মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

সামগ্রিক কর্ম মূল্যায়নে কক্সবাজার জেলা পুলিশ চলতি সালের জানুয়ারি ও বিগত সালের নভেম্বর মাসে চট্টগ্রাম রেন্ঞ্জের শ্রেষ্ঠ জেলা হিসাবে সম্মাননা অর্জন করেছে। মঙ্গলবার ১৯ ফেব্রুয়ারি পুলিশের চট্টগ্রাম রেন্ঞ্জের ডিআইজি’র সম্মেলন কক্ষে রেন্ঞ্জের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় কক্সবাজারের সফল পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম চট্টগ্রাম রেন্ঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বিপিএম-বার পিপিএম এর কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শ্রেষ্ঠ জেলার সম্মাননা ক্রেষ্ট ও সনদ গ্রহন করেন। এসময় রেন্ঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (অপারেশন এন্ড ক্রাইম) আবুল ফয়েজ, ডিআইজি (প্রশাসন ও অর্থ), চট্টগ্রাম রেন্ঞ্জের সকল এসপি সহ রেন্ঞ্জের উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। একই অনুষ্ঠানে টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ রেন্ঞ্জের শ্রেষ্ঠ ওসি, একই থানার এসআই দীপক বিশ্বাস রেন্ঞ্জের শ্রেষ্ঠ এসআই এবং চকরিয়া থানার এসআই অপু বড়ুয়া শ্রেষ্ঠ কার্যকর ওয়ারেন্ট তামিলকারীর সম্মাননা পেয়েছেন।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেনকে এই দুর্লভ ও মর্যাপূর্ণ সম্মননায় ভূষিত করায় চট্টগ্রাম থেকে মঙ্গলবার মুঠোফোনে সিবিএন-কে তাঁর প্রতিক্রিয়ায় মহান আল্লাহতায়লার কাছে শোকরিয়া জ্ঞাপন করে বলেন-এ বিরল সম্মাননা প্রাপ্তির মাধ্যমে জেলা পুলিশের প্রতিটি সদস্যের ত্যাগ, সাহস ও ঝুঁকিপূর্ণ কর্মের যথার্থ মূল্যায়ন করা হয়েছে। এতে তাঁদের কাজের গতি, সাহস ও উৎসাহ আরো বাড়বে বলে এসপি এ.বি.এম মাসুদ হোসেন দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন- সম্মাননা প্রাপ্তির এই অসামান্য অর্জন শুধুমাত্র তাঁর একার কৃতিত্ব নয়, একটা ইউনিটের জেলা প্রধান হিসাবে তাঁকে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। তাঁর মতে-এই কৃতিত্ব কক্সবাজার জেলা পুলিশের সকল সদস্যের। কারণ, অপরাধ দমন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, মাদক চোরাচালান রোধে কঠোরতা, সার্বিক আইনশৃঙ্খলা সুরক্ষা ইত্যাদি কার্যক্রমে জেলা পুলিশের সকল সদস্য ও কক্সবাজারের নাগরিকবৃন্দ সহযোগিতা নাকরলে এ অর্জন কখনো সম্ভব হতোনা। এসপি এ.বি.এম মাসুদ হোসেন (বিপিএম) বলেন-এ সম্মাননা প্রাপ্তি তাঁর ও তাঁর বাহিনীর দায়িত্ব ও কর্মের পরিধিকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। এ সম্মাননা পুলিশ ও জেলাবাসীর মর্যাদাকে বৃদ্ধি করেছে, পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে, পুলিশের প্রতি গণমানুষের আস্থা ও বিশ্বাস বেড়েছে। তিনি গৌরবময় সম্মাননা প্রাপ্তির এই শুভলগ্নে কক্সবাজার জেলা পুলিশের সকল কর্মকর্তা ও সদস্য এবং কক্সবাজারের সম্মানিত নাগরিকদের তিনি আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এই অপরিসীম অর্জনে কক্সবাজার জেলা পুলিশের সকল সদস্য অধম্য আত্মবিশ্বাস, প্রেরণা