এ কে এম ইকবাল ফারুক,চকরিয়া :

আর্থিক সচ্ছলতা এনে পরিবারে সকলের ভাগ্য বদলাতে মাতৃভূমি ছেড়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে পাড়ি দিয়েছিলেন আশিষ কুমার সুশীল (৩২)। কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়ে সে স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে আশিষের পরিবারের। গতকাল শনিবার ওমানের স্থানীয় সময় রাত ৮টায় দেশটির ছাহাল শহরে দুটি গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে মারা যায় আশিষ।

নিহত আশিষ কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের শীলপাড়া এলাকার মৃত মধু রাম শীলের ছেলে। পরিবারের সাত ভাই-বোনের মধ্যে আশিষ ছিল পঞ্চম।

নিহত আশিষের আতœীয় ও কৈয়ারবিল হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা তাপস সুশীল অভি বলেন, টাকা কামাই করে আর্থিক সচ্ছলতা আনতে পরিবারের সকলের সিদ্ধান্তে গত ২০১২ সালে মাতৃভূমি ছেড়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে যান আশিষ। সেখানে গিয়ে গাড়ির ওয়ার্কশপ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন তিনি। ২০১৪ সালে আশিষ দুই মাসের জন্য দেশে এসে আবারো ওমানে পাড়ি জমান। ওয়ার্কশপ শ্রমিক হিসেবে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে নিজের কষ্টার্জিত আয় দেশে পাঠিয়ে মোটামুটি ভালোই চলছিল বৃদ্ধা মা’কে নিয়ে তাদের সাত ভাই-বোনের সংসার। কিন্তু শনিবার রাত ৮টার দিকে ওমানের ছাহাল শহরে সড়ক দূর্ঘটনায় আশিষ নিহত হয়ে তাদের পরিবারে সেই স্বপ্ন ভেঙ্গে ধুলায় মিশে যায়।

ওমানে সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত আশিষের বৃদ্ধা মা শোভা রানী শীল কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আগামী দূর্গা পূজার আগেই দেশে আসার কথা ছিল আমার আশিষের। ভালো একটি মেয়ে দেখে তাকে বিয়ে করার পরিকল্পনাও ছিল আমাদের পরিবারের। কিন্তু আশিষের এ অকাল মৃত্যুতে আমাদের সকল আশাই আজ ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে।

আশিষের বড় ভাই অরুণ কান্তি শীল বলেন, ছোটভাই আশিষকে অকালে হারিয়ে সবকিছুই এভাবে ধুলায় মিশে যাবে তা কখনোই কল্পনা করতে পারিনি। আশিষকে এভাবে হারাতে হবে জানলে আমরা তাকে বিদেশও পাঠাতাম না। আমার আশিষের মরদেহ দেশে আনতে সরকারের সবধরনের সহায়তা চাই।