নিজস্ব প্রতিবেদক:
ভূমিদস্যু শফিকুল ইসলাম ও তার ভাড়াটে লোকজনের দ্বারা বার বার হামলার শিকার হয়ে নিরুপায় হয়ে পড়েছেন কক্সবাজার সদরের খরুলিয়ার সেই আলোচিত প্রতিবন্ধি পরিবার। এই পরিবারের শেষ সম্বল বসতভিটা অবৈধভাবে দখল করতে এখন পর্যন্ত তিনবার বর্বর হামলার শিকার হয়েছেন এই পরিবারের মা ও তিন মেয়েসহ সবাই। সর্বশেষ গত ১১ মে গভীর রাতে ভূমিদস্যু শফিকের ভাই সন্ত্রাসী আবদুর রহিমের নেতৃত্বে ৫০/৬০ জনের একদল লোক ঘুমন্ত অবস্থায় হামলা চালায়। মেয়েদের ধর্ষণচেষ্টা করে এবং এসময় হামলাকারীরা মা ও দুই মেয়েসহ সবাইকে ব্যাপকভাবে লাঠি দিয়ে বর্বর আঘাত করে। এতে মা ও দুই মেয়ে গুরুতর আহত হয়। বর্তমানে তারা কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। গতকাল সোমবার রাতেই তাদের উপর বার বার নিষ্ঠুর নির্যাতনের বিচার চেয়ে হাসপাতালে বসে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেছেন, বার বার নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার হলেও তারা বিচার পাচ্ছেন না। তারা প্রশ্ন রাখেন- আর কতো নির্যাতিত হলে বিচার পাবেন। এসময় তবিচার না পেলে তারা পরিবারের সবাই আত্মহত্যা করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ওই পবিবারের গৃহকত্রী সাজেদা খাতুন তার পৈত্রিক সূত্রে ভিটাটির মালিক হন। তবে তার অন্য ভাইবোনের অংশ ক্রয় করেন শফিকুল ইসলাম। এর জের ধরে সাজেদা খাতুন ভিটাটিও দখলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে ভূমিদস্যু শফিকুল ইসলাম। তিন দফায় ভাড়াটে লোকজন দিয়ে বর্বর প্রতিবন্ধি পরিবারটির উপর হামলা বর্ব চালানো হয়। গত শবে বরাতের রাতে ভূমিদস্যু শফিকের রহিমের নেতৃত্বে বর্বরভাবে হামলা চালানো হয়। কিন্তু পুলিশের সাথে আঁতাত করে ওই ঘটনাকে ভিন্নখাতে নিয়ে উল্টো মামলায় ছাড়াই মা ও এক মেয়েকে আটক করা হয়। পরে মিথ্যা ও সাজানো মামলা দিয়ে তাদের জেলে পাঠায়। এই ঘটনায় সর্বত্র তোলপাড় হলে টনক নড়ে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের। এর অংশ হিসেবে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নির্যাতিত পরিবারটির সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন। পরে ওই ঘটনার দায়ে ভূমিদস্যু শফিকুলের ভাই রহিমসহ অন্যদের আসামী করে থানায় মামলা রুজু করা হয়। এরপর থেকে পুলিশ ও সুশীল সমাজ তাদের পাশে ছিলেন। এসব কিছুকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে গত ১১ মে গভীর রাতে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে রহিম আবারো ঘুমন্ত অবস্থায় ওই পরিবারটির উপর চালায়। এ সময় তার মা ও তিন বোন ও প্রতিবন্ধী ভাইকে লোহার রড দিয়ে নির্দয়ভাবে মারধর করে। আঘাতে মা ও তিন বোনের হাত ভেঙে গেছে। খবর পেয়ে রাত আড়াইটার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে কক্সবাজার মডেল থানার একদল পুলিশ। আহতদের উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অভিযোগ করা হয়, ১১ মে বর্বর ঘটনা ঘটলেও পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি করছে। এতে অসহায় পরিবারটি নিরুপায় হয়ে পড়েছে। তারা জানতে চান, আর কতো নির্যাতনের শিকার হলে তারা বিচার পাবেন? বিচারের জন্য তারা প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেছেন। তারপরও বিচার না পেলে তারা পুরো পরিবার বিষপান করে আত্মহত্যা করবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ওই নির্যাতিত পরিবারের সবাই উপস্থিত ছিলেন। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মেয়ে সাবেকুন্নাহার।