নিজস্ব প্রতিবেদক:

টমটম শ্রমিকদের ৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও তাদেরকে প্রাণনাশসহ নানা হুমকির অভিযোগে কথিত শ্রমিক নেতা রুহুল কাদের মানিকসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মোঃ ইলিয়াছ নামের প্রতারিত এক টমটম শ্রমিক বাদি হয়ে গত ২ এপ্রিল কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং- সিআর-৩২৮। মামলায় শহরের এসএম পাড়ার মৃত চান মিয়ার পুত্র মোঃ মুছা (৫২) এবং নতুন বাহারছড়ার বাসিন্দা দিদারুল ইসলামকে এজাহার নামীয় করে ৮/১০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে। মামলাটি তদন্তের জন্য গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) নিদের্শ দিয়েছেন আদালত।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ‘বাংলাদেশ অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটি’র সভাপতি দাবি করে রুহুল কাদের মানিক ২০১৮ সালের ৫ আগস্ট প্রতারণা মাধ্যমে প্রায় দুই হাজার টমটম চালক থেকে ৩০০ টাকা করে প্রায় ৬ লাখ টাকা গ্রহণ করেন এবং একটি পরিচয়পত্র প্রদান করেন। পরিচয়পত্রে রুহুল কাদের মানিক নিজেকে সভাপতি উল্লেখ করেন। তবে এপরও রুহুল কাদের মানিক কার্ড নবায়নসহ নানা অজুহাতে আরো টাকা দাবি করেন। এভাবে দফায় দফায় টাকা দাবি করায় শ্রমিকদের সন্দেহ হয়। নানা অজুহাতে টাকা দাবি করায় টমটম শ্রমিকেরা ‘বাংলাদেশ অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটি’র কেন্দ্রে যোগাযোগ করলে তারা জানায় রুহুল কাদের মানিক ও তার সহযোগীরা ‘বাংলাদেশ অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটি’র কেউ নয়। এই বিষয়টি জানিয়ে সংগঠনটির কেন্দ্র থেকে জেলা নেতৃবৃন্দকে চিঠি পাঠিয়ে রুহুল কাদের মানিক ও সহযোগিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেন।

বাদি আরো এজাহারে আরো উল্লেখ করেন, টমটম শ্রমিকদের কাছ থেকে ৩০০ টাকা নিয়ে যে পরিচয়পত্র ইস্যু করেছিল সেখানে দেয়া সংগঠনটির জেলা সাধারণ সম্পাদক এইচএম নজরুল ইসলামের স্বাক্ষরও জাল করেছিল রুহুল কাদের মানিক। পরে বিষয়টি এইচএম নজরুল ইসলামও অবগত হয়। পরে বাদিসহ প্রতারিতরা অবগত হয়, ‘বাংলাদেশ অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটি’র কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি হচ্ছেন রিয়াজ মোর্শেদ ও সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন এইচএম নজরুল ইসলাম। বিষয়টির ব্যাপারে জানতে চাইলে রুহুল কাদের মানিকসহ অন্যরা তার কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। এই কারণে ওই ৩০০ টাকাগুলো ফেরত চান টমটম শ্রমিকেরা। তখন টাকাগুলো ফেরত দেয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন রুহুল কাদের মানিক। কিন্তু দীর্ঘ পেরিয়ে গেলেও টাকা গুলো ফেরত দেয়নি। সর্বশেষ গত ২০ মার্চ ভুক্তভোগী টমটম শ্রমিকেরা লালদিঘির পাড়স্থ ইডেন গার্ডেনে অবস্থিত রুহুল কাদের মানিকের অফিসে যান। এসময় তিনি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান এবং সেখানে শ্রমিকদের অশ্রাব্য গালি-গালাজ করে প্রাণনাশসহ নানা ধরণের হুমকি দেন।

মামলার বাদি মোঃ ইলিয়াছ বলেন, ‘রুহুল কাদের মানিক প্রতারণা করে আমাদের (টমটম শ্রমিক) প্রায় ৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তিনি টাকাগুলো ফেরত দিবে বলেও শেষ পর্যন্ত দেয়নি। উল্টো হুমকি দিচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে মামলা করেছি।’

‘বাংলাদেশ অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটি’র জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এইচএম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘রুহুল কাদের মানিক ‘বাংলাদেশ অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটি’র কেউ নয়। তারপরও সংগঠনের নাম ব্যবহার করে নানাভাবে প্রতারণা করছে। অন্যদিকে আমার স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া পরিচয়পত্র সরবরাহ করে প্রতারণার মাধ্যমে শ্রমিকদের বিপুল টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এটা অত্যন্ত জঘন্য অপরাধ।’