মূল অংশ বগাইছড়ি, মালুম্যা, হারগাজা ও সাপেরগাড়া সহ প্রায় ১৫ টি গ্রামের মানুষ খাদ্য সামগ্রী সংগ্রহে ডুলাহাজারা বাজার নির্ভরশীল। আর এসব মানুষ ডুলাহাজারা বাজারে যাতায়াতে এই সড়কটি ব্যবহার করে। আবার আমাদের এই এলাকায় ডুলাহাজারা ইউনিয়নের অসংখ্য মানুষের জায়গা জমি ও ব্যবসা বাণিজ্য রয়েছে। একারনে এই দুই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের চলাচলের জন্য এই সড়ক ছাড়া বিকল্প আর কোন সড়ক নেই। এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সংস্কার মেরামতের অভাবে গ্রীষ্মকালীন যেমন তেমন বর্ষামৌসুমে বেহাল দশায় পরিণত হয়। একারনে অনেক সময় যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় দুই ইউনিয়নের মানুষকে। বর্তমানে এই সড়ক দিয়ে চলাচল অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। তিনি জানান, সড়কটির বেশির ভাগ অংশ প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকা ডুলাহাজারার আওতায় পড়েছে। কিন্তু সড়কটি সংস্কারে ওই এলাকার কর্তৃপক্ষের কোন মাথা ব্যথা নেই।
ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জাকের হোসেন মজুমদার জানান, সড়কটির বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক  মন্ত্রী বাবু বীর বাহাদুর উশৈসিং’র সাথে অনেক বার যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তিনি সড়কটির কাজ করার আশ্বাস দিলেও এখনো হচ্ছেনা।
স্থানীয়দের প্রাণের দাবী সড়কটি দ্রুত সংস্কারের জন্য তারা  সাংসদ আলহাজ্ব জাফর আলম ও চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ফজলুল করিম সাঈদীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।