ডেস্ক নিউজ:
ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাতে দেশের ২৬ জেলায় ২১ হাজার ৩৩টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নষ্ট হয়েছে এক লাখ ৫৫ হাজার ৬৬২ একর জমির ফসল। এতে মারা গেছেন মোট পাঁচজন।

রোববার (৫ মে) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতি প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালেয়ের জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান ও সমন্বয় কেন্দ্র (এনডিআরসিসি) উপকূলীয় ২৬ জেলা থেকে ক্ষয়ক্ষতির এসব তথ্য সংগ্রহ করেছে। জেলা প্রশাসকদের কাছ থেকে এসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় ফণী ভারতের ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ হয়ে শনিবার সকালে কিছুটা দুর্বল অবস্থায় খুলনা-সাতক্ষীরা অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ঢাকা-ফরিদপুর অঞ্চল পেরিয়ে এটি সন্ধ্যা নাগাদ লঘুচাপে পরিণত হয়।

‘ফণী’ ধেয়ে আসায় পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর ও চট্টগ্রামবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত এবং কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলে আবহাওয়া অধিদফতর। শনিবার দুপুর থেকে বিপদ সংকেত নামিয়ে দেশের চারটি সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলে আবহাওয়া বিভাগ।

ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে- খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ঝালকাছি, চাঁদপুর, শরিয়তপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, যশোর, মাগুরা, নড়াইল, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর।

ঘূর্ণিঝড়ে ধান ও সবজি ক্ষেতের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এক লাখ ৫৩ হাজার ৮৩২ একর জমির ফসল আংশিক ও এক হাজার ৮৩০ একর জমির ফসল সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ফসলের ক্ষতি হয়েছে নড়াইলে, সেখানে ৫৬ হাজার ৭২৪ একর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ে বরগুনায় ২ জন এবং ভোলা, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে একজন করে মারা গেছেন বলে এনডিআরসিস’র তথ্যে জানা গেছে। আহত হয়েছেন ৮৩২ জন মানুষ।

ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মোট ২১ হাজার ৩৩টি বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাড়ি-ঘরের মধ্যে ১৮ হাজার ৬৭০টি বাড়িঘর আংশিক ও ২ হাজার ৩৬৩টি ঘর-বাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বাড়িঘরের ক্ষতি হয়েছে খুলনা ও বরগুনায়। খুলনায় ৩ হাজার ৬৫০ বাড়িঘর আংশিক ও ৯৯০টি বাড়িঘর সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বরগুনায় ৭২৫টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ এবং ৮ হাজার ৫০০টি ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ২২ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গবাদি পশু মারা গেছে ১৭৫টি। প্লাবিত গ্রামের মোট সংথ্যা ৫৯টি, এর মধ্যে কক্সবাজারের ২৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় দুর্গত এলাকায় ৪ হাজার ৭১টি আশ্রয় কেন্দ্রে ১৬ লাখ ৬৬ হাজার ৪৩ জন আশ্রয় নিয়েছিল উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া লোকজন নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে গেছেন।