ও প্রত্যয়ে সমৃদ্ধ হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন (বিপিএম) এই মর্যাদাপূর্ণ সম্মাননা প্রদানের জন্য চট্টগ্রাম রেন্ঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক (বিপিএম-বার, পিপিএম), রেন্ঞ্জের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা সহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। তিনি বলেন-একত্রে কক্সবাজার জেলা পুলিশ শ্রেষ্ঠ জেলা হওয়া ছাড়াও শ্রেষ্ঠ ওসি, শ্রেষ্ঠ এসআই, শ্রেষ্ঠ কার্যকর ওয়ারেন্ট তামিলকারীর সম্মাননা পাওয়া নিঃসন্দেহে গৌরবের বিষয় ও জেলা পুলিশের জন্য প্রশংসনীয় একটি রেকর্ড। এ সম্মাননা কক্সবাজার জেলা পুলিশকে আরো জনবান্ধব, সেবামুখী ও গতিশীল করে তুলবে। দাপ্তরিক কাজে পেশাদারিত্ব ও জন সেবার মান বৃদ্ধি পাবে। এ সম্মাননা কক্সবাজার জেলা পুলিশের জন্য একটা মাইলফলক। দায়িত্বপালনে জেলা পুলিশের সকল সদস্যের ঝুঁকি ও ত্যাগের স্বীকৃতি এবং অপরাধ দমনে সকলের অদম্য মনোভাবের সৃষ্টি হবে। এসপি এ.বি.এম মাসুদ হোসেন (বিপিএম) তাঁর কর্মজীবনে আরো সাফল্যের জন্য সবার কাছে দোয়া ও সকলের আন্তরিক সহযোগিতা চেয়েছেন। এ.বি.এম মাসুদ হোসেন ২৪ তম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচের একজন দক্ষ, চৌকষ ও মেধাবী পুলিশ কর্মকর্তা। বিগত সালের ১৮ সেপ্টেম্বর তিনি পুলিশ সুপার হিসাবে কক্সবাজারে যোগদান করেন। বরিশাল জেলার মেহেন্দীগন্ঞ্জে জন্মগ্রহণকারী এসপি এ.বি.এম মাসুদ হোসেনের সহধর্মিনীর নাম জেনিফার মাসুদ। মাসুদ-জেনিফার দম্পতি ঈসা ও মুসা নামক চোখজুড়ানো ফুটফুটে জমজ দুই পুত্র সন্তনের গর্বিত জনক ও জননী। শ্রেষ্ঠ জেলার সম্মাননা প্রাপ্তির বিষয়ে কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোহম্মদ ইকবাল হোসাইন জানান-জেলা পুলিশের কর্ণধার সহ একত্রে জেলা পুলিশের বেশক’জন পুলিশ কর্মকর্তা গত ৪ ফেব্রুয়ারি জাতীয় পদক বিপিএম-পিপিএম, আইজিপি সম্মাননা পাওয়ায় পর আবার রেন্ঞ্জের শ্রেষ্ঠ জেলা হওয়ায় কক্সবাজার জেলা পুলিশ পুরো দেশে এখন একটি রোল মডেলে পরিনত হয়েছে। এই অসামান্য প্রাপ্তিতে জেলা পুলিশ সত্যিই গর্বিত, পুলকিত ও আনন্দিত । কক্সবাজার জেলা পুলিশের এই শুভলগ্নে ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন জেলা পুলিশের সকল সদস্য সহ জেলাবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, পুলিশ সাপ্তাহ ২০১৯ উপলক্ষ্যে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য সাহসিকতায় পুলিশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় মর্যাদাসম্পন্ন পুরস্কার এসপি এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম, টেকনাফ মডেল থানার ওসি বিপিএম, সদর মডেল থানার ওসি ফরিদ উদ্দিন খন্দকার পিপিএম, টেকনাফ মডেল থানার এসআই রাসেল আহামেদ পিপিএম এবং একই থানার এসআই শরিফুল ইসলাম পিপিএম পদক লাভ করেন। এছাড়া অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং মাদক পাচার রোধে উভয় ক্যাটাগরিতে একই সাপ্তাহে এসপি এ.বি.এম মাসুদ হোসেন সারাদেশে প্রথম হয়ে দু’টি আইজিপি সম্মাননা অর্জন করেন।