চীনা রাষ্ট্রদূতের সাথে আলাপরত অবস্থায় ইসলামপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালামসহ স্থানীয়রা।

ইমাম খাইর, সিবিএনঃ
বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) বেলা দুইটা। পূর্ব কোন ঘোষণা ছিলনা। শিডিউলও নেই। অনির্ধারিত সূচিতে হঠাৎ গ্রাম বাংলার মানুষদের সাথে মিশে গেলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জুয়ো।
কক্সবাজার সদরের ইসলামপুর নতুন অফিস বাজার সংলগ্ন জাফর আলমের বাড়ির উঠানে বসেন। পাহাড়ের চূড়ায় নির্মিত কুঁড়েঘরের আঙ্গিনায় বসে খুব আনন্দ অনুভব করেন। আড্ডা গল্পে সময় কাটান প্রায় আধাঘন্টা। এসময় তিনি ডাব, বড়ুই, পেয়ারা খান। বিশ্বের পরাশক্তি দেশের এই রাষ্ট্রদূত নিজের হাতে বেশ কিছু সৌজন্য উপহারও দেন স্থানীয়দের। এলাকাবাসীও চীনের এই রাষ্ট্রদূতকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়।
গ্রাম বাংলার খেটে খাওয়া মানুষের ঘরে চীনের রাষ্ট্রদূত যাওয়া মানে গরীবের ঘরে হাতির পা। খবর পেয়ে তাকে এক পলক দেখতে ছুটে যান সাধারণ মানুষ। চীনা ভাষা না জানলেও অনেকে ইশারা-ইঙ্গিতে, অঙ্গভঙ্গিতে ঝ্যাং জুয়োর সাথে কথা বলতে চেষ্টা করেন।
তবে সঙ্গে থাকা দুভাষি জনগণের মনের ভাষা কিছুটা হলেও বুঝিয়ে দেন। গ্রাম বাংলার মানুষের সৌজন্যতাবোধ দেখে আবিভূত হন চীনের এই রাষ্ট্রদূত। তিনি আতিথেয়তায় সন্তুষ্ট হন।
এসময় ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কালাম, প্যানেল চেয়ারম্যান নুরুল আলম, ৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য আবদুশ শুক্কুর, মাওলানা মনজুর আলম, ব্যবসায়ী নেতা নজরুল ইসলাম, স্থানীয় মুরব্বি (বশিরের পিতা) জাফর আলম, চ্যানেল কক্স এর সম্পাদক মনছুর আলম, আকতার কামালসহ প্রচুর লোকজন উপস্থিত ছিল।
এর আগে চীনের রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং কক্সবাজার থেকে দুহাজারি রেল লাইন প্রকল্পভুক্ত ইসলামপুর অংশ পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ হবে বলে জানান।
চীনের রাষ্ট্রদূতের গ্রাম বাংলা পরিদর্শন বিষয়ে ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কালামের কাছে জানতে চাইলে বলেন, ‘আমার এলাকার উপর দিয়ে চলমান রেললাইন প্রকল্পের কার্যক্রম পরিদর্শন করতে আসেন চীনের রাষ্ট্রদূত। পরিদর্শন শেষে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলেন। জানতে চান ইউনিয়নের সমস্যা সম্ভাবনার কথা।
চীনের রাষ্ট্রদূত রেল প্রকল্পের কাজে আমার সহযোগিতায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। জানতে চান, কোনো কিছু প্রয়োজন  আছে কিনা?
চেয়ারম্যান আবুল কালাম বলেন, ‘চীনা রাষ্ট্রদূতের জিজ্ঞাসার জবাবে আমি জানালাম, আমার এলাকার জনসংখ্যা অনুপাতে অনেক সমস্যা আছে। প্রচুর উন্নয়ন দরকার।’
‘চীনা রাষ্ট্রদূতের কাছে আমি শুধু নিজ এলাকার কথা বলিনি, পুরো জেলার উন্নয়নে প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেছি।’
কৃতজ্ঞতাপূর্ণ ভাষায় আবুল কালাম বলেন, ‘চীনা রাষ্ট্রদূত আমাকে তাদের এম্বাসিতে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানান এবং চীন ভ্রমণের সুযোগ করে দেবেন বলে আশ্বস্ত করেন।’