কায়সার হামিদ মানিক, উখিয়া:
কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে ৩০টি রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের আশেপাশে গড়ে উঠেছে প্রায় সাত শতাধিক হাট-বাজার। এসব বাজারে অহরহ বিক্রি হচ্ছে এনজিওদের দেওয়া ত্রাণের পণ্য সামগ্রী। কয়েকটি সূত্র জানায়, ত্রাণের মালামাল বিক্রির মাধ্যমে কিছু রোহিঙ্গা লাখপতিও বনে গেছেন। এদের কেউ কেউ আবার ক্যাম্প থেকে পালিয়ে বিদেশ চলে যাচ্ছেন।
কুতুপালং রেজিস্টার্ড ক্যাম্পের চেয়ারম্যান রশিদ আহম্মদ জানান, ১৯৯২ সালে কিছু রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। ২০০৪ সালে প্রর্ত্যাবাসন প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর প্রায় ২২ হাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আটকা পড়েন। এসব রোহিঙ্গারা একদিন স্বদেশে ফিরে যাওয়ার প্রহর গুনছেন।
অপর দিকে, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর যেসব রোহিঙ্গারা পালিয়ে এসে এদেশে আশ্রয় নিয়েছেন তাদের সিংহভাগ ছিন্নমূল ও হত দরিদ্র। ত্রাণের মালামাল বিক্রি করে ও অন্য অসাধু উপায়ের মাধ্যমে বেশ কিছু রোহিঙ্গা পরিবার টাকার মালিক বনে গেছেন। যে কারণে মালোশিয়া যাবার জন্য এসব ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা মরিয়া হয়ে ওঠেছেন। অনেক ক্ষেত্রে আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে ধরাও পড়ছেন।
আইন শৃংখলা বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, তাদের হাতে ধৃত ক্যাম্প থেকে পালানো প্রায় পাঁচ শতাধিক রোহিঙ্গা যুবক, নারী, পুরুষ, শিশু কুতুপালং বালুখালি এবং টেকনাফ উংচিপ্রাং ক্যাম্পের বাসিন্দা। কুতুপালং বস্তি ম্যানেজমেন্ট কমিটির সেক্রেটারি মো. নুর দাবি করেন, তারা ২০১২ সালে এখানে এসেছেন, এ পর্যন্ত থাকার ঘরটি ব্যবহার উপযোগী করে তুলতে পারেনি। অথচ মাত্র ১৮ মাস আগে আসা রোহিঙ্গা উন্নত জীবনের আশা করে মালোশিয়াসহ দেশের বিভিন্ন শহরে ভাড়া বাসা নিয়ে আরাম আয়েশে দিন কাটাচ্ছে। ওই রোহিঙ্গা নেতা ক্যাম্পে গড়ে ওঠা অবৈধ বাজারগুলো বন্ধ করে দেওয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, অন্যথায় এসব রোহিঙ্গাদের ঠেকানো পুলিশের পক্ষে সম্ভব হবে না।
রোহিঙ্গা প্রর্ত্যাবাসন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এনজিও গুলো কোনো প্রকার সমন্বয় না করে তাদের ইচ্ছামত ত্রাণ সামগ্রী ও নগদ টাকা বিতরণ করছে। এখানে স্বর্ণের দোকান থেকে শুরু করে মোবাইল, ইলেক্ট্রনিক্স পার্সের দোকানসহ অনেক দোকান বসিয়েছেন রোহিঙ্গারা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, খাস জমি হওয়ার কারণে ক্যাম্পের বাজারগুলো নিয়ত্নের আওতায় আনা যাচ্ছে না। তবে এসব হাট বাজারগুলো সরকারিভাবে নিয়ন্ত্রণে আনার প্রক্রিয়া চলছে।