জাহাঙ্গীর আলম কাজল, নাইক্ষ্যংছড়ি:

বাইশারী-ঈদগড়-ঈদগাঁও সড়কে অপহৃত যুবক মাহবুবুর রহমানকে (৩১) দীর্ঘ ২৮ ঘন্টা পর কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও ইউনিয়নের কালিরছড়া এলাকায় মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দিয়েছে অপহরণকারীরা।
গত ৩ আগষ্ট সকাল ৭টায় বাইশারী থেকে ঈদগাঁও যাওয়ার পথে সড়কের হিমছড়ি ঢালা নামক স্থানে সিএনজি থামিয়ে যুবক মাহবুবকে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দূর্গম পাহাড়ে নিয়ে যায়। বাকী যাত্রীদের মারধর করে মোবাইল সহ নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
অপহৃত যুবক বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড মধ্যম বাইশারী এলাকার মৃত জাফর হোছনের ছেলে মাহবুবুর রহমান।
ভিকটিম মাহবুব জানান, অপহরনের পর তাকে দীর্ঘ দুই ঘন্টা পাহাড়ী পথ দিয়ে হেটে গহীন বনে নিয়ে যায়। ওই দিনই ১০টা থেকে তাকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে পরিবারের সদস্যদের নিকট ৩ লক্ষ টাকা মুক্তিপনের জন্য চাপ দিতে থাকে। অপহরনকারীরা মুক্তিপনের টাকার জন্য তাকে প্রচন্ড মারধর করে। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় রক্তাক্ত জখম করে ফেলে। অনেক সময় তাকে মাটিতে ফেলে ধারালো দা দিয়ে কেটে ফেলার চেষ্টাও চালায় অপহরনকারীরা। অপহৃত যুবক মাহবুব দীর্ঘ ২৮ ঘন্টার জিম্মিদশার বর্ণণা দিতে গিয়ে এক পর্যায়ে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন। তিনি আরো জানান, সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের প্রত্যেকের হাতে ধারালো দা ও দেশীয় লম্বা বন্দুক ছিল। তারা সংখ্যায় ৮ জন মত। চারজন মুখোশ পরিহীত ও চার জনের মুখ খোলায় অবস্থায় ছিল। বর্তমানে জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হওয়া মাহবুবুর রহমান শারীরিক ভাবে দূর্বল হয়ে পড়েছেন।
অপহরনের পর ঈদগড় পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এএসআই মোরশেদ ও ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আসাদুজ্জামান সঙ্গীয় ফোর্স সহ গহীন বনের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করেন। কিন্তু দূর্গম এলাকা হওয়ায় অপহৃত যুবককে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
অপহৃত পরিবারের সদস্য আব্দুর রহমান জানান, অপহরনের ৩ ঘন্টা পর থেকে মাহবুবের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে তিন লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবী করে আসছিল সন্ত্রাসীরা। দরকষাকষির একপর্যায়ে একদিন একরাত পর ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপনে তাকে ছেড়ে দিতে রাজী হয়। পরে রবিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঈদগাঁও ইউনিয়নের কালিরছড়া এলাকায় কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহা সড়কের পাশে মুক্তিপনের টাকা হাতে হাতে বুঝে নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়।