শাহেদ মিজান, সিবিএন:

দেশজুড়ে এখন একটাই আলোচনা বিষয়- ডেঙ্গু। এই রোগ ইতোমধ্যে ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। মারা গেছেন বেশ কয়েকজন। আক্রান্ত হয়েছে প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ। রাজধানী ঢাকা ছাড়িয়ে বিভিন্ন জেলায়ও এই রোগ বিস্তার করেছে। কক্সবাজারেও অর্ধশতের বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে। এই ভীতিকর পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে ব্যাপকভাবে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান চলছে। ময়লা-আবর্জনা ও ঝোপ-জঙ্গল পরিস্কার এবং ধ্বংস করা হচ্ছে মশার প্রজনন ক্ষেত্রগুলো। এই নিয়ে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ বিভাগ বেশ সরব রয়েছে। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগ আলাদা আলাদা করে কর্মসূচী শুরু করে এবং তা অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু অবিশ^াস্য হলেও সত্য যে, কক্সবাজার পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনেই রয়েছে মশার বিশাল আখড়া। পুলিশ সুপার কার্যালয়ের প্রধান গেইট সংলগ্ন এবং কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবনের সামনেই বিশাল খালি জায়টিই এখন মশার বিশাল আখড়া। শুধু আখড়া নয়; সেই জায়গাতেই রয়েছে মশার প্রজনন ক্ষেত্রও- এমনটি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

পাশ^বর্তী লোকজন জানান, পুলিশ সুপার কার্যালয়ের প্রধান গেইট সংলগ্ন এবং কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবনের সামনেই বিশাল খালি জায়গাটি এক সময় কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ভবন ছিলো। কিন্তু বছর দুয়েক আগে পরিত্যক্ত হওয়ায় ভবনটি ভেঙে ফেলা হয়। সেই থেকে প্রায় ৩০/৪০ শতকের এই জায়গাটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। সেখানে কিছু অংশে বিভিন্ন সবজির চাষ করা হয়েছে এবং অধিকাংশ স্থান আগাছা জন্মে ভরে গেছে। আগাছা ও সবজির গাছগুলো মিলে একটি বিরাট ঝোপ-জঙ্গলে পরিণত হয়েছে পুরো জায়গাটি। সেই সাথে মাটিতে জমে রয়েছে বৃষ্টির পানি। যেখান থেকে মশা প্রজনন হচ্ছে। প্রজনন এবং আশ্রয়স্থল হওয়ায় পুরো জায়গাটি মশার একটি আখড়ায় পরিণত হয়েছে।

জানা গেছে, ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার শুরুতেই কক্সবাজার প্রেসক্লাব চত্বরে থাকা ঝোপ-জঙ্গল ও ময়ল- আবর্জনা পরিস্কার করে ফেলা হয়েছে। একইভাবে পুলিশ কার্যালয় চত্বরের আগাছাও পরিস্কার করে ফেলা হয়েছে। স্বয়ং পুলিশ ও পৌর মেয়র নিজেরাই প্রেসক্লাব ও পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এই পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করেছিলেন। কিন্তু এই স্পর্শকতার এলাকার পাশেই রয়ে গেছে মশার প্রজনন ক্ষেত্র ও ডেরা। স্বাভাবিকভাবে মশা প্রবণ এই এলাকাটি তাই এখনো মশাতে ভরে আছে।

প্রেসক্লাব সংশ্লিষ্ট লোকজন ও আশেপাশের ব্যবসায়ীরা জানান, ঝোপ-জঙ্গলে ভরে থাকায় প্রেসক্লাব চত্বরে বেশ মশা ছিলো। কিন্তু পরিস্কার করার সেখানে মশার আশ্রয়ের কোনো ধরণের সুযোগ নেই। তারপও এখনো পুলিশ সুপার ও প্রেসক্লাব চত্বরসহ পুরো এলাকায় মশার সয়লাব রয়েছে। এর একমাত্র কারণ হিসেবে বলছেন, ওই পরিত্যক্ত জায়গায় থাকা মশাগুলো এখনো পুরো এলাকায় বিচরণ করছে। এতে এই মশাগুলো রাতদিন সনামতালে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হয়ে আছে ওই এলাকায় অবস্থান করা লোকজন।

এ ব্যাপারে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ইকবাল হোসাইন বলেন, ‘জায়গাটি ঘেরাও থাকায় সেখানে যে ঝোপ-জঙ্গলে ভরে তা আমরা অবগত হয়নি। কেউ আমাদের অবগতও করেনি। বিষয়টি এখন অবগত হয়েছি। দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’