শাহীন মাহমুদ রাসেল :

কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন এলাকায় সড়ক দখল করে টার্মিনাল ও গাড়ি পার্কিং চলছে। পৌরসভার নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে টার্মিনাল বানিয়ে ব্যবহার করছে পরিবহন মালিক শ্রমিকরা। আঞ্চলিক মহাসড়ক কিংবা শাখা সড়কে গাড়ি পার্কিং করা নিষেধ থাকলেও যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করে যানজটের সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে স্থানীয় কার-মাইক্রোসহ নোহা ভোর থেকেই শহরের বাহারছড়া সড়কসহ আশেপাশের এলাকায় মহাসড়কের ওপর অবস্থান নেয়। সেখানেই গভীর রাত পর্যন্ত চলে যাত্রী বহনের কার্যক্রম।

উপরের ছবিতে যা দেখছেন এটি কোনো মাইক্রো স্ট্যান্ড বা টার্মিনাল নয়। ঝাঁউতলা হয়ে বাহারছড়া-কলাতলী সড়কের পাউষী থেকে বাহারছড়া বাজার পর্যন্ত সড়কের প্রতিদিনের চিত্র। সড়কের দু’পাশ দখল করে অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে পার্কিং স্ট্যান্ড। এতে ব্যস্ততম এ সড়ক সংকুচিত হয়ে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টির পাশাপাশি বাড়ছে দুর্ঘটনা ঝুঁকি। প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের চোখের সামনে এই বিশৃঙ্খল অবস্থা হতে থাকলেও নজর নেই কারো।

সব মিলিয়ে ঝাউতলা-বাহারছড়া সড়ককেই কার-মাইক্রো টার্মিনাল হিসেবে ব্যবহার করছেন মালিক-শ্রমিকরা। এতে শহরএলাকায় প্রায়শই তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। চলাচলে অসহ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন পথচারীরা। ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পারাপার করতে হয় তাদের। এছাড়া প্রায়ই ঘটছে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা। এসব দেখেও না দেখার ভান করে আছেন সংশ্লিষ্টরা। পাশাপাশি অভিযোগ আছে, সংশ্লিষ্টরা অনৈতিক সুবিধার বিনিময়েই সড়ক-মহাসড়ককে খেয়াল খুশির উন্মুক্ত টার্মিনাল হিসেবে ব্যবহার করার সুযোগ করে দিয়েছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, শহরের ঝাউতলা এলাকায় মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে বাহারছড়া সড়কে আছে ব্যক্তি মালিকানাধীন স্থান। স্থানটি ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কার-মাইক্রো মালিক সমিতি কক্সবাজারে চলাচলকারী কার-মাইক্রোগুলো টার্মিনাল হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। কিন্তু এই জায়গায় দু’একটি নির্দিষ্ট মাইক্রো ছাড়া গাড়ীগুলো টার্মিনালের ভেতর রাখা হয় না। প্রতিদিন ভোর থেকে অনেক রাত পর্যন্ত কার-মাইক্রোগুলো ঝাউতলা-বাহারছড়া সড়কে থাকা পরিবেশ অধিদপ্তর, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর, সহকারী (ভূমি)র কার্যালয়, সড়ক বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু করে বাহারছড়া বাজার পর্যন্ত সড়কের ওপর অবস্থান নিয়ে যাত্রী আনা নেওয়া করে থাকে।

যাত্রী ওঠানোর জন্য সড়কের ওপর এক বা দুই সারি করে পাকিং করে রাখা হয় কার মাইক্রোগুলো। প্রত্যহ ভোর থেকে ২৫-৩০টি কার, মাইক্রো, নোহা সড়ক দখল করে এভাবে রাখা হয়। এর সঙ্গে যুক্ত হয় স্থানীয় রেঁনেসা হোটেলের সামনে মহাসড়কের এই স্থানকে টার্মিনাল বানিয়ে যাত্রী ওঠানো ও নামানো হয়। অনেক বছর ধরে নির্দিষ্ট মহাসড়ক ও বাহারছড়া সড়কের এই স্থানকে টার্মিনাল হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন কার-মাইক্রো মালিক সমিতি।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখের সামনে সড়ক-মহাসড়ক দখল করে দীর্ঘদিন এ ধরনের অবৈধ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। সম্প্রতি কার-মাইক্রো মালিক সমিতি সড়ক-মহাসড়ক দখলে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

আবদুল্লাহ আল মামুন, আইয়ুব আলীসহ একাধিক ভুক্তভোগী ক্ষোভের সঙ্গে জানান, সড়ক যানবাহন ও মানুষ চলাচলের জন্য। কিন্তু সড়ক-মহাসড়ক দখল করে টার্মিনাল বানানো হয়েছে। এতে করে দিনের সিংহভাগ সময় শহরের ঝাউতলা এলাকায় তীব্র যানজট লেগেই আছে। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এসবের প্রতিবাদ করার সুযোগ নেই। সাধারণ মানুষ কিছু বললে শ্রমিকরা তাদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করেন বলেও অভিযোগ এসব ব্যক্তিদের।

কার-মাইক্রো মালিক সমিতির সভাপতি শাহাজান বাপ্পি বলেন, প্রশাসনের পক্ষথেকে রাস্তার একপাশে গাড়ী রাখার জন্য বলা হয়। রাতে ছাড়া আমাদের গাড়ী দিনে রাখা হয়না। রান্নাঘর, ঝাউবন, পউষীতে খেতে আসা টুরিস্টের গাড়িগুলো মূলত রাস্তা দখল করে রাখে। তিনি আরোও বলেন, আমরা সরকারের সর্বোচ্চ মহলের জন্য গাড়ী সরবরাহ করে থাকি, সরকারের পক্ষ থেকে একটা জায়গা ব্যবস্থা করে দেয়ার আহবান জানান এই নেতা।

সহকারি পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) বাবুল চন্দ্র বনিক বলেন, সড়ক যান চলাচলের জন্য।সড়ক-মহাসড়ককে বাস টার্মিনাল বানানোর কোনো এক্তিয়ার নেই। খোঁজখবর নিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।