সিবিএন ডেস্ক:
অন্যান্য বছরের মতো এবারও পবিত্র আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া শোক মিছিলে ছোরা, কাঁচি, তরবারি দিয়ে নিজের শরীর রক্তাক্তকরণ নিষিদ্ধসহ ১৩ নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি)। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে আয়োজিত এক সমন্বয় সভায় ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া এ নিষেধাজ্ঞার কথা জানান।

প্রসঙ্গত, আগামী ৭ সেপ্টেম্বর (৭ মহরম) দুপুর ২ টায় আঞ্জুমানে হায়দারির আয়োজনে হোসাইনী দালান ইমামবাড়া থেকে শোকমিছিলের মধ্যদিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পবিত্র আশুরা উদযাপন শুরু হবে। এছাড়া, বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে ১০ সেপ্টেম্বর আশুরা পালন শেষ হবে।

তাজিয়া শোক মিছিলে ডিএমপির পক্ষ থেকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সমন্বয় সভায় জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার। সভায় ডিএমপি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি, সরকারের বিভিন্ন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিসহ শিয়া সম্প্রদায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সমন্বয় সভায় আশুরার শোকমিছিল আয়োজক কর্তৃপক্ষের দেওয়া ১৩টি নির্দেশনা হলো:

১। শোক মিছিলের নির্ধারিত রুট ও সময়সীমা (নির্ধারিত সময়ে শুরু ও শেষ) মেনে চলতে হবে।

২। তাজিয়া শোক মিছিলে ‘হায় হোসেন’ মাতম তুলে দা, ছোরা, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি নিয়ে নিজেদের শরীর রক্তাক্ত করা যাবে না।

৩। শোক মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের নিশানের উচ্চতা ১২ ফুটের বেশি হবে না।

৪।শোক মিছিল ও অন্যান্য অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে আয়োজক সংস্থা প্রতিটি সমবেত স্থানে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও মনিটরিংয়ে ব্যবস্থা করবে।

৫। পর্যাপ্ত সংখ্যক আইডি কার্ডসহ স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ ও যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ছবিসহ তালিকা সংশ্লিষ্ট উপ-পুলিশ কমিশনারের অফিসে আয়োজক সংস্থাকে পাঠাতে হবে।

৬। শোক মিছিলে সব ধরনের ধারালো অস্ত্র, ধাতব পদার্থ, দাহ্য পদার্থ, ব্যাগ, পোটলা, লাঠি, ছোরা, চাকু, তলোয়ার, বর্শা, বল্লম ও আতশবাজির ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পোশাকের সঙ্গেও এগুলো ব্যবহার করা যাবে না।

৭। শোক মিছিল চলার সময়ে রাস্তায় বা বিভিন্ন অলি-গলি থেকে আসা লোকদের মিছিলে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। মিছিলে অংশ নিতে হলে মিছিল শুরুর জায়গায় যেতে হবে।

৮। শোক মিছিল শুরুর জায়গায় প্রবেশের আগে সবাইকে আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর ও হাত দিয়ে দেহ তল্লাশি করে ঢুকতে দিতে হবে। তল্লাশি ছাড়া কোনও অবস্থায় কাউকে মিছিলে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। সেক্ষেত্রে পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবী রাখতে হবে।

৯। শিয়া সম্প্রদায়ের প্রতিটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ইমামবাড়া ও শোক মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের সমাবেত স্থান ও এর আশপাশের সব এলাকায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখতে হবে। সন্ধ্যার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করতেও বলা হয়েছে।

১০। শোক মিছিলে উচ্চমাত্রার শব্দ তৈরির ঢাক-ঢোল, বাদ্যযন্ত্র, পিএ সেট ব্যবহার করা যাবে না।

১১। শোক মিছিলের মধ্যে যেন কোনও গ্যাপ সৃষ্টি না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

১২। তাজিয়া মিছিলে পাঞ্জা মেলানোর সময় শক্তি প্রয়োগ করে ভীতিকর পরিস্থিতি ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা তৈরি করা যাবে না।

১৩। শোক মিছিল ও আশুরাকেন্দ্রিক অনুষ্ঠানে কাউকে চাদর গায়ে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না।